চট্টগ্রামের ব্যস্ততম এলাকা কাজির দেউড়িতে বসেছে এক ব্যতিক্রমী ইফতার বাজার। চারদিকে সুস্বাদু খাবারের মোহনীয় সুগন্ধে মুখরিত বাতাস। উৎসবমুখর পরিবেশ আর রোজাদারদের ভিড়ে মুখর পুরো এলাকা। গরম গরম খাবার চুলা থেকে তুলে ঠোঙায় ভরা হচ্ছে, আর ক্রেতারা সেগুলো সংগ্রহ করে ইফতারের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নগরীর কাজির দেউড়ি শপিংব্যাগের ইফতার বাজারে নিয়মিত এ দৃশ্য। ব্যতিক্রমী এ ইফতার আয়োজনের পেছনের কারিগর চট্টগ্রামের খ্যাতিমান রন্ধনশিল্পী আবুল হোসেন বাবুর্চি। তার বিশেষ তত্ত্বাবধানে তৈরি হচ্ছে স্বাদে–গুণে অতুলনীয় ইফতার সামগ্রী, যা রোজাদারদের তৃপ্তি এনে দিচ্ছে। সবার পছন্দ গুরুত্ব দিয়ে প্রায় ৫৪ পদের টক–ঝাল–মিষ্টির সমন্বয়ে এ ইফতারের আইটেম রেখেছে। রোজাদারেরা নিজেদের পছন্দমতো পদ বেছে নিয়ে ইফতার করতে পারেন।
শপিংব্যাগ ইফতার বাজারে গিয়ে দেখা যায়, দুপুর ২টা থেকেই ক্রেতাদের ভিড়। খাবারের বৈচিত্র্য ও স্বাদ উপভোগ করতে ক্রেতারা আসছে। ঘুরে ঘুরে ইফতার বাজার দেখছেন। পছন্দের ইফতার কিনছেন। তাদের সাহায্য করছেন বিক্রয়প্রতিনিধিরা। ইফতার বাজারে দেশি বিদেশি ৫৪ পদের ইফতার রয়েছে। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান থেকে শুরু করে গরুর মাংস, মেজবানি মাংস, খাসির রোস্ট, খাসির পায়া, খাসির কোরমা, বীফ কিমা চপ, সাসলিক স্টিক, চিকেন টিক্কা, মাটন তেহারি, চিকেন হালিম, মাটন হালিম, মিহিদানা, জিলাপি, লাচ্ছা জিলাপি, পাটিসাপটা পিঠা। এছাড়া তাদের ফিরনি, স্পেশাল পরোটা, চিকেন তান্দুরি, চিকেন তান্দুরি, চিকেন চাপ, চিকেন ললিপপ, বিফ বটি কাবাব, ফিশ ফিঙ্গার বেশ জনপ্রিয়। আরো রয়েছে, বিফ কাচ্চি ও আকনি বিরিয়ানি, মাটন কাচ্চি বিরিয়ানি, মাটন পায়া, চিকেন মোমা, চিকেন শর্মা, বিফ এগ রোল, চিকেন এগ রোল, ফিশ টিক্কা কাবাব, টক দই, মিষ্টি দই, ম্যাংগো লাচ্ছি, গরুর নলা, চিকেন শামী কাবাব, সুজির হালুয়া, ঘিয়ে ভাজা লুচি, চিটা পিঠা, চিকেন আলুর চপ, চিকেন সাসলিক, চিকেন আল পাহাম, বিফ ওরস বিরিয়ানি।
শপিং ব্যাগের ইফতার বাজারে ইফতারি কিনছেন খুলশী এলাকার বাসিন্দা গৃহিণী রাজিয়া বেগম। তার মতে, প্রতিদিন এত বৈচিত্র্যময় খাবার রান্না করা সম্ভব হয় না। বিশেষ করে পরিবারের প্রত্যেকের পছন্দ আলাদা। কেউ ঝাল খাবার পছন্দ করে, কেউ মিষ্টি, আবার কেউ হালকা খাবার খেতে চায়। তাই সবার পছন্দের কথা মাথায় রেখে আমি শপিংব্যাগ থেকে ইফতার কিনি। তাছাড়া, অনন্য বাজারের ফাঁকে ইফতারের বাজারটাও করা যাচ্ছে। সময়ও কম লাগছে। পরিবেশও ভালো, নিশ্চিন্তে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পাওয়া যায়।
ইফতার কিনতে আসা আরেক ক্রেতা রাশেদুল ইসলাম বলেন, এক জায়গায় এত বৈচিত্র্যময় খাবার পাওয়া সত্যিই সুবিধাজনক। দেখেশুনে কেনা যায়। তবে, শহরের অন্য রেস্তোরাঁর তুলনায় দাম একটু বেশি মনে হয়েছে। আবার ভালোদিক হচ্ছে, তৈরির প্রক্রিয়া দেখে নেওয়া যাচ্ছে।
শপিংব্যাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ রফিক বলেন, ইফতার বাজার মূলত একটি সেবামূলক উদ্যোগ। রমজান মাসের পবিত্রতা এবং আনন্দ সবার সাথে ভাগাভাগি করার জন্য প্রতিবছর এ আয়োজন করে থাকি। সবাই একটি সুন্দর, শান্তিপূর্ণ এবং স্বাদে পরিপূর্ণ ইফতার উপহার পেয়ে, রমজানের এই বিশেষ সময়ে আনন্দিত ও তৃপ্ত হয়ে ফিরে যায়।