ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা থেকে উৎখাত হওয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের আরেকটি ফ্ল্যাটের সন্ধান মিলেছে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে। তার ছোট বোন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তি এই ফ্ল্যাটটি ‘টিনেজ’ বয়সে উপহার পেয়েছিলেন হাসিনার এক ঘনিষ্ঠজন থেকে, তখন তিনি ফ্ল্যাটটি তার বোন টিউলিপকে দিয়ে দেন।
ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপকে নিয়ে যুক্তরাজ্যের দ্য সানডে টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। গত ৪ জানুয়ারি প্রতিবেদনটি ছাপা হয়। যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের (ট্রেজারি) অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টারের (ইকোনমিক সেক্রেটারি) দায়িত্ব পালন করছেন টিউলিপ। মন্ত্রী হিসেবে যুক্তরাজ্যের আর্থিক খাতের অপরাধ–দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বও পালন করেন তিনি। খবর বাংলানিউজের।
দ্য সানডে টাইমস প্রতিবেদনে জানিয়েছে, উত্তর লন্ডনের হ্যাম্পস্টেডের ফিঞ্চলে রোডের ওই ফ্ল্যাটটি ২০০৯ সালে টিউলিপের বোন রূপন্তিকে দেন বাংলাদেশের মঈন গণি নামে এক আইনজীবী। তিনি শেখ হাসিনার সরকারের মামলায় লড়েছিলেন।
যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধনসংক্রান্ত নথিপত্রে বলা হয়েছে, অর্থ বা আর্থিকমূল্য রয়েছে, এমন কিছু ছাড়াই ফ্ল্যাটটি আজমিনাকে দেওয়া হয়। যে সময় হস্তান্তর প্রক্রিয়া চলে, সে সময় আজমিনার বয়স ছিল ১৮। তিনি অঙফোর্ডে পড়াশোনা শুরু করতে যাচ্ছিলেন। পরে বোনের কাছ থেকে পাওয়া টিউলিপ ফ্ল্যাটটিতে বসবাস করতেন। কিন্তু কোন সময় তিনি এটি ব্যবহার করতেন তা স্পষ্ট নয়। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে ওয়ার্কিং মেনস কলেজের পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পর তিনি নথিতে তার ঠিকানা হিসেবে ফ্ল্যাটটি তালিকাভুক্ত করেন।
২০১৪ সালের জানুয়ারিতে ক্যামডেন আর্টস সেন্টারের ট্রাস্টি হন টিউলিপ। সে সময় এবং একই বছর হ্যাম্পস্টেড ওয়েলস অ্যান্ড ক্যাম্পডেন ট্রাস্টের ট্রাস্টি হওয়ার পর একই ঠিকানা ব্যবহার করেন টিউলিপ। তার স্বামী ক্রিশ্চিয়ান পার্সি ২০১৬ সালের মে মাস পর্যন্ত ফিঞ্চলে রোডের ফ্ল্যাটটি ঠিকানা হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিলেন। তখন টিউলিপ হ্যাম্পস্টেড ও কিলবার্নের লেবার এমপি ছিলেন। পরে ফ্ল্যাটটি ২০২১ সালে ৬ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে বিক্রি করে দেন রূপন্তি। ওই সময় সেই ফ্ল্যাটের মূল মালিক আইনজীবী গণি আন্তর্জাতিক পরিসরে হাসিনার সরকারের পক্ষে ভূমিকা রাখছিলেন। এমনকি ২০২১ সালে হাসিনার সরকার তাকে বিশ্ব ব্যাংকের প্যানেলে মনোনীত করে।
এর আগে যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধনসংক্রান্ত নথির বরাতে গত ৩ জানুয়ারি ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৪ সালে লন্ডনের কিংস ক্রসে এলাকার কাছে কোনোরকম অর্থ না দিয়েই ফ্ল্যাট পেয়েছিলেন টিউলিপ। ২০০৪ সালে তিনি সেটি বিনামূল্যে পান আবদুল মোতালিফ নামে একজন আবাসন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে।
প্রতিবেদনে আবদুল মোতালিফকে শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের সহযোগী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।