প্রতি বছর প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি)। ভর্তির ফি ব্যাংকের লাইনে দাঁড়িয়ে জমা দিতে হয় তাদের। আবার প্রতিটি বর্ষের ভর্তি ও পরীক্ষার ফিও দিতে হয় ব্যাংকের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এমফিল, পিএইচডি এবং যেকোনো সনদ–নম্বরপত্র উত্তোলনসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যাংকে যেতে হয়।
যাবতীয় লেনদেনের ক্ষেত্রে এরকম ভোগান্তি দীর্ঘ সময় পোহাতে হচ্ছে প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থীর। ডিজিটাল যুগেও এমন এনালগ পদ্ধতির সমালোচনা করেছেন শিক্ষার্থীরা। প্রতিবছরই পরীক্ষার সময় আসলে দীর্ঘ লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে চবির অগ্রণী ব্যাংকে শিক্ষার্থীদের ফি জমা দিতে হয়।
কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন এই ব্যবস্থা আধুনিক করার কথা বললেও বাস্তবায়ন হয়নি। অবশেষে এলো সুখবর। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাবতীয় ফি প্রদানের সিস্টেমকে অনলাইনে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের আওতায় নিয়ে আসতে কাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেল।
সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যেই বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের সাথে চবি কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক আলোচনাও করেছেন। তবে সিস্টেমটি চালু হলে শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ফি পরিশোধের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট একটি চার্জ প্রদান করতে হবে। অপরদিকে যাদের ইচ্ছা তারা কোনো প্রকার এক্সট্রা চার্জ পরিশোধ করা ছাড়াই পূর্বের মতো ব্যাংকে ফি পরিশোধ করতে পারবেন।
জানা যায়, চবি আইসিটি সেলের সঙ্গে ইতোমধ্যে সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক ও নগদ অনলাইন ব্যাংকিং নিয়ে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। চলতি সপ্তাহেই নগদের সঙ্গে বৈঠক করবে চবি। এছাড়া কয়েকটি ব্যাংকের ৯মপৃষ্ঠার ৪র্থ কলাম
সঙ্গে বৈঠক করবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে যেখানে শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক মনে হবে সেখানে চুক্তি করবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এমন পদক্ষেপে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিনের দাবি পূর্ণ হলে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে বলেও জানান তারা। সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী হাসান আলী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বর্ষে দুইবার টাকা জমা দিতে হয়। এছাড়া নানা কাজে ব্যাংকে যেতে হয়। দীর্ঘ লাইন ঠেলে টাকা জমা দেওয়া চরম ভোগান্তির। অবশেষে শুনছি, আধুনিক হচ্ছে লেনদেন পদ্ধতি। এটা আসলে শিক্ষার্থীদের জন্য খুব স্বস্তির খবর।
আগামী এক মাসের মধ্যে পেমেন্ট সিস্টেমকে অনলাইনের আওতায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন চবি আইসিটি সেলের পরিচালক প্রফেসর ড. খাইরুল ইসলাম। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল যাবতীয় লেনদেনকে অনলাইনের আওতায় নিয়ে আসার। এটা করতে পারলে শিক্ষার্থীদের জন্যই বিষয়টা অনেক সহজ হয়। তিনি বলেন, আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। ইতোমধ্যে অনেক দূর এগিয়েও গিয়েছি। বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং প্লাটফর্মের সাথে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। তারা আমাদের ক্যাম্পাসে এসে দেখেও করে গেছেন। খুব শীঘ্রই পেমেন্ট সিস্টেমকে আমরা অনলাইনের আওতায় নিয়ে আসতে সক্ষম হব। আগামী এক মাসের মধ্যে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারব বলে আমি আশাবাদী।