শতবর্ষের প্রান্তসীমায় চসিক শিক্ষাসেবা

ড. ইউসুফ ইকবাল | বৃহস্পতিবার , ২৩ অক্টোবর, ২০২৫ at ১১:১৭ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী ও দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর, বীরপ্রসবিনী চট্টগ্রামের গৌরবোজ্জ্বল স্থানীয় সরকার সংস্থাচট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। এটি একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানটি সার্বিকভাবে চট্টগ্রাম নগরের উন্নয়ন ও সেবামূলক দায়িত্ব পালন করে থাকে। বিভিন্ন বিবর্তন ও পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আজকের পর্যায়ে এসেছে। ২২ জুন ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দে চিটাগাং মিউনিসিপ্যলিটি বা চট্টগ্রাম পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে তা চিটাগাং মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন বা চট্টগ্রাম পৌর কর্পোরেশনে রূপান্তরিক হয়। ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দে পুনরায় পরিবর্তন করে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। মহাকালের হিসাবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ১৬২ বছরের প্রাচীন একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য টেকসই, যুগোপযোগী নাগরিক সুযোগসুবিধা সংবলিত, পরিচ্ছন্ন সবুজ ও আলোকিত মানবিক নগর গড়ে তোলা এপ্রতিষ্ঠানের প্রধান লক্ষ্য। কালের বর্তমান প্রান্তে এসে এর সেবা খাত অনেক বিস্তৃত রূপ ধারণ করেছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বর্জ্যব্যবস্থাপনা ও পরিচ্ছন্নতা, বৈদ্যুতিক ব্যবস্থাপনা, পরিবহণ ব্যবস্থাপনা, নগর পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন, আবাসন, পরিবেশ সংরক্ষণ, সামাজিক নিরাপত্তা, সমাজকল্যাণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে নাগরিকদের গুণগত সেবা প্রদান করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন স্থানীয় ও জাতীয়ভাবে বিপুলভাবে প্রশংসিত হয়েছে। প্রসঙ্গত, সাংগঠনিক দক্ষতা, আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও নাগরিক সম্পৃক্ততা সহ ১৫ ক্যাটাগরিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বাৎসরিক মূল্যায়নে এবছর (২০২৫) চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন দেশ সেরা সিটি কর্পোরেশনের মর্যাদায় ‘সিটি গভর্ন্যান্স অ্যাসেসমেন্ট পুরস্কার’ (প্রথম স্থান) লাভ করেছে।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ, প্রশংসাধন্য ও প্রাচীন সেবাখাত হলো শিক্ষা। নগরের প্রান্তিক, অবহেলিত, সুযোগসুবিধা বঞ্চিত, দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত মানুষের শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করে প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় ও জাতীয়ভাবে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। শিক্ষাসেবা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের একটি আইকনিক সেবা খাত। এই সেবার কারণে প্রতিষ্ঠানটি স্বতন্ত্র মর্যাদা লাভ করেছে। দেশের অন্য কোনো সিটি কর্পোরেশন নাগরিকদের শিক্ষা সেবা প্রদান করে না। ১৯২৫ (মতান্তরে ১৯২৭) খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন চিটাগাং মিউনিসিপ্যালটি বা চট্টগ্রাম পৌরসভার (বর্তমান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন) চেয়ারম্যান নূর আহমদ এমএবিএল (১৮৯০১৯৬৪) অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন করে এসেবা খাতের সূত্রপাত করেন। সে হিসাবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের শিক্ষাসেবা শতবর্ষের প্রান্তসীমা (১৯২৫২০২৫) স্পর্শ করেছে।

বিগত এক শতাব্দী কাল ধরে এঅঞ্চলে শিক্ষা বিস্তারে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। চট্টগ্রামের ইতিহাস বিষয়ক বিভিন্ন গ্রন্থলেখকের মতামত, ভিন্নমত, চসিকের দাপ্তরিক তথ্যজাল এবং চট্টগ্রাম পৌরসভার ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে প্রকাশিত স্মারকগ্রন্থ (২০১৩) থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে১৯২৫ (মতান্তরে ১৯২৭) খ্রিষ্টাব্দে নুর আহমদের প্রচেষ্টায় অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষা প্রচলনের পর ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে তা বাধ্যতামূলক করা হয়। ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে অবৈতনিক বালিকা বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে বালিকাদের অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষাও আবশ্যিক করা হয়। ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে নিম্নমাধ্যমিক শিক্ষাও বাধ্যতামূলক পর্যায়ে উন্নীত করা হয়। এর পর ধারাবাহিকভাবে প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষাসেবার পরিসর বৃদ্ধি করেছে। নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা এবং আত্মীকরণের মাধ্যমে নগরের শিক্ষা বিস্তারেবিশেষত নারীশিক্ষা প্রসারে চসিকের উদ্যোগ দৃষ্টান্তমূলক ও অনুকরণীয়।

অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষা প্রবর্তনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগ উপমহাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি পথিকৃৎ পদক্ষেপ। প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের মধ্য দিয়ে শতবর্ষ পূর্বে প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষাদানের যে মহতী অভিযাত্রা শুরু করেছিলকালের বর্তমান প্রান্তে এসে তা বহুমাত্রিক, বিস্তৃত ও বিকশিত শিক্ষাপ্রাঙ্গণে পরিণত হয়েছে। এপ্রাঙ্গণ এখন পুষ্পপত্রপল্লবে সুশোভিত এক ফলবান বৃক্ষউদ্যান। বর্তমানে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পরিচালনায় রয়েছে ২৩টি কলেজ, ৪৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১টি কম্পিউটার ইনস্টিটিউট, ২টি কম্পিউটার কলেজ ক্যাম্পাস, ৭টি কিন্ডার গার্টেন, ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫টি গণশিক্ষা কেন্দ্র, ১টি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ১টি পাবলিক লাইব্রেরি ও ১টি থিয়েটার ইনস্টিটিউট। নগরীর স্বনামধন্য বেসরকারী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়এর প্রতিষ্ঠা, পরিচালনা এবং ট্রাস্টি বোর্ডে এপ্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এছাড়া, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পরিচালনাধীন ২৪৪টি ফোরকানিয়া মাদ্রাসা এবং ৪টি সংস্কৃত টোল ও ২টি গীতা শিক্ষাকেন্দ্রের মাধ্যমে শিশুরা ধর্মীয় শিক্ষা ও নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন নাগরিক হয়ে গড়ে উঠছে।

আমাদের সমাজে যুগ যুগ ধরে নারীরা শিক্ষায় অবহেলিত। এজন্য সামাজিক বিকাশ ও রাষ্ট্রীয় সমৃদ্ধি পদে পদে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছে। সামাজিক এনেতি বাস্তবতার মধ্যেও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আশার বাতিঘর হয়ে জাতিকে পথ দেখিয়েছে। সমাজে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে সুশিক্ষিত, দক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন নারীসমাজ গড়ে তুলতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন প্রথম থেকেই বিশেষভাবে যত্নবান। নারীশিক্ষা সম্প্রসারণে এপ্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। চসিক পরিচালিত সমুদয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৯টি প্রতিষ্ঠান নারীদের জন্য বিশেষভাবে সংরক্ষিত। নারীদের জন্য সংরক্ষিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রী সংখ্যা প্রায় ২৫হাজার। সেই সাথে সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও নারীর সমান অংশগ্রহণ রয়েছে। চসিকের অনেক নারীশিক্ষা প্রতিষ্ঠান নানা ইতিহাস ও ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার এবং চট্টগ্রাম নগরের আদর্শ ও জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান হিসাবে স্বীকৃত। এসব প্রতিষ্ঠান নগরের সরকারিবেসরকারি সমুদয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই ছাত্রীসংখ্যা, ফলাফল, সহপাঠক্রমিকসহ যেকোনো বিচারে মানসম্মত ও শীর্ষস্থানীয় হিসাবে সুপরিচিত। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের এই নারীবান্ধব শিক্ষাসেবা ও সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সমগ্র দেশে একক সংস্থা পরিচালিত সর্ববৃহৎ শিক্ষা উদ্যোগ। চট্টগ্রামসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাবিদবৃন্দ কর্তৃক এউদ্যোগ বিপুলভাবে প্রশংসিত হয়েছে।

গুণগত বিদ্যায়তনিক শিক্ষা ছাড়াও চসিক শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানমনস্ক, ঐতিহ্যপ্রবণ, সংস্কৃতিবান্ধব ও আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন যোগ্য নাগরিক হিসাবে গড়ে ওঠার সুযোগ পায়। প্রতিটি চসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক শিক্ষার পর্যাপ্ত উপকরণ রয়েছে। সংগীত ও নৃত্য শিক্ষার জন্য প্রতিটি স্কুলকলেজে রয়েছে দক্ষ প্রশিক্ষকের মাধ্যমে নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। চসিক শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে সংগীত, নৃত্য, আবৃত্তি, বিতর্ক প্রভৃতি সাংস্কৃতিক এবং হকি, তায়কোয়ান্দো প্রভৃতি ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন শিরোপা অর্জন করেছে। নগরের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, পরিবেশ সংরক্ষণ, পরিষ্কারপরিচ্ছন্নতা, জলাবদ্ধতা নিরসন, ট্যাক্স প্রদানে উদ্বুদ্ধকরণ প্রভৃতি বিষয়ে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে চসিকের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সামাজিক সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করে। এসব বিষয়ে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জনের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে পরিবেশ ক্লাব, আবৃত্তি ক্লাব, বিতর্ক ক্লাব, ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব, রোভার, রেঞ্জার, গার্লস গাইড, স্কাউট, রেডক্রিসেন্ট, স্বাস্থ্য ক্যাম্প প্রভৃতি কার্যক্রম। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে চসিক শিক্ষার্থীরা বিদ্যায়তনিক শিক্ষার পাশাপাশি নেতৃত্বগুণসম্পন্ন, সচেতন ও সুনাগরিক হিসাবে গড়ে উঠছে। উপর্যুক্ত পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনা করে বলা যায়শিক্ষার বহুমুখী বিস্তার এবং ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও সামাজিক কর্মসূচি পালনসহ বেসরকারি উদ্যোগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সারা দেশে অনন্য, ব্যতিক্রম, অনুসরণীয় ও দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।

