ফুল সবারই ভালো লাগে। আর যদি ফুল বাগানের পাশ ঘেঁষে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়া যায়, তাহলে তো আর কথাই নেই। ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলাচল করা যাত্রীরা এখন প্রতিনিয়ত ফুলের সমারোহে মনোমুগ্ধকর পরিবেশে যাতায়াত করছেন। লাল, নীল হলুদ, বেগুনি আবার কোথাও সাদা ফুলে বর্ণিল সাজে সেজেছে ব্যস্ততম ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড অংশ। ছোট, বড় হরেক রকমের ফুলে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড অংশের আইল্যান্ড যেন একটি ফুলের বাগানে পরিণত হয়েছে। তবে পরিচর্যার অভাবে অনেক স্থানের গাছগুলো শুকিয়ে মারাও যাচ্ছে। মহাসড়কের আইল্যান্ডে ফুলের এমন সমারোহ, সৌন্দর্য ধরে রাখতে পরিচর্যার বিকল্প নেই।
সরেজমিনে দেখা যায়, মহাসড়কের সৌন্দর্য প্রসারে আইল্যান্ডে লাগানো এ ফুলের গাছগুলোতে ফোটা ফুল মুহূর্তেই মন কাড়ছে দূর–দূরান্তের যাত্রীর পাশাপাশি স্থানীয় পথচারীদের। সীতাকুণ্ড পৌর সদর, পন্থিছিলা, বাড়বকুণ্ড, বাঁশবাড়িয়া, ভাটিয়ারী, ফৌজদারহাট, সুলতানা মন্দির এলাকায় ফুলের বাগানের মতো হয়ে আছে মহাসড়কের আইল্যান্ড। দুদিক থেকেই দেখতে খুবই সুন্দর লাগে। ফুলের মধ্যে বিভিন্ন রঙের কৃষ্ণচূড়া, হৈমন্তি, কুর্চি, টগর, রাধাচূড়া, কাঞ্চন ও সোনালু অন্যতম। গাছগুলো ৫–৬ ফুট মতো বড় হয়েছে। স্থানীয়রা বলেন, ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের আইল্যান্ডের ফুলগাছগুলো দেখতে সুন্দর ও অপরূপ। তবে দেখা গেছে কিছু জায়গায় ফুলগাছ ছাড়াও আইল্যান্ডে কদম ও কড়ই জাতীয় কিছু গাছ লাগানো হয়েছে, যা বড় হলে ভবিষ্যতে বৈরী আবহাওয়ায়, প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা ও দুর্ঘটনার পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম সিটি গেট থেকে শুরু করে মহাসড়কের দাউদকান্দি পর্যন্ত ১৪৩ কিলোমিটার সড়কে রয়েছে ১৩ প্রজাতির প্রায় এক লাখ গাছের বাহারি ফুলের বাগান। কিছু জায়গায় আছে বিভিন্ন প্রজাতির ফলগাছও। ২০১৭ সাল থেকে সড়কদ্বীপে এই পরিকল্পিত বাগান তৈরি করা হয়েছে। হরেক রকমের ফুলগাছ ছাড়াও জলপাই, অর্জুন, কাঁঠাল, মেহগনি, শিশু, আকাশমণি, চালতা, নিম, একাশিয়া, হরীতকীসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফল ও ঔষধি গাছও রয়েছে এ মহাসড়কের ডিভাইডারে। এ বাগানের পরিচর্যায় ৩৫ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন।
সীতাকুণ্ড উপসড়ক বিভাগের উপ–সহকারী প্রকৌশলী আশিক কাদির বলেন, চট্টগ্রাম সিটি গেট থেকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পর্যন্ত বাহারি ৪২ হাজার ফুল ও ফলগাছ রয়েছে। এ ছাড়া দাউদকান্দি থেকে সুয়াগাজী পর্যন্ত রয়েছে ৫৪ হাজার গাছ। মহাসড়কে ফুল ও সবুজের সমারোহে নির্মল প্রকৃতির স্বাদ নিতে পারছে মানুষ।