র‌্যাডিসন ব্লুর বিশতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে যুবকের মৃত্যু

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১৭ নভেম্বর, ২০২১ at ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ

নগরের পাঁচ তারকা হোটেল র‌্যাডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে-ভিউর বিশতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে আরিফ কবির (২৪) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গত সোমবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। হোটেল কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ওই যুবক লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
জানা গেছে, নিহত আরিফ রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার তাজমহল রোডের এনামুল কবীরের ছেলে। গত ৯/১০ বছর ধরে তিনি মানসিক রোগ ‘অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডারে’ (ওসিডি) ভুগছিলেন। ৯ নভেম্বর মায়ের সাথে ঝগড়া করে বাসা থেকে বের হয়ে যান। এরপর সরাসরি চলে যান কক্সবাজার। সেখান থেকে সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টায় র‌্যাডিসনে প্রবেশ করেন। ওইদিন রাত পৌনে ৯টায় তিনি হোটেলের বিশতলার রেস্তোরাঁয় খাবার অর্ডার করেন। এরপর আকস্মিক বারান্দা থেকে নিচে লাফ দেন এবং ষষ্ঠতলার বারান্দায় গিয়ে পড়েন। এরপর হোটেল কর্তৃপক্ষ খবর দিলে পুলিশ মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে র‌্যাডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে-ভিউর জনসংযোগ কর্মকর্তা রাহফাত সালমান দৈনিক আজাদীকে বলেন, র‌্যাডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে-ভিউতে সোমবার অনাকাক্সিক্ষত স্বপ্রণোদিত মৃত্যুর ঘটনা ঘটে, যা বর্তমানে আইনশৃক্সখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তদন্ত করছেন। নিহতের বিদেহী আত্মা ও পরিবারের জন্যে হোটেল কর্তৃপক্ষ গভীরভাবে শোকাহত এবং এই কঠিন সময়ে তাদের পাশে আছেন।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিন আজাদীকে বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে আত্মহত্যা। আরিফ কবীরের কাছে কক্সবাজার থেকে ঢাকা যাওয়ার বাসের টিকেট পাওয়া গেছে। তার মা আমাদের জনিয়েছেন, সে ওসিডিতে আক্রান্ত ছিল। মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে সে বাসা থেকে বের হয়েছিল। মাঝেমধ্যে মোবাইল ফোনে পরিবারের সঙ্গে কথা বললেও কোথায় আছে সেটি জানায়নি। সর্বশেষ সোমবার বিকাল ৪টার দিকে কল করে মাকে জানায়, খুব দ্রুত বাসায় ফিরবে। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে বাসা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল।
তিনি বলেন, আরিফ কবির রেস্তোরাঁর যে টেবিলে বসেছিল তার পাশের টেবিলে দুজন বিদেশিও বসেছিলেন। তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন, সে টেবিল স্বাভাবিকভাবে বসে খাচ্ছিল। পরে রেলিংয়ের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। এরপর দেখি সে নাই। কোন ফাঁকে কোথায় চলে গেছে আমরা বুঝতেও পরিনি।
কোতোয়ালী থানার ওসি (তদন্ত) চৌধুরী রেজাউল করিম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা তার মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখছি। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, আরিফ একাই রেডিসন ব্লুতে গেছেন। আমরা হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ছয় দিনের গতিবিধি খতিয়ে দেখছি। তিনি বলেন, সোমবার দুপুর পর্যন্ত আরিফের ফোনের লোকেশন ছিল কক্সবাজারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচলছে ভেতরে রাস্তা তৈরির কাজ
পরবর্তী নিবন্ধলাইটার জাহাজের ভাড়া বাড়ল ১৫ শতাংশ