রোহিঙ্গা সঙ্কটের পাঁচ বছর আজ

আটকে প্রত্যাবাসন, চিন্তা বাড়াচ্ছে জন্মহার

| বৃহস্পতিবার , ২৫ আগস্ট, ২০২২ at ৫:১৯ পূর্বাহ্ণ

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতন থেকে বাংলাদেশ অভিমুখে রোহিঙ্গাদের সেই অনিশ্চিত যাত্রার পাঁচ বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ। এই পাঁচ বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে তাদের বাসভূমে ফেরত পাঠাতে পারেনি বাংলাদেশ। এই সময়ে এই বাংলাদেশেই জন্ম নিয়েছে এক লাখের বেশি রোহিঙ্গা শিশু; তাতে বাংলাদেশের ওপর তৈরি হয়েছে বাড়তি চাপ। খবর বিডিনিউজের।
বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে সেই ঢলের শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট; এরপর কয়েক মাসের মধ্যে সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে ওই এলাকার ক্যাম্পে বসবাস করছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা। জাতিসংঘ সে সময় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর এই হত্যা ও নির্যাতনকে চিহ্নিত করেছিল জাতিগত নিধনের ধ্রুপদী উদাহরণ হিসেবে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার চলতি বছরের মার্চে রোহিঙ্গাদের উপর চালানো ওই হত্যাযজ্ঞকে জেনোসাইড হিসাবে বর্ণনা করেছে। বাংলাদেশ সীমান্ত খুলে দেওয়ার পর থেকে কক্সবাজার ও উখিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বাঁশ আর প্লাস্টিকের খুপড়ি ঘরে বসবাস শুরু করে রোহিঙ্গারা। উখিয়ার কুতুপালং পরিণত হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে।
কক্সবাজারের ক্যাম্পে প্রতি বছর প্রায় ৩০ হাজার করে শিশুর জন্ম হচ্ছে; রোহিঙ্গাদের মধ্যে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম জোরদার করার আহ্বান জানিয়ে আসছে সরকার। গত রোববার জাতিসংঘ এবং এর অঙ্গসংস্থাগুলোর সঙ্গে টাস্কফোর্সের সভাতেও ইউএনএফপিএ এর প্রতি এ বিষয়ে অনুরোধ জানানো হয় সরকারের তরফ থেকে। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ সেদিন সাংবাদিকদের বলেন, ইউএনএফপিএ এর যে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম আছে, সেটা আরও জোরদার করার জন্য আমরা তাদেরকে অনুরোধ করেছি। এবং তারাও অচিরে কাজ শুরু করবে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ইউএনএফপিএ এর মধ্যে তৈরি করা নীতিগত দলিল ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানান তিনি। ওই দলিল দ্রুত অনুমোদন করে কার্যক্রম শুরুর পর্যায়ে যাবে বলে তিনি আশা করছেন।
ঢাকা সফরে আসা ইউএনএফপিএ এর আঞ্চলিক পরিচালককেও ক্যাম্পে পরিবার-পরিকল্পনা কার্যক্রম জোরদারের বিষয়ে বলা হয়েছে জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, প্রতি বছর যে ৩০ হাজার করে যোগ হচ্ছে, এতে করে ওভারঅল পপুলেশন বেড়ে যাচ্ছে। সব মিলে ক্যাম্পের জনসংখ্যা কত বেড়েছে, এ প্রশ্নে সচিব বলেন, ১১ লাখের একটা আনুমানিক হিসাব আছে। যেহেতু ৩০ হাজার করে বাড়ছে। যদি চার বছর ধরি, তাহলে ইতোমধ্যে এক লাখের উপরে যোগ হয়েছে। এখানে তো সেভাবে শুমারি হয় নাই, সংখ্যাটা আনুমানিক। যেহেতু ৩০ হাজার করে যোগ হচ্ছে সংখ্যাটা (১১ লাখের চেয়ে) একটু বেশিই।
রোহিঙ্গা ঢলের পাঁচ বছর পূর্তিতে এসে নির্যাতিত এই শরণার্থীদের জন্য আর্থিক সহায়তা ও সংকট সমাধানের জোর প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর। গত মঙ্গলবার সংস্থার এক বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য জীবন রক্ষাকারী সুরক্ষা ও সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা অত্যন্ত জরুরি, কিন্তু আর্থিক সহায়তা অপর্যাপ্ত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করল সিডিএ
পরবর্তী নিবন্ধদম্পতিকে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা, আটক ৩