লাভ লেনে ওয়াসার গভীর নলকূপের পানিতে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া

কমপক্ষে ১৫ মিনিট ফুটিয়ে পান করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

কমপক্ষে ১৫ মিনিট ফুটিয়ে পান করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের | সোমবার , ২৫ জুলাই, ২০২২ at ৩:৫৯ পূর্বাহ্ণ

x
উচ্চ আদালতের নির্দেশে চট্টগ্রাম ওয়াসার ২৪ পয়েন্টের পানির নমুনা পরীক্ষায় লাভ লেনের একটি গভীর নলকূপের পানিতে ‘কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া’র উপস্থিতি ধরা পড়েছে। রোগ তত্ত্ব বিশেষজ্ঞ ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা জানান, কলিফর্ম মিশ্রিত পানি পানে ডায়রিয়া, আমাশয়, রক্ত আমাশয়, কলেরা, টাইফয়েড ছাড়াও জন্ডিস রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
উল্লেখ্য, গত ৬ মার্চ উচ্চ আদালতে এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম ওয়াসার পানি পরীক্ষা করতে চার সদস্যের কমিটি গঠনের আদেশ দেন উচ্চ আদালত। এই কমিটিকে এক মাসের মধ্যে পানি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। উচ্চ আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৩ জুন থেকে ওয়াসার ২৪ পয়েন্টের নমুনা নেওয়া শুরু করে কমিটি। এই পানি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। নগরীর লাভ লেনের চট্টগ্রাম ওয়াসার গভীর নলকূপের পানি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে পরীক্ষা করা হলে কলিফর্মের উপস্থিতি পাওয়া যায় বলে কমিটির এক সদস্য আজাদীকে নিশ্চিত করেছেন।
তবে গভীর নলকূপ ছাড়া চট্টগ্রাম ওয়াসা যে সব সারফেস ওয়াটার (ভূমির উপরিভাগের পানি বিভিন্ন প্রকল্পের) নগরবাসীর মধ্যে সরবরাহ করছে সেগুলোতে কোনো ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়নি।
গতকাল রোববার বিকেলে পানির নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনটি অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে পাঠানো হয় বলে জানা গেছে।
এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম আজাদীকে জানান, হাই কোর্ট ওয়াসার পানির নমুনা সংগ্রহের আদেশ দিয়েছিলেন সেটা জানি। পানির নমুনা টেস্টের পর রেজাল্ট কি এসেছে সেটা জানি না। কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া পাওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। কারণ ওয়াসার পানিতে ব্যাকটেরিয়া পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
আমরা প্রতিনিয়ত ওয়াসার পানি টেস্ট করে থাকি। এটা আমাদের রুটিন ওয়ার্ক। সরবরাহকৃত পানি আমাদের নিজস্ব ল্যাবে পরীক্ষা করে তবেই গ্রাহকদের মাঝে সরবরাহ করা হয়। বর্তমানে আমরা যে পানি সরবরাহ করি তা খুবই উন্নতমানের।
চট্টগ্রাম ওয়াসার অপর এক কর্মকর্তা জানান,
পানি সরবরাহ লাইনে অনেক সময় ফুটো হয়ে যাওয়ায় ড্রেনের ময়লা পানি ঢুকে ওয়াসার পানিকে দূষিত করে ফেলে। এ কারণে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি থাকতে পারে।
এই ব্যাপারে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. সুমন বড়ুয়া আজাদীকে জানান, পানিতে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া সহনীয় মাত্রার বেশি হলেই মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। কলিফর্ম মিশ্রিত পানি পানে ডায়রিয়া, আমাশয়, রক্ত আমাশয়, কলেরা, টাইফয়েড ছাড়াও জন্ডিস রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এ ধরণের ব্যাকটেরিয়াযুক্ত পানি পান করতে হলে কমপক্ষে ১৫ মিনিট ফুটিয়ে নিতে হয়।
লাভ লেনের এ গভীর নলকূপ থেকে দিনে ১৮ লাখ লিটার পানি উৎপাদন করে গ্রাহকদের কাছে সরবরাহ করা হয় বলে জানিয়েছেন ওয়াসার মড-৪-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আজিজুর রহমান।
জানা গেছে, লাভ লেনের এই গভীর নলকূপের পানি নগরীর লাভ লেন, মোমিন রোড, রাজাপুকুর লেন, বৌদ্ধ মন্দিরসংলগ্ন এলাকা, বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের বাংলো এলাকায় সরবরাহ করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসভায় নাম না বলায় কথা কাটাকাটি
পরবর্তী নিবন্ধজমিয়তুল ফালায় ১০ দিনের শাহাদাতে কারবালা মাহফিল শুরু হচ্ছে ৩১ জুলাই