লোহাগাড়ায় হাম-রুবেলা টিকা দেয়ার পর এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শিশুটির নাম নাওরাত হানিফ (৭)। আজ রবিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার কলাউজান ইউনিয়নের পশ্চিম কলাউজান সিকদার পাড়ার চেয়ারম্যান শামসুল ইসলামের বাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
টিকা দেয়ার পর শিশুর মৃত্যু হয়েছে এমন খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
এক পর্যায়ে উত্তেজিত লোকজন টিকাদানকারী স্বাস্থ্য সহকারীকে অবরুদ্ধ করে রাখে।
খবর পেয়ে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডাক্তার শেখ ফজলে রাব্বি ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও মারা যাওয়া শিশুর পরিবারের সাথে কথা বলেন। শিশুটির পিতা মো. হানিফ চৌধুরী শিমুল বলেন, “আজ রবিবার সকাল দশটার দিকে মেয়েকে নিয়ে আমি টিকা কেন্দ্রে যাই। স্বাস্থ্য সহকারী জেবুন্নিসা আমার মেয়েকে টিকা দেন। পরে মেয়েকে নিয়ে আমি বাড়িতে চলে আসি। ঘরে পৌঁছার পর পর মেয়ে আমাকে জানায় বাবা আমার খারাপ লাগছে। এরপর মুহূর্তের মধ্যে আমার মেয়ের চেহারা লাল হয়ে যায় এবং মুখ দিয়ে ফেনা আসতে শুরু করে। অবস্থা খারাপ দেখে মেয়েকে হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা যায়। টিকা দেয়ার ২০-২৫ মিনিটের মধ্যে আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে।”
টিকা প্রদানকারী স্বাস্থ্য সহকারী জেবুন্নিসা বলেন, “ঘটনার দিন সকালে আমি ১০০ জনের মতো শিশুকে হাম-রুবেলার টিকা দিয়েছি। অন্য কারো কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি। টিকা দেয়ার সময়ই শিশু নাওরাত হানিফের শারীরিক অবস্থাও স্বাভাবিক ছিল। শিশুটি টিকার কারণে মারা গেছে নাকি অন্য কোনো সমস্যা হয়েছে বুঝতে পারছি না।”
লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ হানিফ বলেন, “ঘটনাটি আসলে খুবই দুঃখজনক। ঘটনার পরপর আমি লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান হাবীব জিতু ও লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসাইন মাহমুদকে সাথে নিয়েই ঘটনাস্থলে যাই এবং মারা যাওয়া শিশুটির পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলি। একই সাথে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করি।”
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডাক্তার সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, “টিকা নেয়ার পর শিশুর মৃত্যুর খবর পেয়ে আজ সন্ধ্যায় আমি ঘটনাস্থলে যাই এবং মারা যাওয়া শিশুর পরিবারের সাথে কথা বলি। বিষয়টি আসলে খুবই দুঃখজনক। শিশুটির মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যে ছয় সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি আগামীকাল সোমবার কাজ শুরু করবে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর জানা যাবে শিশুটি টিকার কারণে মারা গেছে নাকি অন্য কোনো সমস্যা ছিল।”