লোহাগাড়ায় তাসনিমুল হাসান সাজিদ (১৫) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রকে যৌন নিপীড়নের পর হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ছাত্রের পিতা মোহাম্মদ মাঈনুদ্দিন আজাদ (৩৫) বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। তিনি লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নের ৫ নাম্বার ওয়ার্ডের জমিদার পাড়ার মৃত মাস্টার শামসুদ্দিন আহমদের পুত্র।
মামলায় কঙবাজারের পেকুয়া থানার মেহেনামাপুর বাগগুজারা এলাকার মৃত আব্দুল গফুরের পুত্র নাছির উদ্দিন (৩৭) ও লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নের ৩ নাম্বার ওয়ার্ডের সাতগড়িয়া পাড়ার মৃত খলিলুর রহমানের পুত্র কিশোরের নানা আবুল হোসেনকে (৫৫) আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মাঈনুদ্দিন আজাদ ও তাসলিমা আক্তারের বিবাহ বিচ্ছেদের পর তাদের দুই সন্তান নানা বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করে আসছে। নানা বাড়ি এলাকায় শরিয়ত উল্লাহ জামে মসজিদ সংলগ্ন একটি রুমে বাচ্চাদের প্রাইভেট পড়ান মোয়াজ্জিন নাছির উদ্দিন। গত ২৪ জুন বিকেলে ৩টার দিকে প্রতিদিনের ন্যায় প্রাইভেট পড়তে যান সাজিদ। সে আধুনগর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ডিভোর্সি স্ত্রী মুঠোফোনে তার ছেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মসজিদের উত্তর–পশ্চিম পাশে খালি জায়গায় পরিত্যক্ত জমির উপর পড়ে থাকার বিষয়টি মাঈনুদ্দিন আজাদকে জানান।
স্থানীয়রা সাজিদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। শিশুর মৃত্যুর খবর পেয়ে শিক্ষক নাছির উদ্দিন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাবার চেষ্টাকালে স্থানীয়রা তাকে আটক করেন। পরে নানা আবুল হোসেনের সহযোগিতায় শিক্ষক নাছির পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। পরে ঘটনাস্থলে এসে শিশুর পিতা জানতে পারেন তার ছেলেকে শিক্ষক নাছির জোরপূর্বক যৌন নিপীড়ন করার পর মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে এবং মৃত্যু নিশ্চিত করতে নাক ও মুখে বালিশ চাপা দেয়। শিশু সাজিদের গায়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টের কোন চিহ্ন ছিল না। এছাড়া ঘটনাস্থলে থেকে বৈদ্যুতিক তারের দূরত্বও অনেক দূরে। আসামিরা দুর্ঘটনায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে প্রচার পূর্বক তাড়াহুড়া করে লাশ দাফন সম্পন্ন করেন।
চট্টগ্রাম জজ কোর্টের বাদী পক্ষের আইনজীবী আবদুল লফিত জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামলাটি লোহাগাড়া থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ প্রদান করেছেন। লোহাগাড়া থানার সেকেন্ড অফিসার (এসআই) জাহেদ হোসেন জানান, এখনো আদালতের নির্দেশনার কপি পাওয়া যায়নি। নির্দেশনার কপি পেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।