সাকিব আল হাসানের পর প্রথমবার বাংলাদেশের কোন অলরাউন্ডারদের র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে ওঠার খুব কাছে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দারুণ সিরিজ কাটিয়ে আপাতত দুই নম্বরে মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে ক্যারিয়ার সেরা র্যাঙ্কিংয়ে উঠেও তৃপ্ত নন এই অলরাউন্ডার। হৃদয়ে গেঁথে নিয়েছেন বিশ্বের এক নম্বর অলরাউন্ডার হওয়ার স্বপ্ন। আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ের গত সপ্তাহের হালনাগাদে মার্কো ইয়ানসেনকে পেছনে ফেলে ক্যারিয়ার সেরা দুই নম্বরে উঠেছেন মিরাজ। একইসঙ্গে পেয়েছেন ক্যারিয়ার সেরা ৩২৭ রেটিং পয়েন্ট। ৪০০ পয়েন্ট নিয়ে তার সামনে রবিন্দ্র জাদেজা। গত মাসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিলেট টেস্টের দুই ইনিংসেই ৫টি করে উইকেট নেন মিরাজ। পরে চট্টগ্রামে ব্যাট হাতে সেঞ্চুরির পর বোলিংয়ে আবার ৫ উইকেট নেন অভিজ্ঞ স্পিন অলরাউন্ডার। একই সিরিজে টেস্ট ক্যারিয়ারে ২০০ উইকেট ও ২ হাজার রানের ‘ডাবল’ পূর্ণ করেন মিরাজ। তার আগে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে এই অর্জন ছিল শুধু সাকিবের। দেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারের পাশে বসায় গতকাল মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তাকে শুভেচ্ছা স্মারক উপহার দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট সাপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মিরাজ বলেন, লক্ষ্য তার আরও বড়। অলরাউন্ডার র্যাঙ্কিংয়ের দুই নম্বরে ওঠা অবশ্যই খুবই ভালো লাগার বিষয়। এক নম্বরে আসতে পারলে আরও ভালো লাগবে।
প্রায় ৯ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত ৫৩ ম্যাচে ২ হাজার ৬৮ রান ও ২০৫ উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। তার সামনে পড়ে আছে আরও লম্বা সময়। ২ হাজার রান ও ২০০ উইকেটের ডাবল পূর্ণ করার পর সামনে ৪০০ উইকেট ও ৫ হাজার রান করার স্বপ্ন দেখেন কি না, জানতে চাইলে মিরাজ বলেণ সুনির্দিষ্ট সংখ্যা বলতে নারাজ। আমার তো ক্যারিয়ার মাত্র শুরু হয়েছে। লক্ষ্য অবশ্যই অনেক ওপরে যাওয়ার। দিন শেষে অনেক লম্বা পথ যেতে হবে। ফিট থাকতে হবে। ভালো খেলতে হবে। ওইভাবে ৪০০ উইকেট এবং ৫ হাজার রানের চিন্তা করছি না। ছোট ছোটভাবে এগোনোর চেষ্টা করছি। টেস্টে বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে উইকেটের তালিকায় আপাতত তিন নম্বরে মিরাজ। তার সামনে সাকিব (২৪৬) ও তাইজুল ইসলাম (২২৮)। সাকিবের ক্যারিয়ার প্রায় শেষ বলাই যায়। তাইজুলেরও বয়স হয়ে গেছে ৩৩। তাই সামনের দিনগুলোতে দুজনকে ছাড়িয়ে মিরাজের শীর্ষে ওঠার সম্ভাবনা অনেক। সেই লক্ষ্য ছুঁতে লম্বা পথ পাড়ি দিতে প্রস্তুত মিরাজ।
টেস্টে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী হতে পারলে অবশ্যই ভালো লাগবে। বাংলাদেশের জন্য অর্জন করতে পারলে, যে কোনো সংস্করণই হোক, ভালো লাগার বিষয়। আসলে শর্টকাটের কিছু নেই। লম্বা পথ যেতে হবে। সেটাই চেষ্টা করছি। আন্দ্রে অ্যাডামসকে বিদায় করে সোমবার শন টেইটকে জাতীয় দলের পেস বোলিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছে বিসিবি। ২০২২ সালের বিপিএলে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সে টেইটের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে মিরাজের। নতুন পেস বোলিং কোচকে স্বাগত জানিয়ে রাখলেন এই স্পিনিং অলরাউন্ডার। বিপিএলে চট্টগ্রামের অধিনায়ক থাকার সময় আমি শন টেইটের সঙ্গে কাজ করেছি। আমার মনে হয়, ওর সঙ্গে আমাদের বোঝাপড়া খুব ভালো ছিল। মানুষ হিসেবে অনেক ভালো। অনেক স্নেহশীল ও সহায়তাপরায়ণ। আমার মনে হয়, এরকম কোচ থাকা ভালো দলের জন্য। আমি ওকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি। ক্রিকেটারদের অনেক সহযোগিতা করে। অস্ট্রেলিয়ার মতো দলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছে, ও জানে এখানে কীভাবে কী করতে হবে। তাই আমার মনে হয়, ওকে কোচ হিসেবে ঠিক করা আমাদের দলের জন্য ইতিবাচক দিক।
