মীরসরাইয়ের বিস্তীর্ণ পাহাড় জুড়ে বাণিজ্যিকভাবে লাগানো হয়েছে লেবু। এসব লেবু বাগান করে স্বাবলম্বী হয়েছেন হাজারো কৃষক। ১২ মাস ফলন, অধিক রস, ভিটামিন ও সুঘ্রাণ যুক্ত হওয়ায় হাইব্রিড জাতের এ সীডলেস লেবুর চাহিদা ব্যাপক। উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের সাইবেনীখিল ত্রিপুরা পাড়ায় সরেজমিনে দেখা যায়, ওই এলাকায় পাহাড়ি–বাঙালি মিলে প্রায় ৩শ লেবু চাষি রয়েছেন। এছাড়া বাগান পরিচর্যা ও লেবু আহরণের জন্য কাজ করছেন নারীসহ শত শত শ্রমিক। কেউ গাছ থেকে লেবু সংগ্রহ করছেন, কেউ তা গুনে বস্তা ভরছেন, কেউ দুর্গম পাহাড় থেকে বহন করে সড়কের পাশে নিয়ে আসছেন।
সাইবেনীখিল এলাকা ছাড়াও কয়লা বাজার, নলখো, কালাপানিয়া, বদ্ধভবানী এলাকার পাহাড়ি অঞ্চল এবং লক্ষীছরা, কয়লা ছরার পাশে পাহাড়ের ঢালুতে ব্যাপকভাবে লেবু চাষ হচ্ছে। এসব এলাকায় প্রায় এক হাজার চাষির পাশাপাশি এই লেবু চাষের সাথে সম্পৃক্ত ৩ হাজার শ্রমিক। এখানকার লেবু শ্রমিকরা প্রতিদিন ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা মজুরিতে কাজ করেন। বেকারত্ব মোচনে লেবুচাষ হয়ে উঠছে এই এলাকার অন্যতম মাধ্যম।
চাষি জামাল উদ্দিন জানান, এবারও প্রায় দুই লাখ টাকার লেবু বিক্রি করেছেন নিজের বাগান থেকে। গত কয়েক বছর ধরে বছরে প্রায় ১০ লাখ টাকা আয় করেন তিনি। এবার ভাল দাম পেয়ে খুশি সবাই।
রমজান মাস এবং গরমে লেবুর চাহিদা বৃদ্ধির কারণে ভালো দাম পাচ্ছেন চাষিরা। মাঝারি সাইজের প্রতি পিস লেবু ৬ থেকে ৮ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি হয়। যা খুচরা বাজারে ১০ থেকে ১৫ টাকা হারে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা লেবু চাষিদের থেকে লেবু সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম, ফেনী, লাকসাম, কুমিল্লার নিমসার, ঢাকার কারওয়ান বাজারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা বলেন, লেবুচাষ লাভজনক হওয়ায় এরইমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য বাগান গড়ে ওঠেছে। মীরসরাইয়ে প্রায় ৯০ হেক্টর জমিতে লেবু চাষ হয়। এতে উৎপাদন হয় প্রায় ৫শ’ মেট্রিক টন। কৃষক লাভবান হওয়ায় উপজেলায় এখন লেবুর বাণিজ্যিক চাষ বেড়েই চলেছে।