লাশের পোস্টমর্টেম করতে দেরি হওয়ায় গতকাল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) মর্গের সামনে বিক্ষোভ করেছেন স্বজনরা। স্বজনদের দাবি- লাশ কাটার দায়িত্বে থাকা নিয়মিত ডোম কাজে না আসায় লাশের পোস্টমর্টেম হয়নি। দশটিরও বেশি লাশ জমে যায়। একদিন-দুদিন আগের লাশও নিয়ে যেতে পারেনি পরিবারের সদস্যরা। যার কারণে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষায় থাকা স্বজনরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা মর্গের সামনে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভের কথা স্বীকার করেছেন চমেক ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সুমন মুৎসুদ্দী। নিয়মিত ডোম কদম আলী কাজে না আসায় লাশের পোস্টমর্টেম আটকে ছিল। লাশও অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি ছিল। বিলম্বের কারণে লাশের স্বজনরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে দুুপুরের আগেই সমীরণ নামে আরেক কর্মচারী লাশ কাটার কাজ শুরু করেন। আর সমস্যা হয়নি।
চমেক সূত্রে জানা গেছে, আগে সুধাংশু নামে সরকারি একজন কর্মচারী মর্গে ডোমের কাজ করতেন। তিনি বছর দেড়েক আগে অবসরে যান। এরপর থেকে কদম আলী লাশ কাটার কাজ করতেন। তবে তিনি সরকারি কর্মচারী নন। বেসরকারি ভাবে মাসে থোক বেতনে এ কাজ করে আসছেন কদম আলী। তার বেতন ৫ হাজার টাকার বেশি নয়। এই সামান্য বেতনে সংসার চালানো সম্ভবপর নয়। যার কারণে কদম আলী আর কাজে আসছেন না বলে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে। যদিও কদম আলীর কাজে না আসার কারণ সম্পর্কে অবহিত নন বলে জানিয়েছেন চমেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. সাহেনা আক্তার। তিনি বলেন, রোববার সকাল থেকে সে কাজে আসেনি। মোবাইলও নাকি বন্ধ। কি কারণে কাজে আসছে না, তার সাথে কথা হলে সেটি জানা যেত। যদিও বেতন যে খুব কম, সেটি অবগত আছেন বলে জানান অধ্যক্ষ।
এদিকে, কদম আলীর সাথে সহকারী হিসেবে আরো দুজন রয়েছেন বলে দাবি করেছেন ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সুমন মুৎসুদ্দী। কদম আলী না আসায় তাদের একজন লাশ কাটার কাজ করেছেন বলে জানান তিনি।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চমেক মর্গে সরকারি ভাবে ডোমের পদই নেই। তবে সরকারি অন্যান্য কর্মচারীদের এখানে দায়িত্ব দেয়া হয়। অনেকে ডোমের এই কাজ করতে আগ্রহীও না। সরকারি ভাবে এই পদে নিয়োগ বা জনবল না থাকায় কদম আলীকে
বেসরকারি ভাবে থোক বেতন দিয়ে রাখা হয়েছে। যদিও কদম আলীর সাথে সহযোগী হিসেবে সরকারি দুজন কর্মচারী রয়েছে বলে দাবি ফরেনসিক বিভাগের। কদম আলীর অনুপস্থিতিতে গতকাল সমীরন নামে অপর এক কর্মচারী লাশ কাটার এ কাজ করেছেন বলে জানায় ফরেনসিক বিভাগ।