লোহাগাড়া ট্রমা সেন্টার উদ্বোধনের সাত বছরেও চালু হয়নি সেবা কার্যক্রম। এখনো নিয়োগ দেয়া হয়নি জনবল। নেই প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও। যার কারণে ২০ শয্যার বিশেষায়িত এই হাসপাতাল এখনো চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে দ্রুত চিকিৎসার অভাবে মহাসড়কে দুর্ঘটনায় আহতদের অনেকে অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন। জানা যায়, ২০০৭ সালের জুন মাসে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে লোহাগাড়ার পদুয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে ট্রমা সেন্টারের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তারের তত্ত্বাবধানে গণপূর্ত অধিদপ্তর প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০৯ সালে ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করে। ২০১৩ সালের ২৯ আগষ্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি চট্টগ্রামের অন্য প্রকল্পের সঙ্গে উক্ত ট্রমা সেন্টার উদ্বোধন করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তিন তলা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভবনে ২০টি শয্যা রয়েছে। তার মধ্যে ২টি বিশেষ কেবিন (ভিআইপি) ও ১৮টি সাধারণ শয্যা। হাসপাতাল ভবনের জন্য দেয়া হয়েছে আসবাবপত্র, বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ। কিন্তু নিয়োগ দেয়া হয়নি জনবল। সরবরাহ করা হয়নি যন্ত্রপাতি। উদ্বোধনের সাত বছরেও ট্রমা সেন্টারটি চালু না হওয়ায় অব্যবহৃত অবস্থায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে মালামাল। ট্রমা সেন্টারের জন্য ১৪ জন চিকিৎসক, ১০ জন নার্স, ৩৪ জন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর পদ রয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙের হাড় ও জোড়া বিশেষজ্ঞ মাহমুদুর রহমান সপ্তাহে তিন দিন অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ট্রমা সেন্টারে আসা রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিতেন। কিন্তু তিনি অন্যত্র বদলি হয়ে যাওয়ায় সেই চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।
স্থানীয় যুবক সাইফুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রাম-কঙবাজার মহাসড়ক দিয়ে বিপুল সংখ্যক পর্যটক যাতায়াত করেন। মহাসড়ক চারলেন না হওয়ায়সহ বিভিন্ন কারণে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। সড়ক দুর্ঘটনা আহতদের সময়মতো চিকিৎসেবা নিশ্চিত করতে চট্টগ্রাম-কঙবাজার মহাসড়কের মাঝামাঝি স্থানে এই ট্রমা সেন্টারটি নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে ট্রমা সেন্টারের দৃষ্টিনন্দন ভবন আছে। কিন্তু কোনো সেবা নেই।
লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ হানিফ জানান, ট্রমা সেন্টারটি উদ্বোধন হলেও কোনো প্রকার যন্ত্রপাতি ও জনবল না থাকায় চালু করা যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বেশ কয়েকবার চিঠি দেয়া হয়েছে। যন্ত্রপাতি ও জনবল নিয়োগ পেলে ট্রমা সেন্টার চালু করতে কোনো বাধা থাকবে না।