চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের লাশঘরে পাহারাদারের কাজে নিয়োজিত মো. সেলিম (৪৮) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল দুপুরে হাসপাতাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ। তিনি আজাদীকে বলেন, গত বছরের ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিলে হাসপাতালের লাশঘরে আনা এক কিশোরী ও অপর এক নারী লাশের সাথে বিকৃত যৌনাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সেলিম তার অপরাধ স্বীকার করেছে। তার বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান সিআইডির এ কর্মকর্তা। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের পাশেই পুলিশ ফাঁড়ি। আর পুলিশ ফাঁড়ির সাথে লাগোয়া হাসপাতালের লাশঘর। ‘পুলিশ কেইস’ বা অস্বাভাবিক ও অপমৃত্যুর ক্ষেত্রে হাসপাতালের পক্ষ থেকে লাশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়ে থাকে। পুলিশ এসে লাশটি বুঝে নেয়। তবে পুলিশ বুঝে নেয়ার আগ পর্যন্ত (ক্ষেত্র বিশেষে বুঝে নেয়ার আগে-পরে) এ ধরণের লাশের ঠিকানা হয় হাসপাতালের লাশঘরে। সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট লাশ পরবর্তীতে পোস্ট মর্টেমের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। মূলত অপমৃত্যু বা অস্বাভাবিক মৃত্যু জনিত লাশগুলো রাখার জন্যই হাসপাতালের লাশঘরটি ব্যবহার হয়ে থাকে। এই লাশঘরে পাহারাদার হিসেবে কাজ করতেন সেলিম। যদিও সেলিম সরকারি বা বেসরকারি কোন পর্যায়ের স্টাফ নয় বলে দাবি করেছে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জানতে চাইলে চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান আজাদীকে বলেন, সেলিম আমাদের সরকারি স্টাফ নয়। এমনকি আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ করা কর্মচারীও নয়। সে পুরোপুরি বহিরাগত। এমনিতে স্টাফদের সাথে থাকতো বলে শুনেছি। তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি পুলিশের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি। জানা যায়, সেলিমের বিকৃত মস্তিস্কের এ ঘটনার বিষয়টি তখন প্রকাশ পায়নি। পোস্ট মর্টেমে দুই মরদেহের সোয়াবে একই ব্যক্তির শুক্রানু পাওয়ায় বিষয়টি তদন্তে নামে সিআইডি। দীর্ঘ তদন্তে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এ ঘটনায় জড়িত হিসেবে সেলিমকে শনাক্ত করেন সিআইডির কর্মকর্তারা। বিশেষ কৌশলে সেলিমকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ।