মিয়ানমারের সমুদ্র উপকূলে ভারতীয় নৌবাহিনী কিছু রোহিঙ্গা শরণার্থীকে সমুদ্রে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ জাতিসংঘ তদন্ত করে দেখছে বলে ঘোষণা করেছে। গত সপ্তাহে ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি জাহাজ থেকে আন্দামান সাগরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জোর করে নামিয়ে দেওয়ার খবরে জাতিসংঘ এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। একজন বিশেষজ্ঞকে দিয়ে এ ধরনের ‘অনুচিত ও অস্বীকৃত’ ঘটনার তদন্ত করানো শুরু হয়েছে বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। এর আগে গণমাধ্যমে এরকম খবর এসেছিল যে দিল্লির পুলিশ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তাদের ঘর থেকে আটক করেছে। ওইসব প্রতিবেদন নিয়ে ভারত সরকার বা ভারতের নৌবাহিনী এখনও পর্যন্ত কোনো বক্তব্য দেয়নি। তবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কথিত প্রত্যর্পণ নিয়ে শুক্রবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টে এক শুনানি হয়েছে। ওই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট সন্দেহ প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী কোনো আদেশ দিতে অস্বীকার করেছে। খবর বিবিসি বাংলার।
কী বলেছে জাতিসংঘ?
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা বলেছে, ভারতীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ যে শরণার্থী পরিচয়পত্র থাকা সত্বেও দিল্লিতে বসবাসকারী কয়েক ডজন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ৪০ জনকে চোখ বেঁধে আন্দামান–নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি জাহাজে তোলা হয়। ‘ওই জাহাজটি আন্দামান সাগর পেরনোর পরে শরণার্থীদের লাইফ জ্যাকেট দেওয়া হয় এবং মিয়ানমারে সীমানার অভ্যন্তরে অবস্থিত একটি দ্বীপে সাঁতার কেটে চলে যেতে বাধ্য করা হয়। শরণার্থীরা সম্ভবত সাঁতরে ওই দ্বীপে পৌঁছান, কিন্তু তাদের বর্তমান অবস্থা এবং তারা কোথায় আছেন– এখনও তা অজানা,’ ওই বিবৃতিতে বলেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা।
এছাড়াও আসাম রাজ্যের একটি ডিটেনশন সেন্টার থেকে প্রায় ১০০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে সরিয়ে নিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কোনো জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও খবর পেয়েছে জাতিসংঘ।
তারা ওই বিবৃতিতে এও বলেছে, মিয়ানমারে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং নির্যাতন ও সহিংসতার হুমকির সম্মুখীন হওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জোর করে প্রত্যর্পণের যে কোনো প্রচেষ্টা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।