নিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো সর্বাত্মক শাটডাউন কর্মসূচি পালন করেছে সিভাসু শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে শামিল হয়েছে শিক্ষক–কর্মকর্তা–কর্মচারীরাও। গতকাল সোমবার তারা পৃথক ব্যানারে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ ও শাটডাউন কর্মসূচি পালন করেন। কর্মসূচির কারণে একেবারেই অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে ক্যাম্পাসে। বন্ধ রয়েছে ক্লাস–পরীক্ষাসহ সব প্রশাসনিক কার্যক্রম।
কর্মসূচিতে শিক্ষক–শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা–কর্মচারীরা বলেন, জুলাই–আগস্টের বিপ্লবের পরে সিভাসুতে সকল বৈষম্য ও অপশক্তি দূর করে প্রতিষ্ঠানকে যখন ঢেলে সাজানো হচ্ছে, তখন সেই প্রক্রিয়া বানচাল করার জন্য উঠে পরে লেগেছে একটি চক্র। শিক্ষার্থীরা জানান, শুধু তাই নয় একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে একজন উপাচার্যের পক্ষে ভূমিকা রাখা তখনই সম্ভব যখন তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তরে ধারণ করবেন, অন্যথায় বাইরে থেকে কেউ এলে তিনি তার রুটিন কার্যক্রম চালাবেন, অতঃপর ভার্সিটি থেকে চলে যাবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের শিক্ষার্থী মো. শাহারিয়ার হোসেন তালুকদার আজাদীকে বলেন, গত রোববার আমরা ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছিলাম, যার ২৪ ঘণ্টা শেষ। আমাদের যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত দাবি যদি মেনে নেওয়া না হয়, তাহলে আমরা রোড ব্লক, আমাদের পেট হাসপাতালকে শাট ডাউনের আওতায় আনার মতো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো। ইতিমধ্যে সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন টোটাল শাট ডাউনের আওতায় রয়েছে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সাধারণ শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং এলামনাইরাও গতকাল সামনে থেকে বিক্ষোভ সমাবেশে ও টোটাল শাটডাউন কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্যবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষক মোর্শেদ বলেন, অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ শিক্ষকদের মধ্য থেকে যোগ্য একজনকে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দিতে হবে। এই এক দফা দাবি শুধু এখনকার জন্য নয় সিভাসুর ক্ষেত্রে আজীবন বহাল থাকবে।
ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের শিক্ষক ডা. রিদুয়ান পাশা বলেন, আমাদের শিক্ষকদের উদ্ভাবিত পিবিএল, ইন্টার্নিশিপ দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় গ্রহণ করে, সেইখানে এই গুণীজনদের বাদ দিয়ে বাইরে থেকে সৎ পিতাকে আমাদের জন্য নিয়োগ দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত করার এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র। সিভাসুর প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান আজাদীকে বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। এর আগে জুলাই থেকে নানা কারণে শিক্ষা কার্যক্রমে ব্যাহত হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে আমরা শিক্ষকরাও একমত। কারণ নিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য দিলে সার্বিকভাবে সিভাসু উপকৃত হবে।