নিজেদের মাঠে মালদ্বীপকে হারিয়ে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এই রাউন্ডের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৭ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে আসে জামাল ভূইয়ারা। তাই শংকা ছিল নিজেদের ঘরের মাঠে লেবাননের বিপক্ষে কেমন করে বাংলাদেশ। তবে দারুণভাবে ফিরেছে বাংলাদেশ দল। অস্ট্রেলিয়ার হতাশা কাটিয়ে লেবাননের কাছ থেকে এক পয়েন্ট কেড়ে নিয়েছে বাংলাদেশ দল।
শুরুতে অগোছালো ফুটবল খেললেও ধীরে ধীরে নিজেদের গুছিয়ে নেয়। তবে দ্বিতীয়ার্ধে হঠাৎই এক গোল হজম করে বসে। তবে আবার ছন্দে ফিরে কারবেরার শীর্ষরা। আর তাতেই দারুণ এক ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। ঢাকার বসুন্ধরা অ্যারেনায় অনুষ্ঠিত ম্যাচে লেবাননের সাথে ১–১ গোলে ড্র করেছে বাংলাদেশ। ম্যাচের দুটি গোলই হয় দ্বিতীয়ার্ধে। মাজেদ ওসমান লেবাননকে এগিয়ে নেওয়ার পর সমতা ফেরান মোরসালিন। সমপ্রতি ‘মদ কান্ডে’ সমালোচিত মোরসালিন ফিরেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে। তবে সেখানে খেলা হয়নি। ঘরের মাঠে সুযোগ পেয়ে সেটাকে বেশ ভালভাবেই কাজে লাগালেন এই স্ট্রাইকার। যদিও ম্যাচটা জেতাতেও পারতেন এই মোরসালিন। কিন্তু একেবারে শেষের দিকে প্রাপ্ত সুযোগটাকে কাজে লাগাতে পারেননি এই স্ট্রাইকার। একাধিক হলুদ কার্ডের কারণে স্ট্রাইকার রাকিব হোসেন ও ডিফেন্ডার সাদউদ্দিন খেলতে না পারায় বাংলাদেশের একাদশে ফিরেন মোরসালিন। আর ফিরেই সুযোগটাকে কাজে লাগালেন এই স্ট্রাইকার।
যদিও ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমনাত্মক লেবানন। শুরুতেই বাংলাদেশের রক্ষণভাগে হানা দেয় লেবানন স্ট্রাইকাররা। কিন্তু সুবিধা করতে পারেনি । শুরুর আক্রমন সামলে ধীরে ধীরে নিজেদের গুছিয়ে নেয় বাংলাদেশ। সে সুযোগে ২৪ মিনিটে আক্রমনে উঠে জামালের কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে বিশ্বনাথ হেড নিলেও তা গোলের দেখা পায়নি। পরের মিনিটে ভালো একটি আক্রমন করে বাংলাদেশ। ইসা ফয়সালের পাস ধরে মোরসালিন বঙে বল ফেলেছিলেন। কিন্তু সোহেল যে শট নেন তা দ্রুত পা বাড়িয়ে আটকান ডিফেন্ডার মোহাম্মদ এল হায়েক। ৩৩ মিনিটের সুযোগটি সহজ ছিল বাংলাদেশের জন্য। ডান দিক থেকে হৃদয়ের বাড়ানো আড়াআড়ি ক্রস এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে কিছুটা দিক পাল্টায়। কিন্তু মোরসালিন ফাকায় থাকলেও বলের নাগাল পাননি। চার মিনিট পর লেবাননের মিডফিল্ডার জিহাদ আইয়ুবের দূরপাল্লার শট চলে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে। ৪৫ মিনিটে ফাহিম বল পাঠিয়েছিলেন বঙে। কিন্তু গোলমুখে থাকা মোরসালিন পারেননি টোকা দিতে। ফলে হতাশ হতে হয় বাংলাদেশকে।
বিরতির পর আক্রমন বাড়ায় লেবানন। ৪৭ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে উড়ে আসা বলে কাসিম আল জেইন হেড নিয়েছিলেন। কিন্তু তা উড়ে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে। ৬৭ মিনিটে গোল হজম করে বাংলাদেশ। বঙের ভেতরে কাজী তারিক রায়হান বল ক্লিয়ার করার পর পুরোপুরি বিপদমুক্ত করার সুযোগ পেয়েছিলেন বিশ্বনাথ ও শ্রাবণ। দুজনের বোঝাপড়ার ঘাটতির সুযোগ বল পেয়ে যান ওসমান। কোনাকুনি শটে লক্ষ্যভেদ করেন এই ফরোয়ার্ড। এগিয়ে যায় লেবানন। তবে সমতা ফেরাতে বেশি সময় নেয়নি বাংলাদেশ। খেলার ৭২ মিনিটে ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমনে উঠে বঙের বেশ বাইরে থেকে কোনাকুনি শটে দূরের পোস্ট দিয়ে বল জালে পাঠিয়ে দেন মোরসালিন। উল্লাসে ফেটে পড়ে গ্যালারী। স্বস্তি ফিরে বাংলাদেশ শিবিরে। ৮৮ মিনিটে আরেকটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেন মোরসালিন। রফিকুলের বাড়ানো বল প্রথম স্পর্শে নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি ঠিকঠাক। পরে শট নিলেও বল চলে যায় বাইরে। বলটা প্রথম দফায় ধরতে পারলে হয়তো গোল পেতেন এই স্ট্রাইকার। বাকি সময়ে মিলেনি আর কোনো সুযোগ। জয় না পেলেও মূল্যবান একটি পয়েন্ট পাওয়ার স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়ে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১৮৩তম স্থানে থাকা বাংলাদেশ। লেবানন আছে ১০৪ তম স্থানে।