যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের এক অভিজাত এলাকায় দ্রুত বাড়তে থাকা একটি দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। এতে ঘরবাড়ি ধ্বংস হওয়ার পাশাপাশি ট্র্যাফিক জ্যাম তৈরি হয়েছে। এলাকাটির ৩০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দাবানলের কারণে সৃষ্টি হওয়া বিশাল ধোঁয়ার কুণ্ডুলি মেট্রোপলিটন শহরটির অধিকাংশ এলাকা ছেয়ে ফেলেছে। খবর বিডিনিউজের।
কর্মকর্তারা জানান, উপকূলীয় সান্তা মোনিকা ও মালিবু এলাকার মাঝে অবস্থিত প্যাসিফিক প্যারাডাইস এলাকার অন্তত ২৯২১ একর পুড়ে গেছে। টানা শুষ্ক আবহাওয়ার মধ্যে জোরালো বাতাস বইতে শুরু করার পরই দাবানলের সতর্কতা জারি করেছিলে কর্তৃপক্ষ। এরপর দাবানল শুরু হওয়ার পর রাতে বাতাসের গতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আগুন আরও ছড়িয়ে পড়ে। আগুন আরও নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে এমন সম্ভাবনার মুখে সান্তা মোনিকার কর্তৃপক্ষ এলাকাটির উত্তর প্রান্ত থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, টোপাঙ্গা ক্যানিয়ন থেকে পালিয়ে আসার সময় বহু বাড়ি জ্বলতে দেখেছেন তারা, তাপ এত বেশি ছিল যে তাদের গাড়ি প্রায় পুড়ে যাচ্ছিল। আগুন সেখান থেকে ছড়িয়ে প্রশান্ত মহাসাগরের তীর পর্যন্ত চলে গেছে। লস অ্যাঞ্জেলেসের দমকল বাহিনীর প্রধান ক্রিস্টিন ক্রাউলি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এখনও পর্যন্ত কেউ আহত হয়নি, এতে আশ্বস্তবোধ করছি আমরা। তিনি জানান, আরও ১০ হাজার বাড়ির ২৫ হাজারেরও বেশি বাসিন্দা হুমকির মুখে আছেন।
টেলিভিশনের ছবিগুলোতে দেখা গেছে, ঘরবাড়ি আগুন পুড়ছে আর জরুরি পরিষেবার গাড়িগুলোকে পথ করে দেওয়ার জন্য বুলডোজার দিয়ে রাস্তায় পড়ে থাকা পরিত্যক্ত গাড়িগুলোকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আকাশযানে থাকা দমকল কর্মীরা সাগর থেকে পানি এনে নিকটবর্তী আগুনের শিখাগুলোর ওপর ফেলছে। লস অ্যাঞ্জেলেসে সূর্য ডোবার পর কমলা রঙের আগুনের শিখায় টোপাঙ্গা ক্যানিয়নের নিকটবর্তী পাহাড়রগুলো আলোকিত হয়ে ওঠে। দাবানল শুরু হওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবা মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির অধিকাংশ এলাকায় চরম দাবানল পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছিল। ওই এলাকাগুলোর ওপর দিয়ে বাতাস দমকা হাওয়া আকারে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছিল তারা।