লজ্জার পরাজয়ের শঙ্কায় বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোমবার , ২৫ মার্চ, ২০২৪ at ১০:০৫ পূর্বাহ্ণ

টেস্ট ক্রিকেটে আরো একটি লজ্জাষ্কর পরাজয়ের সামনে বাংলাদেশ। এই পরাজয়ের কেবল আনুষ্ঠানিকতটাই বাকি। আজ সিলেট টেস্টের চতুর্থ দিনের শুরুতেই লজ্জার হারের মালা পড়বে বাংলাদেশ। কারণ ৫১১ রানের বিশাল রানের পাহাড়ের পেছনে ছুটতে গিয়ে ৪৭ রান তুলতে ৫ উইকেট নেই বাংলাদেশের। এখনো ৪৬৪ রান দরকার কিনা সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা। সিলেট টেস্টের প্রথম ইনিংসেও ব্যাটিং ব্যর্থতায় পিছিয়ে থাকতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ যেন ব্যাটিংটাই ভুলে গেল। যার পরিণতি লজ্জার হারের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। শ্রীলংকার প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছিলেন দুই ব্যাটার ব্যাটার ধনঞ্জয়া ডি সিলভা এবং কামিন্দু মেন্ডিস। দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরি করলেন এ দুজন। ফলে বাংলাদেশের সামনে দাঁড়ায় রানের পাহাড়। যে পাহাড়ে চড়তে গিয়ে শুরুতেই কুপোকাত স্বাগতিকরা।

৫১১ রনের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই ফিরেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। দ্বিতীয় ওভারে ফিরেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ৩৬ রানের মাথায় ফিরেন শুরু থেকে ভাল খেলতে থাকা জাকির হাসান। তিনি ফিরেছেন ২২ বলে ১৯ রান করে। শাহাদাত হোসেন দিপু এবং লিটন দাশ ফিরেছেন ফার্নান্ডোর একই ওভারে রানের খাতা খোলার আগেই। ফলে ৩৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুকতে থাকে বাংলাদেশ। যা দিন শেষে দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ৪৭। মোমিনুল হকের সাথে আছেন প্রথম ইনিংসের সেরা ব্যাটার তাইজুল। এখন দেখার বিষয় আর কতরান নিজেদের ইনিংসে যোগ করতে পারে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ৯২ রানে এগিয়ে থাকা শ্রীলংকা দ্বিতীয় ইনিংসে ১১০.৪ ওভারে ৪১৮ রানে অলআউট হয়। একই টেস্টে দুই ইনিংসে জোড়া সেঞ্চুরির রেকর্ড উপহার দিলেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটার ধনঞ্জয়া ডি সিলভা এবং কামিন্দু মেন্ডিস। ১০৮ রানে করে আউট হন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। তবে কামিন্দু মেন্ডিস শেষ পর্যন্ত খেলে গেছেন। শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার আগে ১৬৪ রানের বড় ইনিংস খেলে আসেন কামিন্দু। ২৩৭ বল মোকাবেলায় গড়া এই ইনিংসে ১৬টি চারের সঙ্গে ৬টি ছক্কা মেরেছেন এই ব্যাটার। দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৪ রানে ৪টি উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দুটি করে উইকেট নাহিদ রানা আর তাইজুল ইসলামের। কামিন্দু মেন্ডিসের এটা মাত্র দ্বিতীয় টেস্ট এবং তৃতীয় টেস্ট ইনিংস। এর মধ্যে দুই ইনিংসেই জোড়া সেঞ্চুরির দেখা পেলেন তিনি। শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও একই চিত্রনাট্য। ১২৬ রানে ৬ উইকেট পড়ার পর একইভাবে জুটি গড়ে দাঁড়িয়ে যান ধনঞ্জয়া ডি সিলভা আর কামিন্দু মেন্ডিস। ১৭৩ রানের অনবদ্য জুটি গড়ার পর অবশেষে বিচ্ছিন্ন হন ডি সিলভামেন্ডিস জুটি। ১৭৯ বলে ১০৮ রান করা লঙ্কান অধিনায়ক ধনঞ্জয়া ডি সিলভার উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। জাকির হাসানের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। শ্রীলঙ্কার দলীয় রান এ সময় দাঁড়ায় ২৯৯।

এরপর কামিন্দুর দেড়শোর্ধ্ব ইনিংসে লিড ৫০০ ছাড়ায়।

অথচ ৯২ রানের লিড নিয়ে ব্যাট করতে নামার পর দ্বিতীয় দিন শেষ বিকেলেই লঙ্কানদের ৫ উইকেট তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশের বোলাররা। দিন শেষে করেছিল তারা ৫ উইকেটে ১১৯ রান নিয়ে। যদিও ৫২ রান করা দিমুথ করুনারত্নে আউট হওয়ার পর লঙ্কানরা নাইটওয়াচম্যান হিসেবে উইকেটে পাঠায় বিশ্ব ফার্নান্দোকে। ২ রান নিয়ে তিনি অপরাজিত থাকেন। সঙ্গে প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা ধনঞ্জয়া ডি সিলভা অপরাজিত থাকেন ২৩ রানে। গতকাল তৃতীয় দিন ব্যাট করতে নামার পর বিশ্ব ফার্নান্দোকে দ্রুতই সাজঘরে ফেরান খালেদ আহমেদ। ২৪ বলে ৪ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। এরপর শুরু হয় ধনঞ্জয়া ডি সিলভা এবং কামিন্দু মেন্ডিসের লড়াই। যে লড়াই লংকানদের পৌঁছে দেন রানের পাহাড়ে। আর সে পাহাড় টপকানো আর হচ্ছে না বাংলাদেশের। মানতে হচ্ছে লজ্জার পরাজয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রেমে ব্যর্থ হয়ে স্কুলছাত্রীকে অপহরণ, ৪ যুবক গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধআজ ঢাকায় আসছেন ভুটানের রাজা, হবে চার চুক্তি