এখন মনে পড়ছে ছোট বেলার কথা, প্রতি এলাকায় ছিলো রেশনশপ চট্টগ্রামের ভাষায় অনেকেই বলতো কন্ট্রোল দোকান। তখন প্রতি সপ্তাহে কার্ডের মাধ্যমে রেশন শপ থেকে চাউল, ডাল, গম, চিনি, সোয়াবিন তৈল আনতে যেতাম এমনকি রমজান এবং দুই ঈদে ঘাওয়া ঘি ও ডালডাও দিতো। এবং তার আমদানীকারক ছিলো সরকার নিয়ন্ত্রিত টিসিবি। এরপর আস্তে আস্তে বাজার ব্যবস্থার পরিবর্তন এবং সাধারণ আমদানিকারক বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং দ্রব্যের মান নিয়ন্ত্রণ না করায় রেশন শপগুলো বন্ধ হয়ে গেলো, মাঝখানে কসকর নামক ন্যায্য মূল্যের দোকানও ছিলো কিছুদিন। এর সবকিছুই ছিলো মধ্যবিত্তের চাহিদা মিটাতে এবং বাজারের দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ রাখতে। যারা মধ্যবিত্ত ছিলো তাদের রেশনের দ্রব্য নিতে কোনোরূপ সংকোচ বা দ্বিধা ছিলোনা, কারণ সেখানে রাস্তায় লাইন ধরে দাঁড়িয়ে বা হুড়োহুড়ি করে নিতে হতোনা।
আজ দেশ উন্নত হচ্ছে কিন্তু মধ্যবিত্তের সেই নুন আনতে পান্তা ফুরায় এমন অবস্থা কিন্তু অনেকটা আগের মতই আছে। কোনো বাজেট নিয়ে চলা খুবই দুষ্কর। বাজারে নেই স্থিতিশীলতা, অসাধু ব্যবসায়ী আর সিণ্ডিকেট এর দৌরাত্ম্যে নাভিশ্বাস উঠছে। সরকারও এদের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেনা। এর কারণও রয়েছে ব্যবসায়ী হয়ে গেছে রাজনীতিবিদ আর রাজনীতিবিদ হয়ে যাচ্ছে ব্যবসায়ী কার লাগাম টানবে সরকার।
বাংলাদেশ গরীব রাষ্ট্র থেকে এখন উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার পথে, বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় জিডিপি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে – না এটি সরকারি দলের কোনো বুলি নয়, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন শর্ত পূরণ করে বাংলাদেশ আজ এই অবস্থানে, আর তার অবদান হচ্ছে জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরলস পরিশ্রমের কারণে। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ী আর সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দমন করতে না পারলে জনগণ সরকারকেই দোষারোপ করবে। তাই শুধু গরিব জনগণের জন্য নয়, সামরিক বাহিনীর মত সকল জনগণের জন্য এই মুহুর্তে দরকার রেশনশপ প্রথার প্রবর্তন করা। হয়তো আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের কারণে সরকারকে অনেক ভর্তুকি দিতে হবে কিন্তু সেটা হবে সাময়িক। তাই ট্যাক্স প্রত্যাহার করে অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের সুযোগ না দিয়ে বরং তাদের শায়েস্তা করতে এবং দ্রব্যমূল্যের বাজার স্থিতিশীল করতে এখন রেশন কার্ড প্রথা চালু করা হউক।