রোহিঙ্গাদের বাড়ি ফিরতে হবে : খলিলুর

জাতিসংঘে ৩০ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন, তার প্রস্তুতিতে ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে স্টেকহোল্ডার কনফারেন্স

| সোমবার , ১৮ আগস্ট, ২০২৫ at ৮:১৪ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশে আশ্রিত মিয়ানমারের নাগরিকদের নিয়ে যে সংকট চলছে, তার স্থায়ী সমাধান হিসেবে প্রত্যাবাসনের জন্য কাজ করার কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান। গতকাল রোববার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে কূটনৈতিকদের ব্রিফ করার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, সবচাইতে বড় কথা হচ্ছে যে, আমরা এই সমস্যাটির একটি আশু এবং স্থায়ী সমাধান চাই, তো সেটাই। আপনি আন্তর্জাতিক সাহায্য দিয়ে কতদিন রাখবেন, তাদের তো বাড়ি ফিরতে হবে। সেটাই তো আসল কথা।

তবে বাস্তবতার নিরিখে এদেশের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা যে গুরুত্বপূর্ণ তা মানছেন খলিলুর। তার কথায়, সাহায্য ইম্পর্টেন্ট। কারণ সেটা যদি কমে যায়, নানা ধরনের মানবিক সমস্যা দেখা দেয়। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ওপর তার প্রতিক্রিয়া পড়ে। তো সাহায্য যাতে অব্যাহত থাকে, সে প্রচেষ্টা তো আমরা সবাই মিলে করছি এবং কিছু কিছু দাতা দেশ থেকে কিছু উদ্যোগের নিশানা পাচ্ছি। খবর বিডিনিউজের।

প্রধান উপদেষ্টার উপদেষ্টা পদমর্যাদার কর্মকর্তা খলিলুর বলেন, আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একটি কথা সবসময় বলি যে, গত আট বছরে আমরা পাঁচ বিলিয়নের ওপর খরচ করেছি রোহিঙ্গাদের ওপরে। এরা আসবার আগে কয় টাকা খরচ হয়েছে? এক পয়সাও না। রোহিঙ্গারা যখন ফিরে যাবেন, তাদের ভূমি অত্যন্ত উর্বর; তাদের পানিতে যথেষ্ট পরিমাণ মাছ পাওয়া যায়। আমরাই তো তাদের কাছ থেকে শস্য কিনতাম একসময়। পৃথিবীর কোনো প্রয়োজন তাদের কাছে নাই। তো তাদের ফিরিয়ে দিলে সবার জন্য মঙ্গল।

২৫ আগস্ট কক্সবাজারে স্টেকহোল্ডার কনফারেন্স আয়োজনের কথা তুলে ধরে খলিলুর রহমান বলেন, জাতিসংঘে আগামী সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখে রোহিঙ্গা বিষয়ক যে আন্তর্জাতিক সম্মেলন হচ্ছে তারই প্রস্তুতির একটা অংশ হিসেবে আমরা করেছি। রোহিঙ্গা সংকট আন্তর্জাতিক আলোচনা থেকে খসে পড়ার প্রেক্ষাপটে এ সম্মেলন আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান তিনি।

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা গত বছর জাতিসংঘের সাধারণ সভায় একটা আন্তর্জাতিক সম্মেলন আহ্বান করার জন্য জাতিসংঘের সকল সদস্যকে আহ্বান জানিয়েছিলেন। এবং সেটাতে তাৎক্ষণিকভাবে আমরা সাড়া পেয়েছি। সর্বসম্মতিক্রমে এই কনফারেন্সটা আহ্বান করার সিদ্ধান্ত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ গ্রহণ করে এবং বিশ্বের ১০৬টা দেশ এটাকে স্পন্সর করে। সুতরাং এখন আন্তর্জাতিক সমর্থন যথেষ্ট পরিমাণ আছে।

খলিলুর বলেন, এই সম্মেলন হচ্ছে রোহিঙ্গাদের জন্য এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য। এই সমস্যার একটা স্থায়ী এবং আশু সমাধানের পথনির্দেশিকা দেওয়ার একটা বড় সুযোগ। আমরা সেই কারণে রোহিঙ্গাদের কণ্ঠস্বর, তাদের কথা, তাদের আশাআকাক্সক্ষা, তাদের স্বপ্নএগুলো আমরা সেই কনফারেন্সে নিয়ে যেতে চাই।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন, জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্ররাই সম্মেলনগুলোতে অংশগ্রহণ করে। রোহিঙ্গারা তো আর সদস্য নয়। কিন্তু কাউকে তো তাদের ভয়েসটা নিয়ে যেতে হবে। তো আমরা এ ধরনের প্রক্রিয়াতে সেই কাজটি করছি। আমরা আন্তর্জাতিক কমিউনিটি থেকে যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছি এবং সেটা আপনারা সম্মেলনে যারা অংশগ্রহণ করবেন সেখান থেকে, আপনারা দেখতে পাবেন। এবং আমরা যে বার্তাটা নিয়ে যাব, রোহিঙ্গারা এই সম্মেলনের মাধ্যমে যে বার্তাটা পাঠাবেন, সেটা ওই আগামী সেপ্টেম্বরে ইউএন কনফারেন্সে একটা বড় উপাদান হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচকরিয়ায় চিংড়িঘের দখল নিয়ে দুই পক্ষে গোলাগুলি, নিহত ১
পরবর্তী নিবন্ধএক্সিম ব্যাংকের ৮৫৮ কোটি আত্মসাৎ