জিপিএইচ ইস্পাত সিজেকেএস-সিডিএফএ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে দারুন জয় পেয়েছে নিচের সারির দুই দল কাস্টমস স্পোর্টস ক্লাব এবং শতদল। আর হেরে সবাইকে অবাক করেছে মুক্তিযোদ্ধা এবং কোয়ালিটি।
গতকাল এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দুটি খেলার প্রথমটিতে কাস্টমস স্পোর্টস ক্লাব ৩-২ গোলে পরাজিত করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রকে। দিনের দ্বিতীয় খেলায় শতদলে হোঁচট খেয়েছে শিরোপা দৌড়ে থাকা কোয়ালিটি। শতদল ২-০ গোলে কোয়ালিটি স্পোর্টস ক্লাবকে পরাজিত করে। লিগে কোয়ালিটির এটিই প্রথম পরাজয়।
অন্য তিন শিরোপা প্রত্যাশি দল ব্রাদার্স ইউনিয়ন, সিটি কর্পোরেশন এবং মাদারবাড়ী উদয়ন সংঘের সাথে একই সারিতে থাকা কোয়ালিটি গতকাল হেরে গিয়ে বেশ কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে। ৬ খেলা শেষে কোয়ালিটির পয়েন্ট ১১। অন্যদিকে সমান খেলায় ব্রাদার্স ১২,সিটি কর্পোরেশন ১২ এবং মাদারবাড়ী উদয়ন সংঘও ১২ পয়েন্ট পেয়েছে। কোয়ালিটির সামনে গতকাল দারুণ সুযোগ ছিল এ তিন দলের চাইতে এগিয়ে যাবার। তেমন সুযোগও এসেছিল তাদের সামনে। কিন্তু সে সুযোগ হেলায় হারিয়েছে তারা। খেলার শুরু থেকেই আক্রমনে মেতে উঠে কোয়ালিটি। ৪ মিনিটেই আসে সুযোগ। কিন্তু ওপেন নেট মিস করেন শাকিল আলী। প্রথম পাঁচ মিনিটের মধ্যেই তিনটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেন তারা সাইডবারের পাশ দিয়ে মেরে। খেলার ১০ মিনিটে রোমান ক্রসবারের উপর দিয়ে মেরে আরেকটি সুযোগ নষ্ট করেন। ফলে কোয়ালিটির এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তাদের একচেটিয়া আক্রমনের মুখে শতদল মাঝে মাঝে বিক্ষিপ্ত আক্রমন করে। এ থেকেই গোল পেয়ে যায় তারা। বাম প্রান্ত দিয়ে আক্রমনে উঠেছিলেন নিপু। বক্সে ঢুকে দারুণ গ্রাউন্ড শটে তিনি বল জালে দিলে শতদল এগিয়ে যায় ১-০ গোলে। হতবাক হয়ে পড়া কোয়ালিটি খেলার ইনজুরি টাইমে আবারো পিছিয়ে পড়ে। শাকিলের ব্যাক পাস কোয়ালিটি কিপার নাইম মিয়া ঠিকমতো আয়ত্বে নিতে পারেননি। সে বল শতদলের নিপু আয়ত্বে নিয়ে ফাঁকা পোস্টে বল ঠেলে দেন (২-০)। দ্বিতীয়ার্ধে দুই গোলে পিছিয়ে পড়া কোয়ালিটি খেলায় ফেরার জন্য জোর চেষ্টা করে। তাতে লাভ হয়নি। কয়েকটি সুযোগ সৃষ্টি করলেও শতদল রক্ষণভাগ তা সামাল দেয়। খেলার শেষ দিকে এসে শতদলের নিপু আবারো গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন। একটি ক্রস থেকে তার উড়ন্ত হেড ঠেকিয়ে দেন কোয়ালিটি কিপার বিদ্যুৎ। এর কিছু পরে ফাউলের জন্য কোয়ালিটির শামীম শেখের দুটি হলুদ কার্ড লাল কার্ডে পরিণত হয়। ফলে কোয়ালিটি ১০ জনের দলে পরিণত হয়।
এ খেলায় ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন বিজয়ী দলের খেলোয়াড় নিপু। তার হাতে ক্রেস্ট ও নগদ এক হাজার টাকার প্রাইজমানি তুলে দেন সিজেকেএস নির্বাহী কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি মোজাম্মেল হক।
কাস্টমস-মুক্তিযোদ্ধা
কাস্টমস স্পোর্টস ক্লাবের এটি ছিল দ্বিতীয় জয়। ছয় খেলার চারটিতে হেরে এবং ২টি খেলায় জিতে তারা ৬ পয়েন্ট পেয়েছে। এর আগের খেলায় চ্যাম্পিয়ন ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ২-০ গোলে পরাজিত করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র সবাইকে চমকে দিয়েছিল। সেদিনের সেই দলটার খেলার সাথে গতকালের খেলায় ছিল অনেক পার্থক্য। ব্রাদার্স জয়ী মুক্তিযোদ্ধাকে গতকাল মাঠে পাওয়া যায়নি। অন্তত প্রথমার্ধের খেলা তাই প্রমাণিত করে। খেলার প্রধমার্ধেই তারা তিন গোলে পিছিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধার এ খেলা সবাইকে হতবাক করেছে। প্রথমার্ধে ২২ মিনিটে কাস্টমস প্রথম এগিয়ে যায়। গোল করেন রেজওয়ান। চার মিনিট বাদে খেলার ২৬ মিনিটে আবারো গোল করে কাস্টমসকে ২-০ গোলে এগিয়ে রাখেন রেজওয়ান। ৩৪ মিনিটে আরো একটি গোল পায় তারা। এবার সাইফ গোল করেন (৩-০)। তিন গোলে এগিয়ে থেকে খেলার বিরতিতে যায় কাস্টমস স্পোর্টস ক্লাব। দ্বিতীয়ার্ধে খেলার ফিরে আসার চেষ্টা করে মুক্তিযোদ্ধা। তা থেকে সফলও হয় তারা। ৬৩ মিনিটে বদলি খেলোয়াড় সাগর মিয়া শাওন গোল করলে ব্যবধান হয় ৩-১। খেলার ইনজুুরি টাইমে আরো একটি গোল পরিশোধ করে দেন সুমন আলী (৩-২)। এর আগে অবশ্য সাবেক জাতীয় তারকা জাফর ইকবাল প্রায় ওপেন নেট মিস করলে মুক্তিযোদ্ধার সমতায় ফেরা হয়নি। খেলার ৭৫ মিনিটে দুটি হলুদ কার্ড লাল কার্ডে পরিণত হলে কাস্টমসের রাসেলকে মাঠ ত্যাগ করতে হয়। খেলার শেষ দিকে মুক্তিযোদ্ধা কোচ নেজামতকে উত্তেজিত হয়ে লাইন্সম্যানের দিকে তেড়ে যেতে দেখা যায়। মুক্তিযোদ্ধা ৬ খেলা শেষে ৭ পয়েন্ট অর্জন করেছে।
এ খেলায় ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন বিজয়ী কাস্টমস দলের রেজওয়ান। তার হাতে ক্রেস্ট ও নগদ এক হাজার টাকার প্রাইজমানি তুলে দেন সিজেকেএস কাউন্সিলর আঞ্জুমান আরা বেগম।
আজ বিকাল ৩.৩০টায় চট্টগ্রাম মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ব্লুজ বনাম বি.সি.আই.সি ক্রীড়া সংসদ পরস্পরের মোকাবেলা করবে।