লক্ষ্ণৌতে মা ও ৪ বোনকে খুন করল যুবক

বছর শুরুতেই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড

| বৃহস্পতিবার , ২ জানুয়ারি, ২০২৫ at ১১:২১ পূর্বাহ্ণ

নতুন বছর শুরুর দিনেই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী হলো ভারতের উত্তরপ্রদেশ। লক্ষ্ণৌয়ের একটি হোটেলে নিজের মা ও চার বোনকে খুন করে অভিযুক্ত হয়েছে ২৪ বছরের এক যুবক। নাম আরশাদ। এনডিটিভি জানায়, মর্মস্পর্শী একটি ভিডিওতে হত্যার স্বীকারোক্তি দিয়ে এই যুবক বলেছেন, তিনি এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন, কারণ তিনি চাননি যে তার বোনদের বিক্রি করা হোক।

মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের কয়েক ঘণ্টা পরে ভিডিওটি প্রকাশ পায়। এতে আরশাদ অভিযোগ করে বলেন, উত্তরপ্রদেশের বদাউনের তাদের বাড়ি রয়েছে। সেই বাড়ি দখল করে প্রতিবেশী ও জমি মাফিয়ারা তার বোনদের পাচারের পরিকল্পনা করেছিল। ভিডিওতে আরশাদ বলেন, তিনি তার মা ও তিন বোনকে হত্যা করেছেন। ভিডিওতে আরশাদ মৃতদেহগুলো দেখিয়েছেন এবং বলেছেন, তিনি তাদের শ্বাসরোধ করে মেরেছেন। তার বাবা তাকে এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে সহায়তা করেছিলেন বলে স্বীকারোক্তি দেন তিনি। খবর বিডিনিউজের।

নিহতরা হলেন যুবকের মা আসমা, বোন আলিয়া (), আলশিয়া (১৯), আকসা (১৬) ও রাহমীন (১৮)। হত্যাকাণ্ডের পরে ঘটনাস্থল থেকেই পুলিশ আরশাদকে গ্রেপ্তার করে। হোটেল কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, ৩০ ডিসেম্বর আরশাদরা মোট সাত জন হোটেলটিতে উঠেছিলেন। সঙ্গে ছিলেন আরশাদের বাবাও। গতকাল সকালে পরিবারে সদস্যদের খুন করেন আরশাদ।

ভিডিও বার্তায় আরশাদ বলেন, পাড়ার মানুষের হয়রানির কারণে আমাদের পরিবার এ পদক্ষেপ নিয়েছে। আমি আমার মা ও বোনদের হত্যা করেছি। পুলিশ যখন এ ভিডিও পাবে, তখন তাদের অবশ্যই জানতে হবে যে স্থানীয়রা দায়ী। বাড়ি দখল করার জন্য তারা আমাদের হয়রানি করে। আমরা প্রতিবাদ করলেও কেউ আমাদের সহায়তা করেনি। ১৫ দিন হয়ে গেল আমরা ফুটপাতে ঘুমাচ্ছি, ঠান্ডায় ঘুরে বেড়াচ্ছি। তারা আমাদের বাড়িঘর দখল করে নিয়েছে। বাড়ির নথি আমাদের কাছে আছে।

ভিডিওতে এই যুবক বলেছেন, শান্তিতে বসবাসের জন্য তারা ধর্মান্তরিত হতে চেয়েছিলেন এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে ন্যায়বিচারের জন্য আবেদন করেছিলেন। বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে তাদের বিচারের আওতায় আনারও দাবি জানান তিনি।

রানু, আফতাব, আলিম খান, সেলিম, আরিফ, আহমেদ ও আজহারের নাম উল্লেখ করে আরশাদ বলেন, ওরা জমি মাফিয়া, ওরা মেয়েদের বিক্রি করে। তারা আমাদের দুজনকে (তাকে এবং তার বাবাকে) মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো এবং আমাদের বোনদের বিক্রি করার পরিকল্পনা করেছিল। আমরা সেটা চাইনি। তাই আমার বোনদের গলা টিপে মেরে ফেলেছি এবং তাদের হাতের কব্জি কেটে হত্যা করতে বাধ্য হয়েছি।

এরপর আরশাদ তার মা ও বোনদের লাশ দেখান। আত্মহত্যা করে নিজেও মরে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমি হয়ত সকাল পর্যন্ত বেঁচে নাও থাকতে পারি। আমরা বুদাউন থেকে এসেছি, আমার খালার কাছে ১৯৪৭ সালের বাসস্থানের প্রমাণ রয়েছে। কিন্তু তারপরেও তারা আমাদের বাংলাদেশি বলে মিথ্যা প্রচার করে হেনস্তা করছে।

আরশাদ বলেন, আমরা সাহায্যের জন্য অনেকের কাছে গিয়েছিলাম, কিন্তু তারা আমাদের সাহায্য করেনি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে ন্যায়বিচার চেয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, হাতজোড় করে অনুরোধ করছি, আমরা জীবনে ন্যায়বিচার পাইনি, অন্তত মৃত্যুতে ন্যায়বিচার পাই। তাদের কঠোরতম শাস্তি হওয়া উচিত। তাদের সঙ্গে স্থানীয় নেতা ও পুলিশও সম্পৃক্ত। তবে এনডিটিভি ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনতুন বছরে পৃথিবীর জনসংখ্যা ৮০৯ কোটি
পরবর্তী নিবন্ধঈদগাঁওতে সড়ক দুর্ঘটনায় চকরিয়ার যুবকের মৃত্যু