লিভার ক্যানসারের জন্য দায়ী নয়া ভাইরাস, আবিষ্কারের স্বীকৃতিতে নোবেল

| মঙ্গলবার , ৬ অক্টোবর, ২০২০ at ৬:০৯ পূর্বাহ্ণ

ভাইরাস আবিষ্কার করেছিলেন ১১ বছর আগে। বিশ্ব জুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যেই নতুন ‘হেপাটাইটিস সি’ ভাইরাস আবিষ্কারের স্বীকৃতি হিসেবে নোবেল পুরস্কার পেলেন তিন বিজ্ঞানী। নয়া ভাইরাসের সন্ধান দিয়ে মার্কিন বিজ্ঞানী হার্ভে জে অলটার ও চার্লস এম রাইসের সঙ্গে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী মাইকেল হাউটন এই পুরস্কার পেয়েছেন বলে গতকাল সোমবার ঘোষণা করেছে নোবেল কমিটি। লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যানসারের অন্যতম কারণ এই ‘হেপাটাইটিস সি’ ভাইরাস আবিষ্কার করে বিশ্বে রক্তবাহিত রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্যই তিন বিজ্ঞানীকে এই পুরস্কারের দেওয়ার সিদ্ধান্ত, জানিয়েছে নোবেল কমিটি।
৮৫ বছরের হার্ভে জে অল্টার আমেরিকার ক্লিনিক্যাল সেন্টার-এর ডিপার্টমেন্ট অব ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগে সিনিয়র ইনভেস্টিগেটর হিসেবে কাজ করছেন। তার আগে মার্কিন সরকারি সংস্থা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ (এনআইএইচ)-এ দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। নোবেলজয়ী অন্য বিজ্ঞানী চার্লস এম রাইসের জন্ম ১৯৫২ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার স্যাক্রামেন্টোতে। ২০০১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আমেরিকার রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব হেপাটাইটিস সি-তে সায়েন্টিফিক অ্যান্ড এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর ছিলেন। ইংল্যান্ডেরর বিজ্ঞানী মাইকেল হাউটন ১৯৭৭ সালে লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে পিএইচডি পান। ইংল্যান্ড-আমেরিকার বিভিন্ন জায়গায় কাজ করার পর আলবার্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের লি কা শিং অ্যাপ্লায়েড ভাইরোলজি ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর পদে কর্মরত তিনি। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
এই তিন বিজ্ঞানীকেই এ বার নোবেল পুরস্কারের জন্য বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে নোবেল কমিটি জানিয়েছে, ‘হেপাটাইটিস এ’ এবং ‘হেপাটাইটিস বি’ ভাইরাস আবিষ্কার ছিল গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। এই দুই ভাইরাস সংক্রমণের পরীক্ষা ও চিকিৎসা পদ্ধতি থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই রক্তবাহিত এক প্রকারের হেপাটাইটিস-এর ব্যাখ্যা মিলত না চিকিৎসক-বিজ্ঞানীদের কাছে। ‘হেপাটাইটিস সি’ সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে। ক্রনিক হেপাটাইটিসের কারণ জানা, হেপাটাইটিস সি সংক্রমণ চিহ্নিত করার জন্য রক্ত পরীক্ষা এবং সম্ভাব্য ওষুধ আবিষ্কারের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে, যা কোটি কোটি মানুষের প্রাণ বাঁচাতে সাহায্য করবে।
গত শতাব্দীর চারের দশকে হেপাটাইটিস এ ভাইরাসের প্রথম সন্ধান মিলেছিল। জানা গিয়েছিল, মূলত পানিবাহিত এই ভাইরাস থেকে লিভারের নানা সমস্যা তৈরি হয়। তার পর ওই শতাব্দীরই ছয়ের দশকে বিজ্ঞানী বারুচ ব্লুমবার্গ আবিষ্কার করেন হেপাটাইটিস বি। রক্তবাহিত এই ভাইরাসের সংক্রমণ আরও মারাত্মক এবং তার থেকে যে লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যানসার হতে পারে, তা প্রথম গবেষণায় দেখিয়েছিলেন বিজ্ঞানী ব্লুমবার্গ। তার জন্য ১৯৭৬ সালে নোবেল পুরস্কার পান তিনি। এ বার সেই একই গোত্রের আরও একটি ভাইরাসের সন্ধান দিয়ে নোবেল পেলেন তিন চিকিৎসা বিজ্ঞানী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিএমপির ১২ কর্মকর্তাকে বদলি
পরবর্তী নিবন্ধশারজাহ যেতে পারলেন না ওরা ৭ জন