বিদেশে টাকা পাচার এবং লুটপাটকারীদের পরিচয় জাতীয় সংসদে জানতে চেয়েছেন জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম। গতকাল মঙ্গলবার সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন কাজের প্রশংসাও করেছেন ময়মনসিংহের এই সংসদ সদস্য। টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে অভিযোগ তুলে ফখরুল ইমাম প্রধানমন্ত্রী উদ্দেশে বলেন, লুটেরা কারা? এরা কী দলে? সরকারে না আশপাশে? এদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন জানতে চাই। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের রপ্তানি আয়ের তথ্যে ‘গড়মিলের’ অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, সরকারের এই দুটি প্রতিষ্ঠানের ৫ বছরে রপ্তানি আয়ের যে গড়মিল, তা দিয়ে ছয়টি পদ্মা সেতু করা সম্ভব। জাতীয় পার্টির এই সাংসদ বলেন, ইপিবির হিসাবে গত ৫ বছরে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ১০০ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে রপ্তানি আয় ৮০ বিলিয়ন ডলার। ইপিবির তুলনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০ বিলিয়ন ডলার কম। এ হিসেবে ৫ বছরে লাপাত্তা হয়েছে এক লাখ ৬২ হাজার কোটি টাকা। রাষ্ট্রের এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কোথায় আছে। আদৌ আছে কি না, তা জানেন না নীতি নির্ধারকেরা। খবর বিডিনিউজের।
ফখরুল ইমাম বলেন, এখন শোনা যাচ্ছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা ব্যবহার করা হবে না। তাহলে এতদিন এত আন্দোলন চলল কেন? এর অর্থদণ্ড কত? চীনের সাথে ২৭টি সমঝোতা স্মারকে সাড়ে ৩৭ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের ঘোষণা এসেছে। বাস্তবে এর সামান্য বাংলাদেশে এসেছে। কত এসেছে তা জানতে চাই। দেশের বিভিন্ন খাতে দুর্নীতির বিরাট অভিযোগ উঠেছে। বৃহৎ প্রকল্পের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে কী না তা জানতে চাই।
এদিকে পিপলস লিজিং কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীদের জীবন ‘দুর্বিষহ’ হয়ে পড়েছে মন্তব্য করে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, বিদেশে টাকা পাচার হচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন সরকারি কর্মকর্তারা বিদেশে টাকা পাচার করছেন। এটা দেখা দরকার। দেশের অর্থনৈতিক খাতের ‘অব্যবস্থাপনার’ সমালোচনা করে এই সংসদ সদস্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী অনেক কাজ করছেন। কিন্তু আামদের অর্থনৈতিক সেক্টর পিতামাতার বখে যাওয়া সন্তানের মত। অবাধ্য সন্তানের মত। সরল পথে আনা যাচ্ছে না। হাই কোর্টও বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা ঠগবাজ, প্রতারকদের আশ্রয় দিচ্ছেন। এক মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ে এই পর্যবেক্ষণ এসেছে।