লেকের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় কমেছে মৎস্য আহরণ

খাগড়াছড়িতে বিপাকে মৎসজীবীরা

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | বুধবার , ৭ অক্টোবর, ২০২০ at ১০:৪৩ পূর্বাহ্ণ

কাপ্তাই লেকের পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ায় খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে মৎস্য আহরণ কমে গেছে। বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় শুকিয়ে গেছে লেকের অধিকাংশ জলাভূমি। বিগত বছরের তুলনায় মৎস্য আহরণ না হওয়ায় লোকসান গুনছে জেলে ও ব্যবসায়ীরা। এতে রাজস্ব কমেছে রাজস্ব আদায়। গত বছরের তুলনায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১১ লাখ টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। মহালছড়ি মৎস্য আহরণ উপকেন্দ্রের হিসেব মতে,‘ খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে কাপ্তাই লেকে মৎস্য আহরণের উপর জেলের সংখ্যা প্রায় ৬ হাজার। বছরের ৯ মাস এখানে মাছ শিকার করে মৎস্যজীবীরা। ঢাকা,চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এসব মাছ পাঠানো হয়। তবে চলতি বছর বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় কাপ্তাই লেকে পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে কমে গেছে। শুকিয়ে গেছে কাপ্তাই লেকে একটি বড় অংশ। গতবছর যেখানে পানি ছিল সেখানে এখন গোচারণ ভূমি। লেক শুকিয়ে যাওয়ায় কমে গেছে মৎস্য আহরণ।এতে বিপাকে পড়েছে জেলেরা। দেখা দিয়েছে রাজস্ব ঘাটতি।
জেলেরা জানান, পানি কমে যাওয়ায় জালে কোন মাছ পরছে না। অন্যান্য বছর এই সময়ে প্রচুর মাছ ধরা পড়ত। এখন কোন পানিই নেই । মাছ না পাওয়ায় আমরা খুব কষ্টে আছি। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। মৎস্য আহরণ কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে ব্যবসায়ীরাও। জেলেদের অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখে ব্যবসায়ীরা। কিন্ত মাছ না পাওয়ায় লোকসানে পরেছে তারা। কয়েকজন মাছ ব্যবসায়ী জানান, আমরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মাছ পাঠায়। তবে এবছর পানি না থাকায় মাছ কম ধরা পরেছে। ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কাপ্তাই লেকের নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য ড্রেজিং জরুরি। ড্রেজিং হলে লেকের গভীরতা বাড়বে। মাছও বেশি ধরা পড়বে। মৎস্য আহরণ কমে যাওয়ায় লোকসান গুনছে বরফকল মালিকেরা। কমে গেছে ব্যস্ততা। তারা জানান, মাছ কম ধরা পরায় আমাদের বরফের চাহিদাও কমে গেছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর আমাদের কাজ কম। মৎস্য আহরণ কমে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে রাজস্ব ঘাটতি। গত বছর মৎস্য আহরণের প্রথম ৩৮ দিনে মহালছড়ি মৎস্য আহরণ কেন্দ্রে রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ৩৩ লাখ টাকা,এবছর একই সময়ে রাজস্ব আদায় কমেছে ৯ লাখ টাকা। মৎস্য আহরণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে শীঘ্রই কাপ্তাই লেকে ড্রেজিং’র কাজ শুরু হবে জানিয়েছে মৎস্য কর্মকর্তা । মহালছড়ি মৎস্য আহরণ উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসরুল্লাহ আহমেদ জানান, বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় মৎস্য আহরণ কমে গেছে। গত বছর এই উপকেন্দ্রে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা। তবে এই বছর রাজস্ব ঘাটতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মৎস্য আহরণ বৃদ্ধি লক্ষ্যে নাব্যতা সংকট দূর করতে কাপ্তাই লেকে ড্রেজিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শীঘ্রই ড্রেজিং কাজ শুরু হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগাউসিয়া কমিটি পাঁচলাইশ শাখার চিকিৎসা ক্যাম্প
পরবর্তী নিবন্ধ২৪০ জন এতিমকে ১ মাসের খাদ্য প্রদান করল জেলা লায়ন্স