শহীদ ইসমামুল হকের লোহাগাড়ার বাড়িতে মুক্তিযুদ্ধ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম

সাতকানিয়া-লোহাগাড়া প্রতিনিধি | রবিবার , ১৮ আগস্ট, ২০২৪ at ২:৩৫ অপরাহ্ণ

মুক্তিযুদ্ধ বিষয় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেছেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে স্বৈরাচারীর পতন আন্দোলনে নিহত হওয়া সকল শহীদ পরিবারের দায়িত্ব রাষ্ট্র নিবে এবং শহীদ পরিবারের পাশে সবসময় রাষ্ট্র থাকবে। শহীদদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বৈরাচারকে হটিয়ে ২য় বারের মতো স্বাধীনতা পেয়েছি, শহীদদের রক্ত কখনো বৃথা যেতে রাষ্ট্র দিবেনা। এই স্বাধীনতা ও বিপ্লবকে রক্ষা করতে হবে রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রের জনগণকে।

১৮ই আগষ্ট দুপুরে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণকারী শহীদ মোহাম্মদ ইসমামুল হক এর কবর জেয়ারত শেষে শহীদ ইসমাম এর শোকাহত পরিবারের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন তিনি।

এসময় তিনি আরও বলেন, ইসমামদের মত যাঁরা বুলেট এর সামনে বুক পেতে দিতে ভয় পায়নি সেই ছাত্র জনতার আত্মত্যাগের কারণেই স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর দোসররা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে, দেশের জন্য তাদের এই আত্মত্যাগ ও বলিদান জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।

শহীদ ইসমামের মায়ের উদ্দেশ্যে মুক্তিযুদ্ধ উপদেষ্টা বলেন, এখন থেকে মাথা উঁচু করে গর্বভরে বলবেন, আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদ ইসমাম এর গর্বিত মা। আপনাদের আত্মত্যাগের বিনিময়েই স্বৈরাচারকে হটিয়ে ২য় বারের মত এই স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মো: সাদি উর রহিম জাদিদ, লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইনামুল হাসান, সাতকানিয়া সার্কেল এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী নোমান, লোহাগাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি নাজমুন লায়েল। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রামের সমন্নয়ক তালাত মাহমুদ রাফিসহ ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা, বড়হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জুনাইদ, আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা কাজী নুরুল আলম। উপজেলা শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন এর সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ ইউসুফ। লোহাগাড়া উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এটিএম জাহেদ চৌধুরী, লোহাগাড়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাজ্জাদুর রহমান সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনে নেতৃবৃন্দ, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার আমিরাবাদ ইউনিয়নের দর্জি পাড়ার মৃত নুরুল হক এর ২য় পুত্র মোহাম্মদ ইসমামুল হক (১৬) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ৫ই আগষ্ট ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ই আগষ্ট মৃত্যুবরণ করে এবং ৮ই আগষ্ট রাষ্ট্রিয় মর্যাদায় পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।

পিতা না থাকায় লেখাপড়া চালিয়ে যেতে না পেরে পরিবার চালাতে চাকরিতে যোগদান করতে বাধ্য হয় ইসমাম। মৃত্যুর পূর্বে ইসমাম ঢাকা চকবাজার হাজী সেলিম এসি মার্কেট এর নুরুন্নাহার স্টোরে কর্মরত ছিলো।

ইতিমধ্যে শহীদ ইসমামের বড় ভাই মুহিবুল হক (২০)কে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় চাকরি প্রদান করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ‌‌‌‌‌‌‘স্বৈরাচারের সকল দোসরদের প্রতিটি ক্ষেত্রে বয়কট করতে হবে’
পরবর্তী নিবন্ধঅতিবর্ষণে কাপ্তাইয়ে সড়কে ধস, বড়ইছড়ি-রাঙামাটি যান চলাচল বন্ধ