লাশ নিতে আসেনি পরিবার

সাতজনকে বম এসো’র কাছে হস্তান্তর খেয়াং জনগোষ্ঠীর দেড়শ পরিবার গ্রাম ছেড়েছে

বান্দরবান প্রতিনিধি | রবিবার , ৯ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:১২ পূর্বাহ্ণ

বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে শুক্রবার দুই সংগঠনের গোলাগুলিতে নিহত ৮ জনের লাশ গ্রহণ করতে আসেনি পরিবার। ময়না তদন্তের পর গতকাল দুপুর পৌনে ৩টায় বম এসোসিয়েশনের কাছে সাতটি লাশ হস্তান্তর করেছে পুলিশ। হত্যার ঘটনায় রোয়াংছড়ি থানায় একটি মামলা হয়েছে। গোলাগুলির ঘটনায় পাহাড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আতঙ্ক কাটেনি রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে। গ্রাম ছেড়েছে খামতাং পাড়ার খেয়াং জনগোষ্ঠীর দেড়শ পরিবার। এদিকে হত্যার ঘটনায় রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি উপজেলায় সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে কেএনএ।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার সীমান্তবর্তী খামতাং পাড়া এলাকায় পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চীন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) সাথে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিকের গোলাগুলিতে শুক্রবার ৮ জনের মৃত্যু হয়। পরিবারের স্বজনরা লাশ গ্রহণ করতে না আসায় বম জনগোষ্ঠীর সংগঠন বম এসোসিয়েশনের কাছে সাত লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। সংগঠনের সভাপতি লালজার বম লাশগুলো গ্রহণ করে ধর্মীয় রীতি অনুসারে সৎকারের জন্য রুমায় নিয়ে যান।

নিহতদের ৭ জন বম জনগোষ্ঠীর। এরা হলেন ভানদু বম (৩৫), সাংখুম বম (৪৫), সানফির থাং বম (২২), বয়ে রেম বম (১৭), জাহিম বম (৪০), লাল লিয়ান নাং বম (৪৪) ও লালঠা জার বম (২৭)। অজ্ঞাত পরিচয় আরেকটি লাশ রোয়াংছড়ি উপজেলায় সৎকার করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম জানান, ময়না তদন্তের পর স্বজনরা উপস্থিত না থাকায় লাশগুলো বম জনগোষ্ঠীর সংগঠন বম এসোসিয়েশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা সাতটি লাশ রুমায় নিয়ে গেছে। অন্যটি রোয়াংছড়ি উপজেলায় সৎকার করা হবে। তিনি বলেন, ঘটনার পর এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।

এদিকে রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে আতঙ্ক কাটেনি। ভয়ে গ্রাম ছেড়েছে খামতাং পাড়ার খেয়াং জনগোষ্ঠীর দেড়শ পরিবার। তাদের মধ্যে রোয়াংছড়ি সদরে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে ৯০টি পরিবারের ১৭৮ জন। রুমায় আশ্রয় নিয়েছে ষাটটি পরিবারের নারীপুরুষ ও শিশু। আশ্রয় গ্রহণকারীদের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলোকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে খাবার ও পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিজিবির হাতে আটক চোরাই গরু ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা
পরবর্তী নিবন্ধদেশির সঙ্গে সোনালী মুরগি মিশিয়ে বিক্রি