চট্টগ্রাম জেলার রাজস্ব প্রশাসনের অফিস সহায়ক পদের মৌখিক পরীক্ষা দিতে এসে প্রক্সির দায়ে ধরা পড়েছেন ১২ পরীক্ষার্থী। এছাড়াও অন্যের খাতা দেখে পরীক্ষা দেওয়ার সময় আটক হয়েছেন আরও ৩ জন। তবে জেলা প্রশাসনের নজরদারি আঁচ করতে পেরে ওয়াশরুমে যাবে বলে এর আগেই সটকে পড়েন আরো ২১ জন। গতকাল বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল পর্যন্ত নগরীর এমএ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম হলে এ মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া তাদের শারীরিক দক্ষতাও যাচাই করা হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, আটককৃতদের মধ্যে ১২ শিক্ষার্থীর হয়ে লিখিত পরীক্ষা দিয়েছেন অন্যরা। তবে মৌখিক পরীক্ষায় এসেছেন মূল পরীক্ষার্থীরা। মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সময় তারা ফটোশপ করে আইডি কার্ডে প্রক্সি দেওয়া ব্যক্তির পরিবর্তে নিজের ছবি লাগান। জালিয়াতি করেছেন এমন ইঙ্গিত পেয়ে নজরদারি বাড়ান জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। তারা দেখতে পান অনেকের মেধা ও দক্ষতায় ঘাটতি। সংশ্লিষ্ট বিষয় থেকে প্রশ্ন করা হলে সদুত্তর দিতে পরেননি পরীক্ষার্থীরা। একে একে ১২ পরীক্ষার্থী স্বীকার করেন তাদের হয়ে লিখিত পরীক্ষায় অন্যরা অংশ নিয়েছিলেন। পরে তাদের আটক করা হয়। পাশাপাশি অন্যের কাছ থেকে দেখে পরীক্ষা দেওয়ায় আরও ৩ জনকে আটক করা হয়।
আটককৃতদের মধ্যে অন্যের মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন মো. ইবরাহীম, নাইমুল ইসলাম, মুরশেদুল আলম, মো. জুনায়েদ, বিপ্লব সুশীল, মনিদীপা চৌধুরী, মোজাম্মেল হোসেন, আলী আজগর, তন্ময় দে, নন্দন দাশ ও মান্না দাশ। এছাড়া অন্যের খাতা দেখে যারা কপি করেছেন তারা হলেন প্রীতম চৌধুরী, শেখর দাশ, রহিম উদ্দিন ও আসাদুজ্জামান। এই ১৫ জনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে যারা ভালো ছাত্র তাদের সঙ্গে টাকার বিনিময়ে চুক্তি করে পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে রাজি করান।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল আহসান আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের রাজস্ব অফিস সহায়ক লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ৬ এপ্রিল। এরপর ১ জুন তাদের মৌখিক পরীক্ষার জন্য আহ্বান করা হয়। মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন ২৩৭ জন পরীক্ষার্থী। এতে ১৬ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন। সে পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় মোট ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে। তিনি বলেন, যারা আটক হয়েছেন তাদের আমরা আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছি। তারা জিজ্ঞাসাবাদ করবেন এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন।