উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয় ক্যাম্পগুলোতে পৃথক ঘটনায় একজন নিহত ও অপর একজন আহত হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধের ঘটনাও ঘটেছে। পুলিশের অভিযানে দেশী–বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদসহ সাতজন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে আটকের খবর পাওয়া গেছে। জানা যায়, গত মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উখিয়ার জামতলী ক্যাম্প –১৫ এর ই/০৩ এবং ই/২ ব্লকে সন্ত্রাসী হামলায় মো. রবি আলম এবং জাফর হোসেন নিখোঁজ হয়। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ আরসা ও আরএসও এর মধ্যে পৃথক হামলার ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে উখিয়া জামতলী ক্যাম্প–১৫ এর ডি/২ ব্লকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাদের পাওয়া যায়। এরমধ্যে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ১৫ নং ক্যাম্পের নুর সালামের ছেলে রবি আলম (১৭) কে মৃত ও থাইংখালী হাকিমপাড়া –১৪ নং ক্যাম্পের ইমাম হোসেনের ছেলে জাফর হোসেন (২৯) কে রোহিঙ্গারা উদ্ধার করে ক্যাম্প–১৪ এর এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে যায় বলে জানা যায়।
অন্যদিকে বুধবার (১ নভেম্বর /২৩) দুপুর ১টায় উখিয়ার কুতুপালং ৪ নম্বর (বর্ধিত) রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আই ব্লকে পুলিশ, আরসা ও আরএসও’র মধ্যে ঘন্টাব্যাপী ত্রিমুখী বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সন্ত্রাসীদের সাথে বিবদমান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) সন্ত্রাসীদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বেশ কিছুক্ষণ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। পরে এপিবিএন পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গেলে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুটে। এ ঘটনায় পুলিশ ও সন্ত্রাসী রোহিঙ্গাদের মাঝে অন্তত শতাধিক রাউন্ড গুলি বিনিময় হয় বলে জানা যায়। ১৪–আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইকবাল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিজেদের আত্মরক্ষার জন্য পুলিশও পাল্টা গুলি করলে সন্ত্রাসীরা পালনোর চেষ্টা করে। এ সময় ধাওয়া করে পাঁচজন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে পেঠান আলী (৫০) গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আটককৃতরা হলেন, ৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সি/৬ ব্লকের রোহিঙ্গা পেঠান আলী (৫০), মো. জোবাইর (২৫), দিল মোহাম্মদ (২৬), ব্লক এ/৩ এর বাসিন্দা শরীয়ত উল্লাহ (২৭), ব্লক ই/৮ এর বাসিন্দা মো. আয়াজ (১৯) এবং ৭ নম্বর ক্যাম্পের জি/৫ ব্লকের রোহিঙ্গা জিয়াবুর রহমান (২৬)। এসময় ঘটনাস্থল তল্লাশি করে আটককৃতদের কাছ থেকে দুটি ওয়ান শুটার গান, ১০ রাউন্ড গুলি, ৪টি গুলির খোসা, একটি ওয়াকিটকি, ২টি বাটন ফোন, ২টি এন্ড্রয়েড ফোন, ১টি টর্চ লাইট ও একটি ছোট কালো ব্যাগ উদ্ধারের কথা জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা। এদিকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বুধবার (১ নভেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টায় উখিয়ায় রাজাপালং ইউনিয়ন দক্ষিণ ফলিয়া পাড়া নার্সারি টিলা এলাকা থেকে বিদেশী অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ উখিয়ার ৪ নম্বর ক্যাম্পের ব্লক–সি–১–এর বাসিন্দা মৃত নুর আলমের ছেলে সলিম (১৯) ও ৩ নম্বর ক্যাম্পের ব্লক–ই–সাব ব্লক–ই–৬১–এর মৃত আমিনের পুত্র ওমর ফারুক (১৬) কে আটক করেছে।
১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক মো. ইকবাল জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভোরে দক্ষিণ ফলিয়া পাড়া নার্সারি টিলার নুর আহমদের বসতঘরের পাশ থেকে দুই রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন, দুই রাউন্ড পিস্তলের গুলি ও দুই রাউন্ড রাইফেলের গুলি উদ্ধার করা হয়।