‘লাল শাড়িতে তোকে দেখা হলো না, ওপারে ভালো থাকিস বোন।’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই পোস্ট দিয়েছেন রিমঝিম বড়ুয়ার এক স্বজন। শুধু এই স্বজন নন, রিমঝিমের অনেক বন্ধু ও স্বজনও তার জন্য শোক জানিয়ে আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন।
৬ জুলাই রিমঝিম বড়ুয়ার বিয়ের দিন নির্ধারিত হয়। চট্টগ্রামের পটিয়ার ভান্ডাগাঁওয়ের যুবক সানি বড়ুয়ার সাথে নতুন জীবনের স্বপ্ন বেঁধেছিলেন এই তরুণী। কক্সবাজারের রামুর নিজ বাড়ি থেকে বিয়ের কেনাকাটা করতে যাচ্ছিলেন চট্টগ্রাম। কিন্তু বিধাতার কী ইচ্ছা! স্বপ্ন ছুঁয়ে দেখার ভাগ্য হলো না তার। মুহূর্তেই নিভে গেল স্বপ্ন বোনা প্রাণ। সব স্বপ্ন ছিন্ন করে পরপারে যাত্রা করলেন তিনি।
গতকাল সকালে চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের রামু রশিদনগর এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান রামুর পূর্ব রাজারকূল গ্রামের হিমাংসু বড়ুয়ার মেয়ে কলেজছাত্রী রিমঝিম বড়ুয়া (২২)। এ ঘটনায় পিতা–পুত্র নিহত হয়েছেন।
নিহত রিমঝিম বড়ুয়ার মামাতো ভাই স্থানীয় ইউপি সদস্য লিটন বড়ুয়া জানান, নিহত রিঝঝিম বড়ুয়া কক্সবাজার সরকারি কলেজের ডিগ্রি শেষ বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। পাশাপাশি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একটি এনজিওতে চাকরি করতেন। সম্প্রতি পারিবারিকভাবে তার বিয়ে ঠিক হয়। বর চট্টগ্রামের পটিয়ার ভান্ডারগাঁওয়ের ব্যবসায়ী যুবক সানি বড়ুয়া। আগামী ৬ জুলাই বিয়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। তিনি জানান, গতকাল দুই পরিবারের সদস্যরা মিলে চট্টগ্রাম থেকে বিয়ের কেনাকাটা করার কথা ছিল। সে অনুযায়ী সকালে পুরবী পরিবহনের একটি বাসে একাই রামু থেকে চট্টগ্রামের যাচ্ছিল রিমঝিম। তার বিবাহিত বোন ও এক ছোট বোন চট্টগ্রামে থাকে। তাদের সাথে নিয়ে বরের পরিবারের লোকজনসহ কেনাকাটা করার কথা ছিল। ইউপি সদস্য লিটন বড়ুয়া বলেন, এক ভাই, তিন বোনের মধ্যে তৃতীয় ছিল রিমঝিম। দিনমজুর বাবার সংসারে কিছুটা স্বচ্ছলতা এনে দিতে পড়ালেখার পাশাপাশি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরি নিয়েছিল। চাকরি, পরিবার এবং নতুন জীবনের স্বপ্ন নিয়ে খুশি ছিল সে। কিন্তু ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! মুহূর্তে নিভে গেল তার জীবন প্রদীপ। তার মর্মান্তিক মৃত্যুতে স্বজন, বন্ধু–বান্ধবরা শোকে বিহ্বল।