লোহাগাড়ার চুনতিতে নির্বাচন পরবর্তী দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ১৭ জন আহত হয়েছেন।
আজ সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের পানত্রিশা হাজী পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিজয়ী মেম্বারপ্রার্থী জানে আলম ও পরাজিত মেম্বারপ্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সংঘর্ষে আহতরা হলেন ওই এলাকার মৃত জাগির মিয়ার পুত্র নুর আহমদ (৮০), তার কন্যা রিকু আক্তার (৩০), পুত্র জসিম উদ্দিন (৪০), মৃত মোজাফফর আহমদের পুত্র আবদুল হাফেজ (৪২), কন্যা ফাতেমা বেগম (৩৮), কন্যা রেনু আরা বেগম (৩৫), মৃত সৈয়দ আহমদের পুত্র ইয়ারুল হক (৪২), মৃত আলী আহমদের পুত্র বশির আহমদ (৫০), মো. আইয়ুবের স্ত্রী কহিনুর আক্তার (৩০), জামাল উদ্দিনের স্ত্রী রেহেনা আক্তার (৪৫), আবদুল হাফেজের কন্যা দিলরুবা আক্তার (২৬), আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী আসমাউল হুসনা (৩০), আনোয়ার হোসেনের পুত্র মো. তানিম (১৭), মৃত মোজাফফর আহমদের পুত্র মুজিবুর রহমান (৫০), মৃত মোজাহের মিয়ার পুত্র দিদারুল আলম (৩০), হাবিবুর রহমানের পুত্র নাজিম উদ্দিন (৪৫) ও বশির আহমদ (৩০)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার দিন দুপুরে চুনতি ৯নং ওয়ার্ডের বিজয়ী মেম্বার প্রার্থী জানে আলমের বিজয়ী মিছিল সহকারে স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে যান।
কিছুক্ষণ পর কয়েকজন সমর্থক মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফেরার পথে পরাজিত মেম্বার প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের লোকজন তার বাড়ির সামনে রাস্তায় হামলা করে।
হামলার খবর পেয়ে জানে আলমের লোকজন এসে জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এতে উভয় পক্ষের প্রায় ৩০ জন গুরতর আহত হয়েছেন।
এ সময় বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিও ছোড়া হয়। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
পরাজিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম জানান, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে কয়েকশত লোকজন ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে তার বসতঘরে হামলা করেন। এতে তার পরিবারের লোকজন ও অনেক সমর্থক আহত হন। এছাড়া নির্বাচনের দিন তাকে পরাজিত করতে ভোটকেন্দ্রে প্রভাব কাটায় সিরাজ চেয়ারম্যান।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম জানান, নির্বাচিত ইউপি সদস্য জানে আলমের বিজয় মিছিল শেষে বাড়ি ফেরার পথে মুজিবুর রহমান, নাজিম উদ্দিন, বশির আহমদ ও দিদারুল আলমের উপর জাহাঙ্গীর আলমের সমর্থকরা হামলা করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। মেম্বারপ্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ও তার সমর্থকরা পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ হানিফ জানান, চুনতি ইউনিয়নের পানত্রিশা এলাকায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় ৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তারমধ্যে ৪ জনকে আশংকাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে, খবর পেয়ে সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শিবলী নোমান ও লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকের হোসাইন মাহমুদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ওসি জানান, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ঘটনাস্থল থেকে জয়ী-পরাজিত মেম্বারপ্রার্থীসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।