নগরীর ওয়াসা থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নাম পরিবর্তন করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ, চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র ওয়াসিম আকরামের নামে করা হয়েছে। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নাম ‘শহীদ ওয়াসিম আকরাম উড়াল সড়ক’ করে চিঠি ইস্যু করেছে। এর আগে এটি চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নামে ‘মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী–সিডিএ ফ্লাইওভার’ নামকরণ করা হয়েছিল। এদিকে আজ সকাল থেকে টোল আদায় শুরু হচ্ছে। সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে টোল আদায়ের কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। সকাল ১০টা থেকে টোল পরিশোধ করেই দশ ধরনের গাড়ি চলাচল করতে পারবে।
সিডিএ সূত্র জানায়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা শাখা–১ এর উপসচিব মোহাম্মদ আবদুল আওয়াল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে পতেঙ্গা থেকে ওয়াসা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নতুন নামকরণের বিষয়টি জানানো হয়েছে। সিডিএ চেয়ারম্যানকে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে যে, মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী–সিডিএ ফ্লাইওভার’ নাম পরিবর্তন করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ, চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র শহীদ ওয়াসিম আকরামের নামে ‘শহীদ ওয়াসিম আকরাম উড়াল সড়ক’ হিসেবে নামকরণ করা হলো। স্মরণ করা যেতে পারে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৬ জুলাই মুরাদপুরে ছাত্রলীগ–যুবলীগের সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতরভাবে আহত হয়ে ওয়াসিম আকরাম শহীদ হন। নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে সিডিএ চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, মন্ত্রণালয় থেকেই আমাদেরকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নতুন নাম পাঠানো হয়েছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রামে প্রথম শহীদ ওয়াসিম আকরামের নামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নামকরণ করা হয়েছে।
এদিকে আজ (শুক্রবার) সকাল ১০টায় এক্সপ্রেসওয়ের পতেঙ্গা প্রান্তে টোল আদায়ের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।
সিডিএ সূত্র জানায়, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত হারেই টোল আদায় করা হবে। নগরের লালখানবাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ১০ ধরনের গাড়ি চলাচল করতে পারবে। এতে সিএনজিচালিত ট্যাক্সি ৩০ টাকা, কার ৮০ টাকা, জিপ ও মোইক্রোবাস ১০০ টাকা, পিকআপ ১৫০ টাকা, মিনিবাস ও চার চাকা ট্রাক ২০০ টাকা, বাস ২৮০ টাকা, ছয় চাকার ট্রাক ৩০০ টাকা, কাভার্ডভ্যান ৪৫০ টাকা হারে টোল পরিশোধ করতে হবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল ও কন্টেনার ট্রেইলার চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
সিডিএ চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ নুরুল করিম গতকাল দৈনিক আজাদীকে বলেন, উদ্বোধনের পর টোল প্রদানের মাধ্যমে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করতে পারবেন জনসাধারণ। গত আগস্ট থেকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে পরীক্ষামূলক যান চলাচল করলেও কোনো টোল পরিশোধ করতে হয়নি।
তিনি জানান, এক্সপ্রেসওয়ের পতেঙ্গা প্রান্তে চারটি টোলের বুথ থাকবে। সেখানেই পতেঙ্গার দিক থেকে উঠা এবং মুরাদপুর বা বেবি সুপার মার্কেটের কাছ থেকে উঠা গাড়িকে টোল পরিশোধ করতে হবে। জিইসি মোড়ের র্যাম্প নির্মাণ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত শহরের বিস্তৃত এলাকার গাড়িগুলোকে মুরাদপুর বা বায়েজিদ রোড থেকেই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে উঠার জন্য চলাচল করতে হচ্ছে। শুরুতে চারটি বুথ স্থাপন করা হলেও পরবর্তীতে লালখানবাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে ১০টি টোলবুথ বসানো হবে।
