লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে প্রশ্ন শিবিরের

আরও যত অভিযোগ

চবি প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৯:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে একাধিক অভিযোগ তুলেছে শাখা ছাত্রশিবির। তারা বলছে, বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের প্রভাবাধীন নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্তের কারণে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ গড়ে ওঠেনি। এ অবস্থায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।

গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব অভিযোগ তোলেন শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলী। তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশনের অধিকাংশ সদস্য সরাসরি একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত। বিশেষ করে কমিশনে থাকা ড. জাহিদুর রহমান চৌধুরী প্রকাশ্যে ছাত্রশিবিরসহ বিরোধী মতের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। এমন একজন শিক্ষক কমিশনে থাকলে নির্বাচনের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হবেই।

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রশিবির আরও কয়েকটি বিষয় তুলে ধরে তাহলগঠনতন্ত্রে দপ্তর সম্পাদক পদ কেবল পুরুষদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছিল। ছাত্রশিবিরের দাবি, এ সিদ্ধান্ত তাদের পরামর্শে হয়নি। অথচ প্রশাসনের নীরব অবস্থানকে সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে প্রতিপক্ষ সংগঠন তাদের বিরুদ্ধে নারী বিদ্বেষী প্রোপাগাণ্ডা চালিয়েছে। শিবিরের প্রশ্ন এ পদ কেন কেবল পুরুষদের জন্য বিশেষায়িত করা হয়েছিল, এর পেছনে কার উদ্দেশ্য কাজ করেছে? তারা দাবি জানায়, দোষীদের চিহ্নিত করে তাদেরকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে।

শিবির অভিযোগ করে বলে, প্রশাসন কোনো ছাত্রসংগঠনের সাথে আলোচনা না করেই ভোটার ও প্রার্থীদের বয়সসীমা তুলে দিয়েছে। তাদের মতে, নির্দিষ্ট একটি সংগঠনের সুবিধা করে দিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ সিদ্ধান্তের স্পষ্ট ব্যাখ্যা না দিলে প্রশাসনের উদ্দেশ্য নিয়ে ছাত্রসমাজ প্রশ্ন তুলবে।

সংগঠনটি অভিযোগ করেছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা শাস্তির বাইরে থেকে অবাধে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিচ্ছে। এ বিষয়ে তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. আল আমিন ন্যূনতম বিচারও করেননি বলে দাবি করে ছাত্রশিবির। তাদের মতে, এটি জুলাই বিপ্লবের প্রতি সরাসরি বেঈমানি।

ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার সুযোগ নিয়ে অভিযোগ, শিবির মনে করে, যেসব শিক্ষার্থীকে মানবিক কারণে ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাদের একাডেমিক কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ রাখাই যুক্তিযুক্ত ছিল। অন্যথায় এটি প্রমাণ করবে যে প্রশাসন শুধুমাত্র নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার জন্যই ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, চাকসুর গঠনতন্ত্রে সভাপতি হিসেবে উপাচার্যকে একচ্ছত্র ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে বাধা সৃষ্টি করবে। পাশাপাশি প্রাসঙ্গিক সম্পাদক পদ বাদ দিয়ে অপ্রয়োজনীয় সহসম্পাদক পদ যুক্ত করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করে তারা।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে ছাত্রশিবির জোর দিয়ে বলেছে, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দিয়ে পুনর্গঠন করতে হবে এবং প্রশাসনকে পক্ষপাতদুষ্ট সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোহাম্মদ পারভেজ। এতে সংগঠনের চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণ শাখার সভাপতি ইব্রাহীম হোসেন রণি বক্তব্য দেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শাখা ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক ইসহাক ভূঞা, শিক্ষা সম্পাদক মোনায়েম শরীফ ও সোহরাওয়ার্দী হলের সভাপতি আবরার ফারাবী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক এবার গ্রেপ্তার প্লট দুর্নীতির মামলায়
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম কাস্টমসে নিলামে তোলা হচ্ছে কোটি টাকার রাসায়নিক পণ্য