ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারে লবণাক্ত পানি ঢুকে বাঁশখালীর উপকূলীয় অঞ্চলে কয়েকশ কৃষকের ৫শ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে। তলিয়ে গেছে অনেক মাছের প্রজেক্ট। উপজেলার শেখেরখীল, ছনুয়া, পুঁইছড়ি, পশ্চিম চাম্বল, গন্ডামারা, শীলকূপের পশ্চিমাংশ, সরল, কাথরিয়া, বাহারছড়া, খানখানাবাদ, সাধনপুর পুকুরিয়া সহ উপকূলীয় অঞ্চলে বেড়িবাঁধ ভেঙে সমুদ্রের লবণাক্ত পানি ধানি জমিতে ঢুকে পড়ে। অধিকাংশ স্থানে ক্ষেতের আধাপাকা আমন ধান লবণাক্ত পানিতে ঝলসে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে বাঁশখালীতে বোরো ধানের চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬ হাজার হেক্টর। ১৫ হাজার ৮শ ৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে প্রায় ৮শ হেক্টর ধানি জমি সমুদ্রের লবণাক্ত পানিতে প্লাবিত হয়। যার মধ্যে আধাপাকা ৩শত হেক্টরের অধিক ধানক্ষেত একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। এ ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে বাঁশখালী উপজেলা কৃষি অফিস। উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে কোটি টাকা মূল্যের মাছের ঘের ও সবজি ক্ষেতও তলিয়ে গেছে। খানখানাবাদ, বাহারছড়া, সরল, গন্ডামারা, শীলকূপের জালিয়াখালী জলকদরখাল সংলগ্ন বেড়িবাঁধ, বাংলাবাজার হয়ে শেখেরখীল ফাঁড়িরমুখ, ছনুয়াসহ উপকূলীয় অঞ্চলে সমুদ্রের লবণাক্ত পানি ঢুকেছে।
কাথরিয়া হালিয়াপাড়া এলাকার আহমদুর রহমানের পুত্র আবদুল করিম বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে আমার ২০ কানি জমির ধান, সাড়ে ৪ কানি টমেটো ক্ষেত এবং মাছের প্রজেক্টে প্রায় ৫লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। লবণ পানি ডুকে তরমুজ এবং বাকি ক্ষেতও নষ্ট হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবু সালেক বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে প্রায় ৮শ হেক্টর জমি প্লাবিত হয়েছে। সম্পূর্ণ ক্ষতি এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০০ হেক্টর জমি। এর পরিমাণ আরো বাড়তে পারে। সহায়তার জন্য অধিদপ্তরে চিঠি লেখা হয়েছে। ব্রি থেকে লবণ সহিষ্ণু জাতের ধানের বীজ চাওয়া হয়েছে। যেন বোরো মৌসুমে আবাদ করা যায়। তবে গতকাল ব্রি’র বিজ্ঞানীদের একটি টিম এলাকা ভিজিট করেছেন। মাটি, পানি পরীক্ষা করে তাতে লবণের মাত্রা অনেক বেশি পাওয়া গেছে। সামনে ভারী বৃষ্টি এবং মিঠা পানির সেচ না দিতে পারলে বোরো আবাদও বিঘ্নিত হতে পারে।’ সে জন্য টেকসই বাঁধ নির্মাণের কোনো বিকল্প নাই বলে জানান তিনি।