রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরসার তিন সদস্য আটক, দেশি-বিদেশি ২২টি অস্ত্র

শহিদুল ইসলাম, ‍উখিয়া | বৃহস্পতিবার , ২৫ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৬:৪৯ অপরাহ্ণ

কক্সবাজারের উখিয়ার ২০ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন লাল পাহাড়ে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসার আস্তানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-গোলাবারুদসহ আরসার সক্রিয় তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৫। এ সময় আস্তানা থেকে দেশি-বিদেশি ২২টি অস্ত্র, চারটি মাইন, একে-৪৭ সহ বিভিন্ন অস্ত্রের ১শ রাউন্ড গুলি ও বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন নেছার আহমদ, মোঃ উসমান ও মোঃ ইমান। এরা সবাই উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাসিন্দা। তবে তাঁরা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসার বিভিন্ন পদে কর্মরত আছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত আস্তানায় অভিযান চালানো হয়। আটককৃতদের বিকালে উখিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকালে র‍্যাব ১৫ অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্ণেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আরসার তিন সন্ত্রাসীকে ধরার পর মজুদ অস্ত্রের খোঁজে পাহাড় থেকে পাহাড়ে তল্লাশী শুরু করে র‍্যাব। তারপর ২২টি অস্ত্র ১শো তাজা গুলি চারটি স্থলমাইন উদ্ধার করে।

র‌্যাবের এ অধিনায়ক বলেন, আরসা প্রধান আতাউল্লাহর নির্দেশে ক্যাম্পে গড়ে তোলা হয় ১২টি গান গ্রুপ। যারা ক্যাম্পে নাশকতা করছে। এ ব্যাপারে মামলা করে গ্রেপ্তারদের উখিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

উসমান যেভাবে গান কমান্ডার হলেন :
গ্রেপ্তারকৃত উসমান হলেন আরসার গান গ্রুপের কমান্ডার। গত দুয়েক মাস আগে আরসার গান গ্রুপ কমান্ডার সমিউদ্দিন র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হলে পরবর্তীতে উসমানকে গান গ্রুপ কমান্ডার নিযুক্ত করেন আরসা। আরসার সঙ্গে নিজের নাম লেখানোর আগে তিনি পার্শ্ববর্তী দেশ সেনাবাহিনীর সোর্স হিসেবে কাজ করতো বলে জানান র‍্যাব। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে উসমানের পরিবারকে বাস্তুচ্যুত করে মিয়ানমার সরকার। তখন উসমান একটি একে-৪৭ সহ পালিয়ে আসে এবং পরবর্তীতে মাস্টার খালেদের সাথে আরসায় যোগ দেন বলে জানায় র‍্যাব ।

র‍্যাব আরো জানান, উসমান নিজ হাতে দুইজনকে হত্যা করে। তার মধ্যে একজন হলো ক্যাম্প -১৭ এর আব্দুল্লাহ। আরেকজনকে দোকান থেকে ডেকে নিয়ে জবাই করে হত্যা করেন বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে উসমান।

• মাইন বিশেষজ্ঞ নেছার তৈরি করেছেন ৫শ’ মাইন:

আরসার মাইনগ্রুপের ১০ সদস্যের মধ্যে নেছার হলেন মাইন বিশেষজ্ঞ। যার হাত দিয়ে তৈরি করেছে ৫ শ’র অধিক মাইন। এসব মাইন তিনি গ্রুপের সদস্যদের মাধ্যমে আরসা সদস্যদের একজনকে দুই তিনটি মাইন ডিস্ট্রিবিউট করে দিতো নাশকতা করার জন্য, জানান র‍্যান কমান্ডার।

নেছারকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাদ দিয়ে র‍্যাব জানায় , নেছার নিজ হাতে ৫ শতাধিকের উপরে মাইন তৈরি করেছেন। এছাড়াও গ্রেপ্তার ইমাম হোসেন দক্ষ শ্যুটার। তিনি উসমানের গানগ্রুপের একজন সক্রিয় সদস্য।

উল্লেখ্য ২০২৩ সালে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ক্যাম্পগুলো থেকে সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার ৮৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসেন্টমার্টিন সৈকতে নীল রঙের মেলা
পরবর্তী নিবন্ধটেকনাফে ঝাউবনে ধর্ষণের শিকার ১২ বছরের শিশু