‘লোক নাট্যদল স্বর্ণপদক ২০২১’ পাচ্ছেন ছয় গুণীজন। গত ৬ জুলাই লোক নাট্যদলের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। মনোনীত গুণীজনরা হলেন- সদ্য প্রয়াত এস এম মহসীন, ড. ইনামুল হক, শাহাদাৎ হোসেন খান হীলু, সৈয়দ দুলাল, আরহাম আলো ও কঙ্কন দাশ (চট্টগ্রাম)। ভার্চুয়াল এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হয়ে নাম ঘোষণা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য ও লোক নাট্যদলের উপদেষ্টা ড. নাসরীন আহমেদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দলের অধিকর্তা, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ও গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সভাপতি লিয়াকত আলী লাকী। মনোনীত গুণীজনদের মধ্যে যুক্ত ছিলেন-ড. ইনামুল হক, শাহাদাৎ হোসেন খান হীলু, সৈয়দ দুলাল ও কঙ্কন দাশ। এ সময় তারা নিজেদের প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দলের সদস্য মাসউদ সুমন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন দলের সদস্য রুবেল শঙ্কর। আবৃত্তি ও নৃত্যে সমান পারদর্শী এই গুণী শিল্পী প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, পুরস্কার বা সম্মাননা কাজের উৎসাহকে যেমনি বাড়ায়, তেমনি দায়িত্ব বোধকে আরো বাড়িয়ে দেয়। কোনো কিছু পাওয়ার আশায় নয়, মনের আনন্দে সৃষ্টিশীল কাজে নিজেকে যুক্ত রেখেছি। আমার এখনো অনেককিছু শেখার রয়েছে। আমি এমন কাজ করে যেতে চাই, যা সবাই মনে রাখবে। তিনি দেশে ও দেশের বাইরে ডজনের বেশি পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন। চট্টগ্রামের নাট্যমঞ্চে অত্যন্ত পরিচিত মুখ কঙ্কন দাশ। শুধু নাটকে নয়, বেশ কিছু সিনেমায় তিনি অভিনয় করেন। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত ছবি ‘ন ডরাই’তে তিনি আয়েশার মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবিটি পরিচালনায় ছিলেন-তানিম রহমান আংশু, আর প্রযোজনা করেন মাহবুব রহমান। এছাড়া শৈবাল চৌধুরীর ‘ভূমিকম্পের পরে’, মোর্শেদ হিমাদ্রী হিমুর ‘হলুদ শিখরে স্বপ্নের কোলাজ’, হিন্দোল রায়ের ‘খোলা হাওয়া’, ইফতেখার আহমেদ সায়মনের ‘দৃশ্যছায়া’, মোকাদ্দেম মোর্শেদের ‘লড়াই’ ছবিতে তিনি অভিনয় দক্ষতার স্বাক্ষর রাখেন। তবে কঙ্কন মঞ্চের মানুষ। তিনি ১৯৮৭ সালে প্রতিভাসে যোগ মঞ্চে তাঁর অভিনয়শৈলী ফুটিয়ে তুলতে শুরু করেন। এরপর অরিন্দম, নান্দীমুখ, উত্তরাধিকার, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নাটকে অভিনয় করেন। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে-‘কোর্ট মার্শাল’, ‘দুতিয়ার চাঁদ’, ‘জলকন্যা’, ‘বেলা শেষের গলপো’, ‘লাল লন্ঠন’, ‘উনার্জাল’, ‘সাম্পান নাইয়া’, ‘মৃত্যুপাখি’, ‘বৃত্তের বাইরে’, ‘অ্যান্টিগোনে’, ‘বধ্যভূমি’, ‘মেহের জান’, ‘সোহরাব রুস্তম’, ‘রাজনীতির কবি’, ‘আগুনপাখি’, ‘পুতুল খেলা’, ‘দুখিনী’ অন্যতম। নাটককে নিয়ে গেছেন ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, থাইল্যান্ডে। প্রমার সাথে কয়েকটি কাজ পরিচালনা করেছেন। তন্মধ্যে ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’, ‘মহুয়ার পালা’, ‘ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না’ অন্যতম। আবদুল হাকিম সিটি কর্পোরেশন কিন্ডারগার্টেনের অধ্যক্ষ কঙ্কন দাশ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাসাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী। তাঁর বাবা বিশ্বেশ্বর দাশ ও মা মুকুল দাশ উভয়ে শিক্ষক।