পাসপোর্টের জন্য যে পুলিশি যাচাই ব্যবস্থা রয়েছে, রোহিঙ্গাদের অপতৎপরতার কারণে তা তোলা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, একসময় চিন্তা করেছিলাম পুলিশ ভেরিফিকেশন উঠিয়ে দেব; শুধু (এনআইডি) কার্ডের উপরে দেবে। পুলিশ ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে জনগণ একটু হ্যারেসমেন্ট হয়, পেতে দেরি হয়; রোহিঙ্গাদের জন্য এটা ওঠানো যাচ্ছে না। বাট এটা (হয়রানি) আগে যে পরিমাণ ছিল, এখন কিন্তু ওইটা নেই। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল সোমবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, যদি দেখা যায়–শুধু আইডি কার্ড দিয়ে পারা যায়, তাহলে আমরা পুলিশ ভেরিফিকেশন উঠিয়ে দেব। কিন্তু আইডি কার্ডও তো আমাদের মন্ত্রণালয়ে আসতেছে। পুলিশ রিফর্মস কমিশনের সুপারিশ যদি থাকে, তাহলে তখন অন্য কথা।
এক প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দেশে বিদেশি অনেকে আছেন, যাদের ভিসা নেই। তারা থাকছে, চাকরি করছে। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ভিসা নিতে হবে। এরপর না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেব। এখনও যারা আছে, তারা ধরা পড়লে বিদেশে পাঠিয়ে দেব।
আয়নাঘর–ভাতের হোটেল : আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বহুল আলোচিত বন্দিশালা ‘আয়নাঘর’ কিংবা ডিবির ‘ভাতের হোটেলের’ অস্তিত্ব বর্তমানে নেই বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, এখন আয়নাঘর বলতে কোনো কিছু নাই। এখানে আয়নাঘর বলতে কোনো কিছু থাকবে না; এখানে কোনো ভাতের হোটেল থাকবে না।
গতকাল দুপুরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয় পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বিরোধী মতের বহু মানুষকে তুলে নিয়ে বিচার বহির্ভূতভাবে অজ্ঞাত স্থানে আটক রাখার অভিযোগ ওঠে, সেইসব বন্দিশালার প্রতীকী নাম রাখা হয়েছে ‘আয়নাঘর’। আওয়ামী লীগ আমলেই ডিএমপির ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ তার কার্যালয়ে অভিযোগ নিয়ে আসা মানুষদের ভাত খাইয়ে হয়েছিলেন তুমুল আলোচিত ও বিতর্কিত। ডিবি কার্যালয়কে ‘ভাতের হোটেল’ হিসেবে আলোচিত করা এই কর্মকর্তা রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে পলাতক রয়েছেন।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ৫ মাসের মাথায় সেই ডিবি কার্যালয় পরিদর্শনে এসে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ‘আয়নাঘর ও ভাতের হোটেল’ প্রসঙ্গ টেনে বললেন, ডিবি সিভিল ড্রেসে কাউকে অ্যারেস্ট করবে না, তাদের জ্যাকেট পরতে হবে এবং আইডি কার্ড শো করতে হবে। তারা আইনের বাইরে কোনো কাজ করবে না। আইনের বাইরে যদি আমিও কোনো আদেশ করি, তারা যেন না করে।
ডিবি কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেশে যেভাবে আছে, এটা থেকে কীভাবে আরও উন্নতি করা যায়– আলোচনা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোটামুটি সন্তোষজনক, কিন্তু এটা আরও উন্নতি করার অবকাশ রয়েছে। এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।