র‌্যাব দেখে জানালা দিয়ে ফেলে দিচ্ছিল ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা

চান্দগাঁওয়ে ফ্ল্যাটে ইয়াবা কারবার ভুয়া এনআইডিসহ রোহিঙ্গা দম্পতি গ্রেপ্তার

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১০ নভেম্বর, ২০২০ at ৪:২৩ পূর্বাহ্ণ

নগরীর চান্দগাঁওয়ে ফ্ল্যাট বাসায় প্রতি মাসে কোটি টাকার ইয়াবা ব্যবসা করে আসছিল এক রোহিঙ্গা দম্পতি। তারা ভুয়া পরিচয়পত্র দিয়ে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে বসবাস করছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ল র‌্যাব-৭ এর হাতে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো শওকত ইসলাম (৩২) ও তার স্ত্রী মরজিনা (২৮)।
জানা যায়, দুই মাস আগে চান্দগাঁও আবাসিক বি-ব্লক ৪ নম্বর রোডের ৭৯ নম্বর ফ্ল্যাটের দ্বিতীয় তলার একটি বাসা তারা ভাড়া নেয়। এরপর সেখানে ইয়াবা বিক্রি করছিল। গত রোববার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালানো হয়। পরে গতকাল সোমবার বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানানো হয়। অভিযানকালে এক কোটি ১৭ লাখ টাকার পাশাপাশি সাড়ে পাঁচ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। এছাড়া তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশী ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়।
র‌্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট আলী আশরাফ তুষার গতকাল আজাদীকে বলেন, ২০০৮ সালে এই রোহিঙ্গা দম্পতি বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করার পর কক্সবাজারের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করে। গত দুই বছর ধরে তারা ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত।
র‌্যাব কর্মকর্তা আলী আশরাফ তুষার আরো বলেন, আটক রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে ইয়াবা বিক্রির যে পরিমাণ টাকা উদ্ধার হয়েছিল তাতে বুঝা যাচ্ছে তারা প্রতিমাসে কোটি কোটি টাকার ইয়াবার লেনদেন করত। গতকাল এই ঘটনায় মাদক আইনে ও অবৈধ অনুপ্রবেশের অপরাধে চান্দগাঁও থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। র‌্যাবের সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান মামুন জানান, আসামিরা র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে জানালা দিয়ে টাকাগুলো ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল। তিনি জানান, এই দম্পতি মিয়ানমার থেকে ইয়াবা এনে নগরীর বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিত। র‌্যাবের অভিযানে ইয়াবা ও টাকার পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন নামে ভুয়া দুইটি এনআইডি কার্ড, চারটি জন্ম সনদপত্র, কঙবাজার পৌরসভা কর্তৃক একটি জাতীয় সনদপত্র ও ৩টি এনআইডির ফটোকপি উদ্ধার করা হয়েছে। তারা মূলত মিয়ানমারের নাগরিক। এসব সনদ ও পরিচয়পত্র ব্যবহার করে তারা নিজেদেরকে বাংলাদেশের নাগরিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করে আসছিল।
চান্দগাঁও থানায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই কাউছার হামিদ বলেন, সোমবার (গতকাল) মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামি মরজিনাকে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অপর আসামি শওকত ইসলাম বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানান তিনি। এই পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, রোহিঙ্গা দম্পতির দুই বছর ও আট বছর বয়সী দুই সন্তান (রিছা মনি ও আরমান আজিজ) রয়েছে। বাংলাদেশে তাদের কোনো আত্মীয় স্বজন না থাকায় শিশুগুলোকে মায়ের সাথে কারাগারে রাখা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধউত্তর কাট্টলীতে বহুতল ভবনে আগুন
পরবর্তী নিবন্ধজমি রেজিস্ট্রেশনের ৮ দিনের মধ্যে নামজারি