বইমেলার ব্যাপ্তি দুদিন বাড়ানো হয়েছে। এখন মেলা শেষ হবে ১২ মার্চ। গতকাল মঙ্গলবার আয়োজক চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ মেলায় মাইকিং করে সময় বৃদ্ধির বিষয়টি ঘোষণা দেন। গত ২০ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এ মেলা ১০ মার্চ শেষ হওয়ার কথা ছিল। অবশ্য ওইদিন বইমেলা মঞ্চে সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। বর্ধিত দুদিন মেলার স্টল চালু থাকবে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার প্রকাশক, লেখক ও পাঠকদের পক্ষে সিটি মেয়র বরাবর করা আবেদনে বইমেলার সময় ১৭ মার্চ পর্যন্ত করার অনুরোধ করা হয়। এদিকে গতকালও মেলা ছিল জমজমাট। লেখক-পাঠকের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বিকেল ৩টায় উন্মুক্ত হয় মেলা মঞ্চ। সময় বাড়ার সাথে ভিড় বাড়তে থাকে। অন্য দিনগুলোতে ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থী বেশি দেখা যেত। তবে গতকাল ছিল ব্যতিক্রম। প্রায় সবার হাতে নতুন কেনা বইয়ের প্যাকেট দেখা গেছে।
গতকাল ছিল বিশ্ব নারী দিবস। মেলায় ছিল দিবসটির আবহ। বইমেলা মঞ্চের আলোচনা সভায়ও ছিল নারী দিবস। আলোচনা সভার প্রধান অতিথি নগর মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি হাসিনা মহিউদ্দিন বলেন, বাঙালি নারীর অগ্রগতির বড় ধাপ ভাষা আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়া। তাদের এ সক্রিয় অংশগ্রহণ একটি সচেতন প্রয়াস। নারী ভাষা সংগ্রামীদের নাম ও তাদের অবদান নিয়ে ইতিহাসে খুব কম আলোচিত হয়েছে। ভাষা সংগ্রামের ইতিহাস সঠিকভাবে জানা ও তা নতুন প্রজন্মকে জানানো আজ আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তা যদি আমরা করতে পারি তবেই আগামী প্রজন্ম তাদের মা-বোনদের কীর্তিগাথা শুনে গৌরবান্বিত হবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের সফল বাস্তবায়নের ফলে নারী উন্নয়ন আজ সুস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের রোল মডেল।
সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র আফরোজা কালামের সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক ছিলেন সাবেক এমপি ও ঢাকা উত্তর মহিলা যুবলীগের সভাপতি সাবিনা আক্তার তুহিন। আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার মাহফুজা আক্তার ও সাংবাদিক ডেইজি মওদুদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অমর একুশে বইমেলা কমিটির আহ্বায়ক কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু।
সাবিনা আক্তার তুহিন বলেন, সভ্যতার গোড়াপত্তন ও তার ক্রমবিকাশে নারীর ভূমিকা পুরুষের চেয়ে কম নয়। ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ প্রকৃত অর্থেই ছিল জনযুদ্ধ। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই সর্বাত্মক এই যুদ্ধে শামিল হয়েছিল সমানভাবে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে নারীর অবদানের সঠিক মূল্যায়ন আজও হয়নি।
এদিকে গতকাল পাঠকের আগ্রহে থাকা বইগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে হরিশংকর জলদাসের ‘দুর্যোধন’, নেছার আহমেদের ‘ফাগুন আনা মানুষগুলো’, মাইনুল এইচ সিরাজীর ‘জীবন-টীকা’, আফছার উদ্দীন লিটনের ‘অধরা প্রেম’, শামীম ফাতেমা মুন্নীর ‘মন জোছনায় ভালোবাসায়, গৌরী প্রভা দাশের ‘নৈঃশব্দের ধ্যান’ ও লিপি বড়ুয়ার ‘মন জোনাকির ছায়াপথ’।