রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের তথ্য প্রকাশে ফেসবুককে নির্দেশ

যুক্তরাষ্ট্রের ১৮ কোটি ডলার সহায়তা ঘোষণা

আজাদী ডেস্ক | শুক্রবার , ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৯:৫৫ পূর্বাহ্ণ

রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো সহিংস ঘটনার সব তথ্য প্রকাশের জন্য ফেসবুককে নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। এর আগে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতনের বিভিন্ন তথ্য সহিংস বলে প্রকাশ করা বন্ধ করে দিয়েছিল এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এদিকে মানবিক সংকট মোকাবেলায় মিয়ানমারের ভেতরে এবং বাইরে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের জন্য অতিরিক্ত সহায়তা হিসেবে প্রায় ১৮ কোটি মার্কিন ডলার প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
মিয়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর চলা নির্যাতন ও সহিংসতা-সংশ্লিষ্ট তথ্য, আন্তর্জাতিক অপরাধের মামলার বিচারকার্য সহায়তার জন্য অনুসন্ধানকারীদের দিতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে ওয়াশিংটন ডিসির ওই বিচারক ফেসবুকের সমালোচনা করেন। যুক্তরাষ্ট্রের আইনের অজুহাত দিয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সেসব তথ্য-উপাত্ত প্রকাশের বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছিল। কিন্তু বিচারক বলেন, যেসব তথ্য সরানো হয়েছে, সেগুলো আইনভঙ্গের মধ্যে পড়ে না। এ নির্দেশনার পর ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। রোহিঙ্গা গণহত্যা এবং ১৯৪৮ সালের জেনোসাইড কনভেনশনে করা চুক্তি ভাঙার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে গাম্বিয়া। যদিও মিয়ানমার সেনাবাহিনী নির্যাতন ও সহিংসতার অভিযোগ বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে আসছে। হেগের আদালতে মামলা চালাতে যাবতীয় তথ্য হাজির করার জন্য বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত প্রয়োজন গাম্বিয়ার। কিন্তু এসব তথ্য ফেসবুক সরিয়ে ফেলায় বিপাকে পড়েছে দেশটি। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ২০১৭ সালে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। হত্যা করে নারী-শিশুসহ বহু রোহিঙ্গা মুসলিমকে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো একে এথনিক ক্লিনজিং বা জাতিগত নিধন বলে আখ্যা দিয়েছে।
রোহিঙ্গাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ঘোষণা : যুক্তরাষ্ট্র মানবিক সংকট মোকাবেলায় মিয়ানমারের ভেতরে এবং বাইরে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের জন্য অতিরিক্ত সহায়তা হিসেবে প্রায় ১৮ কোটি মার্কিন ডলার প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে। জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড গত মঙ্গলবার বলেছেন, এই সহায়তার ১৫ কোটি ৮ লাখ মার্কিন ডলার বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও সে দেশের জনগণ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বিশাল দায়িত্ব পালন করছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক নিজ দেশ থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং স্থায়ীভাবে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনে আমরা বাংলাদেশের পাশে আছি। তিনি বলেন, গত কয়েক দশক ধরে রোহিঙ্গারা নির্মম নিষ্ঠুরতা যেমন- নির্যাতন, ধর্ষণ, গণহত্যা, অগ্নি সংযোগের শিকার হচ্ছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত থমাস লিন্ডা বলেন, আমরা মিয়ানমারে সহিংসতা বন্ধ করে গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসার জন্য সে দেশের সামরিক জান্তার উপর চাপ অব্যাহত রেখেছি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও অবশ্যই রোহিঙ্গাদের বিষয়ে টেকসই সমাধানের পদক্ষেপ নেয়া উচিত। তিনি বলেন, প্রায় ৯ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। আমরা রোহিঙ্গাদের এই দুর্দশা এড়িয়ে যেতে পারি না। তিনি বলেন, এই সহায়তা রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা, খাদ্য, নিরাপদ পানি, আশ্রয় এবং স্বাস্থ্য সেবার কাজে ব্যয় করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘যুগল’ বিক্রি হল ৫ লাখ পাউন্ডে
পরবর্তী নিবন্ধপারমাণবিক শক্তিধর ইরানকে ঠেকাতে সৌদির সমর্থন