মিরপুরে অনেক কিছুই হতে পারতো। অনেক মাইলফলকের ম্যাচটি জিতে বাংলাদেশও জিততে পারতো অনেক কিছুই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই জেতা হলোনা। উল্টো ইংল্যান্ডের কাছে লজ্জার হারে এক ম্যাচ আগেই সিরিজ জিতে নিল ইংলিশরা। নিজেদের মাঠে ইংলিশদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের লক্ষ্য ছিল টাইগারদের। সেটা আর হয়ে উঠলনা। উল্টো ৭ বছর পর দেশের মাঠে সিরিজ হারতে হলো সেই ইংল্যান্ডের কাছে। ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের কাছেই দেশের
মাঠে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ। এরপর প্রায় ৭ বছরে টানা ৭ সিরিজ জিতে আবার হারতে হলো সেই ইংলিশদের কাছেই। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের শততম ওয়ানডে ছিল গতকাল।
শুধু তাই নয় তিন সংস্করণ মিলিয়ে এই মাঠে ছিল ২০০তম ম্যাচ ছিল বাংলাদেশ–ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচটি। কিন্তু সে সব কোন কাজে আসলনা। হারের লজ্জা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো তামিমের দলকে। ফলে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করে নিল ইংল্যান্ড। এখন চট্টগ্রামের ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য
হোয়াইট ওয়াশ এড়ানোর মিশন। ছন্নছাড়া বোলিং আর হতশ্রী ব্যাটিং লজ্জা উপহার দিয়েছে স্বাগতিকদের। আগের ম্যাচে বাংলাদেশের বোলাররা খানিকটা পরীক্ষা নিলেও একজন ডেভিড মালান হারিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশকে। আর গতকাল জেসন রয়ের ব্যাটিং রানের পাহাড়ে তোলে ইংলিশদের। পরে স্যাম
কারানের গতি আর আদিল রশিদের ঘুর্নিতে কুপোকাত বাংলাদেশ। ১৩২ রানের বিশাল জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করল ইংল্যান্ড। টস হেরে ব্যাট করতে নামা ইংল্যান্ড শুরুটা ভাল করতে পারেনি। তবে একজন জেসন রয় টেনে নিয়ে গেছেন দলকে। ২৫ রানে ফিল সল্টকে হারানোর পর ডেভিড মালান এবং জেমস
ভিঞ্চও ফিরেন দ্রুত। এই তিন জনের মধ্যে মালান করেন সর্বোচ্চ ১১ রান। চতুর্থ উইকেটে জস বাটলারের সাথে জুটি গড়ে ১০৯ রান যোগ করেন জেসন রয়। ওপেনার রয়কে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গেন সাকিব আল হাসান। ১২৪ বলে ১৮টি চার এবং একটি ছক্কায় ১৩২ রান করে ফিরেন রয়। ততক্ষণে তার দল পৌছে
গেছে ২০৫ রানে। এরপর মঈন আলির সাথে ৫২ রান যোগ করেন জস বাটলার। ৬৪ বলে ৭৬ রান করে মিরাজের হাতে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফিরেন বাটলার। এরপর মঈন আলি এবং স্যাম কারান মিলে দলকে পৌছে দেন রানের পাহাড়ে। ইংলিশরা সংগ্রহ করে ৩২৬ রান। শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ৫ বছর আর ১৫
ম্যাচ পর কোন দল তিনশ রান করতে পারল। সবশেষ ২০১৫ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩২৯ রান করেছিল বাংলাদেশ। মঈন আলি ৩৫ বলে ৪২ আর কারান ১৯ বলে করেন ৩৩ রান। বাংলাদেশের তাসকিন ৩ উইকেট নিলেও রান দিয়েছেন ৬৬। আর মিরাজ ২ উইকেট নিয়েছেন ৭২ রানে। রানের পাহাড়
ডিঙাতে যেভাবে শুরু করতে হয় বাংলাদেশের সুচনাটা ঠিক তার বিপরীতমুখী। ইনিংসের প্রথম ওভারেই নেই লিটন এবং আগের ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি করা শান্ত। অবিবেচকের মত মুশফিক যখন ফিরেন তখন বাংলাদেশের স্কোর ৯ রানে ৩ উইকেট। বন্ধু থেকে শত্রুতে পরিণত হওয়া সাকিব এবং তামিমের যুদ্ধ শুরু ঠিক
তখন থেকেই। কিন্তু পারলেননা তারা দলকে লম্বা ঘোড়ার রেসে পরিনত করতে। ৭৯ রান এক সঙ্গে ছিলেন দুজন। মইন আলিকে উইকেট উপহার দিয়ে ফিরেন তামিম। থামে দুজনের ১১১ বলে ৭৯ রানের পথ চলা। তবে সাকিব চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তিনি একজনে আর কিইবা করবেন। ক্যারিয়ারের ৫১ তম হাফ
সেঞ্চুরিটাকে বড় করতে পারেননি তিনিও। আদিল রশিদের বলে কারানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন সাকিব ৬৯ বলে ৫৮ রান করে। আফিফ–মাহমুদউল্লাহর ৩৮ রানের জুটিটা হয়তো ছিল হারের ব্যবধান কমানোর। তখন যে ম্যাচের আধিপত্য প্রতিষ্টা করার মত অবস্থায় ছিলনা বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ ফিরেন ৪৯
বলে ৩২ রান করে। ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েও আফিফ ফিরেন ৩৩ বলে ২৩ রান করে। ব্যর্থ মিরাজ থামেন ১৪ বলে ৭ রান করে। শেষ দিকে তাসকিনের ২১ বলে ২১ রান দর্শকদের হয়তো কিছুটা আনন্দ দিয়েছে। পুরো ৫০ ওভারও খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। দুইশ রানও পার করতে পারেনি। থেমেছে ১৯৪ রানে। ইংলিশদের পেস এবং স্পিন কম্বিনেশনে স্যাম কারান এবং আদিল রশিদ নিয়েছেন ৪টি করে উইকেট।