আমাদের সৌরজগতের একটি চাঁদে সম্ভবত এলিয়েন বা অন্য কোনো প্রাণের আবাস থাকতে পারে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের। খবর বিডিনিউজের।
তারা বলছেন, শনি গ্রহের চাঁদে ভিনগ্রহী প্রাণ থাকার উপযোগী পরিবেশ থাকতে পারে, যা আমরা আগে কখনও কল্পনা করতে পারিনি। গবেষকরা নতুন এক গবেষণায় খুঁজে পেয়েছেন, বরফময় এ চাঁদের উপরিভাগ থেকে তাপ বেরিয়ে আসছে। যার থেকে ইঙ্গিত মেলে, এনসেলাডাসে এমন স্থিতিশীল পরিবেশ থাকতে পারে, যা প্রাণের জন্য দরকারি। দীর্ঘদিন ধরে গবেষকদের ধারণা, আমাদের সৌরজগতের মধ্যে এলিয়েনের সবচেয়ে সম্ভাব্য স্থান হতে পারে এনসেলাডাস। তাদের অনুমান, এর বরফের পৃষ্ঠের নিচে বিশাল ও লবণাক্ত এক মহাসাগর রয়েছে, যেখানে তরল পানি, তাপ ও সঠিক রাসায়নিক উপাদান থাকার কারণে এই চাঁদটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই রোমাঞ্চিত তারা।
তবে গবেষকদের আশঙ্কা, চারপাশের পরিবেশ যথেষ্ট স্থিতিশীল না হলে সেই মহাসাগর জীবনের জন্য উপযোগী নাও থাকতে পারে। যদি এর শক্তি হারানো ও অর্জনের ভারসাম্য ঠিক না থাকে, তবে এর পৃষ্ঠের কার্যকলাপও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আবার শক্তি ক্ষয় যথেষ্ট না হলে, মহাসাগরীয় কার্যকলাপ অতিরিক্ত মাত্রায় বেড়ে যেতে পারে। আগে গবেষকদের অনুমান ছিল, এনসেলাডাসের কেবল দক্ষিণ মেরুতে এমন কার্যকলাপ ঘটে, যেখানে পানি বরফ ও বাষ্পের আকারে তাপ বের হয়।
এক্ষেত্রে উত্তরের মেরুকে নিষ্ক্রিয় বলে ধরে নিয়েছিলেন তারা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ক্যাসিনি মহাকাশযানের তথ্য ব্যবহার করে নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে, এনসেলাডাসের উত্তর মেরুর মহাসাগর থেকেও তাপ বেরিয়ে আসছে। বিজ্ঞানীরা এনসেলাডাসের মোট তাপক্ষয় হিসাব করে দেখেছেন, এতে দক্ষিণ মেরুর তাপক্ষয় যোগ করলে ফলাফল তাদের আগের অনুমানের সঙ্গে প্রায় মিলে যায়। নিজের কক্ষপথে ঘুরতে গিয়ে গ্রহটির ভেতরে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়, আর সেই কারণেই এটি উত্তপ্ত থাকে এবং তাপের ভারসাম্য বজায় রাখে। এ গবেষণায় গবেষকরা বলেছেন, এর থেকে ইঙ্গিত মেলে এনসেলাডাসে প্রাণ থাকার জন্য উপযোগী বা স্থিতিশীর পরিবেশ থাকতে পারে।
এখন বিজ্ঞানীরা শনির চাঁদটিকে নিয়ে আরও গবেষণার বিষয়ে আশাবাদী, যাতে তারা বুঝতে পারেন, এনসেলাডাসের মহাসাগর প্রাণ বিকাশের জন্য যথেষ্ট উপযোগী কি না। এন্ডোজেনেটিক হিট অ্যাট এনসেলাডাস– শিরোনামে গবেষণাপত্রটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল সায়েন্স অ্যাডভান্সে–এ।












