শ্রীলংকাকে ১২ গোলে উড়িয়ে দিয়ে মেয়েদের সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে গত রোববার রাউন্ড রবিন লিগে নিজেদের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ শ্রীলংকাকে হারিয়ে দেয় ১২-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে। প্রথমার্ধে চার গোল করার পর দ্বিতীয়ার্ধে আরও ৮ গোল করেন বাংলাদেশের মেয়েরা। দলের বড় জয়ে হ্যাটট্রিক উপহার দেন আফিদা খন্দকার প্রান্তি ও শাহেদা আক্তার রিপা।
জোড়া গোল করেন ঋতুপর্না চাকমা, আনুচিং মোগিনী। বাকি দুই গোলদাতা আঁখি খাতুন ও উন্নতি খাতুন। গতকালের ম্যাচে শুরু থেকেই মূলত খেলা হয়েছে শ্রীলংকার অর্ধে। দ্বিতীয় মিনিটেই গোল পাওয়ার পর বাংলাদেশ কেবল ছুটেই চলেছে। শ্রীলংকাকে চিড়ে চেপ্টা বানিয়ে ছেড়েছে। চার ম্যাচে তিন জয় ও এক ড্রয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষ দল হিসেবে ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। এদিকে দিনের অন্য ম্যাচে নেপালকে ১-০ গোলে হারানো ভারত ৯ পয়েন্ট নিয়ে উঠেছে ফাইনালে। নেপালের বিপক্ষে ভারতের জয়ে বাংলাদেশের সমীকরণ কিছুটা কঠিন হয়ে গিয়েছিল। শ্রীলংকার বিপক্ষে হার এড়াতেই হতো দলকে। এদিকে ভারতের কাছে হারলেও বাংলাদেশ ও শ্রীলংকার ম্যাচের দিকে তাকিয়ে ছিল নেপাল। শ্রীলংকা জিতলে ভারতের সঙ্গে ফাইনাল খেলতো তারা। কিন্তু বাংলাদেশের জয়ে গতবারের রানার্স আপ নেপালের বিদায় ঘণ্টা বেজে যায়। বাংলাদেশের মেয়েরা শুরুটা করে অন্যভাবে। শঙ্কার মেঘ সরিয়ে দেন তারা খেলার দ্বিতীয় মিনিট থেকেই। ডান দিক দিয়ে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে রিপার বাঁ পায়ের শট গোলরক্ষকের গ্লাভস ছুঁয়ে ক্রসবারে লেগে ফিরে। সামনে থাকা আনুচিংয়ের ফিরতি শট গোলরক্ষকের হাত ছুঁয়ে বল জালে আটকে বাংলাদেশে ১-০ গোলে এগিয়ে যায়। পাঁচ মিনিট পর মারিয়া মান্ডার থ্রু ধরে বঙে ঢুকে নিখুঁত কোনাকুনি শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ঋতুপর্না। ১৬ মিনিটে সতীর্থের লং পাস ধরে গায়ের সঙ্গে সেঁটে থাকা দুই ডিফেন্ডারের প্রতিরোধ ভেঙে নিখুঁত শটে জাল কাঁপান রিপা করেন ৩য় গোলটি। ৩৪ মিনিটে স্বপ্না রানীর শট ফিরে ক্রসবার কাঁপিয়ে। ৪২ মিনিটে আঁখির লম্বা পাস পেয়ে নিখুঁত চিপ শটে ব্যবধান বাড়ান ঋতুপর্না। চার গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আঁখির দুর্দান্ত গোলে ম্যাচকে নিজেদের একচেটিয়া করে নেয় বাংলাদেশ। প্রায় ৪০ গজ দূর থেকে এই ডিফেন্ডারের উঁচু শট লাফিয়ে ওঠা গোলরক্ষকের হাত ছুঁয়ে জালে জড়ায়। ৪৯ মিনিটে আঁখির লম্বা পাসে রিপার প্লেসিং শটে পরাস্ত হন লংকান গোলরক্ষক(৬-০)। ৫৪ মিনিটে প্রান্তির দূরপাল্লার শট শ্রীলংকান গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে জালে জড়ায় (৭-০)। ৬৯ মিনিটে দূরপাল্লার শটে এই ডিফেন্ডার আবারও লক্ষ্যভেদ করলে বড় জয়ের পথে ছুটতে থাকে বাংলাদেশ (৮-০)। ৭৭ মিনিটে আনুচিংয়ের লক্ষ্যভেদের ৯ম গোলের পর ৮৩ মিনিটে প্রান্তি দূরপাল্লার শটে ব্যবধান আরও বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হ্যাটট্রিকও পূরণ করেন দশম গোলটি করেন। ৮৫ মিনিটে উন্নতি খাতুন গোল করার (১১-০) পর শেষ দিকে রিপা নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন (১২-০)। এতে করে চলতি আসরে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে উঠে এলেন রিপা। সব মিলিয়ে মোট ৫টি গোল জমা হলো তার ঝুলিতে। আগামী বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় ফাইনালে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-ভারত। লিগ পর্বে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।