গুণগত শিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীর শারীরিক স্বাস্থ্য ও সুস্থ মনন বিকাশ অপরিহার্য। সুস্থ শিক্ষার্থী সহজে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে। উন্নত বিশ্বে শিক্ষা ও শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্য অভিন্নভাবে বিবেচনা করা হয়। বর্তমান মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে চসিক শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এক মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছেন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের শিক্ষা বিভাগের মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন যুগান্তকারী এপরিকল্পনা হলোশিক্ষার্থীদের জন্য ‘হেলথ কার্ড কর্মসূচি’। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সুনিশ্চিত করে সুস্থ ও প্রাণবন্ত শিক্ষার্থী তৈরি করা এই কর্মসূচির লক্ষ্য। সম্প্রতি পরিকল্পিত একর্মসূচির মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে চসিক পরিচালিত ৫টি স্কুলের ৫হাজার শিক্ষার্থীকে ‘স্কুল শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্য কার্ড’ শীর্ষক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনা হয়েছে। এতে চসিকের প্রশিক্ষিত একটি চিকিৎসক দল কর্তৃক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিচালিত ‘স্বাস্থ্য ক্যাম্প’এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ, স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ, শারীরিকমানসিক পরিচর্যা, বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে জরুরি চিকিৎসাসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়। পর্যায়ক্রমে চসিকের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে একর্মসূচির আওতায় এনে চসিক শিক্ষা পরিবারের প্রায় ৬৫হাজার শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

নগরের প্রান্তিক, সুযোগবঞ্চিত ও মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীর সন্তানদের শিক্ষার আওতায় নিয়ে এসে তাদের জন্য গুণগত শিক্ষাসেবা নিশ্চিত করা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। এলক্ষ্যে চসিকের বর্তমান মেয়র ডা. শাহাদাত হেসেন শিক্ষা ও শিক্ষার্থীবান্ধব যুগোপযোগী নানা পরিকল্পনা প্রণয়ন, শিক্ষাখাতের সমস্যা সমাধান, শিক্ষাসেবার মানউন্নয়ন প্রভৃতি ক্ষেত্রে অগ্রধিকার দিয়ে আন্তরিক ও নিবিড় তত্ত্বাবধানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ পরিচালনা করছেন। মেয়রের নেতৃত্বে শিক্ষা বিভাগের বর্তমান কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা মেয়র প্রণীত নানা কর্মসূচি অত্যন্ত আন্তরিক ও দায়িত্বশীলতার সাথে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। উন্নত শিক্ষাসেবা প্রদান করে শিক্ষিত, দক্ষ ও সুনাগরিক গড়ে তোলার মাধ্যমে জাতীয় প্রগতিতে অবদান রাখার প্রত্যয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়র, কর্মকর্তাবৃন্দ, শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক এবং পরিচালনা পর্ষদ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

রাষ্ট্রীয় উন্নয়নের পূর্ব শর্ত শিক্ষা। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সুদীর্ঘ কাল ধরে সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। অথচ, চসিকের এই শতবর্ষী, আইকনিক ও বিস্তৃত শিক্ষাসেবা খাতটি এখনও পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় দৃষ্টি ও স্বীকৃতির অগোচরে থেকে গেল। স্বীকৃতির জন্য যথাযথ ভূমিকা প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে। শিক্ষাখাতে শতাব্দীব্যাপী অনন্য অবদানের জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেলে চট্টগ্রামের জনগণ আরও একবার প্রবলভাবে গর্বিত হতে পারত।

শতবর্ষের প্রান্তসীমায় চসিকের প্রশংসাধন্য এই শিক্ষাসেবা খাত যথাযথ স্বীকৃতির আলোয় আরও উজ্জ্বল, বর্ণাঢ্য, বিস্তৃত, সফল ও সার্থক হয়ে উঠুক।

লেখক : কলেজ শিক্ষক, গবেষক, নাট্যজন

পূর্ববর্তী নিবন্ধমানিক বন্দ্যোপাধ্যায় : মনস্তাত্ত্বিক বাস্তবতার রূপকার
পরবর্তী নিবন্ধড. মঈনুল ইসলামের কলাম