‘মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের’ অভিযোগে র্যাবের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে চিঠি দিয়েছেন দেশটির একদল সিনেটর। সিনেটের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির সদস্য ডেমোক্রেট দলের বব মেনেনদেজ ও রিপাবলিকান সিনেটর টড ইয়াংয়ের সঙ্গে সিনেটর বেন কারডিন, কোরি গার্ডনার, জিন শেহিন, মার্কো রুবিও, ক্রিস মারফি, ক্রিস কুনস, জেফ মার্কলে ও কোরি বুকার ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। তবে র্যাবের পক্ষ থেকে অভিযোগ অস্বীকার করে বরাবরের মতই বলা হয়েছে, তারা সব কাজ আইন মেনেই করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মনুশেনকে লেখা মার্কিন সিনেটরদের ওই চিঠিতে বলা হয়, ২০১৫ সালের পর থেকে চারশর বেশি ‘বিচার বহির্ভূত হত্যার’ অভিযোগ রয়েছে বাংলাদেশের এই এলিট বাহিনীর বিরুদ্ধে। ওই অভিযোগে শীর্ষস্থানীয় র্যাব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্লোবাল ম্যাগনিৎস্কি হিউম্যান রাইটস অ্যাকাউন্টিবিলিটি অ্যাক্ট এবং ফারদার কনসোলিডেটেড অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস অ্যাক্ট ২০২০ এর ৭০৩১ (সি) ধারায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের অনুরোধ জানানো হয়েছে সিনেটরদের চিঠিতে। খবর বিডিনিউজের।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনের ওই দুটি ধারায় সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুযোগ রয়েছে। সিনেটরদের চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশ সরকার ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ ঘোষণা করার পর র্যাবের ‘বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ বেড়ে যায়।
বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বিষয়ক বিশেষ দূতসহ জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ আসলে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের একটি পরিকল্পিত কৌশল হিসেবে প্রতীয়মান হচ্ছে। এবং এটা বন্ধ করে আইনের শাসন ও মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখানোর জন্য তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তবে সরকার এ ধরনের ঘটনা বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং র্যাব দায়মুক্তি নিয়েই বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
‘বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ ছাড়াও ‘মানবাধিকার লংঘনের’ বিভিন্ন ঘটনায় র্যাবের জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে উদ্বেগ জানিয়েছেন সিনেটররা। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, র্যাব বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয়। যে ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনাগুলো ঘটে, তা অভিযানিক দলের সঙ্গে সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনীর সঙ্গে গুলি বিনিময়ের সময় ঘটে থাকে। র্যাব সব সময় আইনের বাধ্যবাধ্যকতা মেনেই অভিযান পরিচালনা করে।