লোহাগাড়ায় ডিলারের বিরুদ্ধে ওজনে সার কম দেওয়ার অভিযোগ

লোহাগাড়া প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৭:৪৬ পূর্বাহ্ণ

লোহাগাড়ায় এক ডিলারের বিরুদ্ধে ইউরিয়া সারের প্রতি বস্তায় ৪৫ কেজি করে কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন নামে ভুক্তভোগী এক কৃষক বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগকারী সেলিম উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নলবনিয়া পাড়ার মাহমুদুল হকের পুত্র। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি উপজেলার আধুনগর স্টেশনস্থ বিএডিসির অনুমোদিত ডিলার ও বিসিআইসির অনুমোদিত ডিলারের বিক্রয় প্রতিনিধি মো. জহিরুল ইসলামের মালিকানাধীন মেসার্স জহির স্টোর থেকে ৩ বস্তা ইউরিয়াসহ বিভিন্ন সার ও কীটনাশক ক্রয় করেন ভুক্তভোগী কৃষক সেলিম উদ্দিন। ডিলারের কাছ থেকে নেওয়ার সময় সার ভর্তি বস্তা পরিমাপ করতে চাইলে তা ওজন করে দেওয়া হয়নি। পরে নিজ এলাকায় গিয়ে ডিজিটাল পাল্লায় পরিমাপ করে দেখতে পান প্রতি বস্তায় ৪৫ কেজি করে ইউরিয়া সার কম রয়েছে। এছাড়া সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি নেওয়া হয়েছে সার ও কীটনাশকের দাম। ক্যাশ ম্যামো চাইলে ডিলারের নামঠিকানাবিহীন একটি কাগজে পরিমাণ ও দাম লিখে দেওয়া হয়েছে। ডিলারের কাছ থেকে কেনা ইউরিয়া সারের এক বস্তা ব্যবহার করলেও দুই বস্তা অক্ষত অবস্থায় রেখে দিয়েছেন বলে জানান ভুক্তভোগী কৃষক।

গত মঙ্গলবার রাতে স্থানীয় কৃষকের মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে চুনতি ইউনিয়নের নলবনিয়া এলাকায় সরেজমিনে গেলে কৃষক আজগর হোসেন ও আহমদ কবিরসহ প্রায় অর্ধ শতাধিক কৃষক জড়ো হয়ে ডিলারের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেন। এ সময় ৫০ কেজির একটি ইউরিয়া সারের বস্তা ডিজিটাল পাল্লায় পরিমাপ করলে দেখা গেছে ৪৬ কেজি ৯০০ গ্রাম। প্রতি কেজি ইউরিয়া সার সরকার নির্ধারিত ২৭ টাকায় বিক্রির নির্দেশনা থাকলেও বিক্রি করা হচ্ছে ৩০৩২ টাকায়। এছাড়া প্রতি ৫০ কেজি ওজনের ইউরিয়া সারের বস্তায়ও নেওয়া হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বেশি। কৃষকরা জানায়, এভাবে বিভিন্ন সার ও কিটনাশক কিনে ডিলারের কাছে প্রতিনিয়ত প্রতারণা শিকার হচ্ছেন। তারা এই ব্যাপারে সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে ডিলারের লাইসেন্স বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

অভিযুক্ত ডিলার মো. জহিরুল ইসলাম জানান, বাফার গুদাম থেকে তাদের কাছে যেভাবে বস্তা ভর্তি সার আসে সেভাবেই বিক্রি করা হয়। সারের বস্তায় ওজনে কম থাকলেও ৫০ কেজির দাম নেয়া হয় কেন জানতে চাইলে তিনি কোন সদোত্তর দিতে পারেননি। এছাড়া ডিলারের আওতায় আসা সার ও কীটনাশক বিক্রি করলে এক ধরনের ক্যাশ মেমো আর বাহির থেকে কিনে আনা সার ও কীটনাশক বিক্রি করলে নামঠিকানা বিহীন ক্যাশ মেমো ব্যবহার করা হয় বলে জানান তিনি।

লোহাগাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাজী শফিউল ইসলাম জানান, বাফার গুদাম থেকে প্রতি বস্তায় সার কম দেয়ার বিষয়টি স্থানীয় ডিলাররা লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন। বস্তায় সার কম থাকলে পরিমাপ করে সেই অনুযায়ী কৃষকের কাছ থেকে টাকা নিতে হবে। তবে নির্ধারিত দামের চেয়ে সারের দাম বেশি রাখার কোন সুযোগ নেই। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসয়াবিনের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাড়তি দামে বিক্রি ছয় প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
পরবর্তী নিবন্ধহাটহাজারীতে বাস-টেক্সি সংঘর্ষ, ব্যাংক কর্মকর্তাসহ নিহত দুই