জাপানের পর এশিয়ার আরো একটি দেশ শেষ ষোলোতে উঠল। গতকাল শুক্রবার ‘এইচ’ গ্রুপের নাটকীয়তায় শেষ ষোলোতে পৌঁছে দক্ষিণ কোরিয়া। প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আগেই এই গ্রুপ থেকে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছিল পর্তুগাল। তৃতীয় ম্যাচে ছন্দহীন পর্তুগালকে ২–১ গোলে পরাজিত করে দক্ষিণ কোরিয়া। পাশাপাশি গ্রুপ ‘এইচ’ এর অন্য ম্যাচে ঘানাকে ২–০ গোলে হারায় উরুগুয়ে। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার সমান চার পয়েন্ট হওয়ায় গোল ব্যবধান, গোল দেওয়া ও হজম করার হিসেব কষা হয়। গোল ব্যবধানে সমান থাকলেও বেশি গোল দেওয়ায় পিছিয়ে পড়ে উরুগুয়ে। সমান পয়েন্ট ও গোল ব্যবধান নিয়েও ফেয়ার প্লেতে এগিয়ে থাকায় দক্ষিণ কোরিয়া চলে গেছে শেষ ষোলোতে।
এই গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল। পর্তুগাল শুরুতে এগিয়ে গেলেও বিশ মিনিট পরে সমতায় ফেরে দক্ষিণ কোরিয়া। দ্বিতীয়ার্ধে গিয়ে চমক দেখায় দলটি। নির্ধারিত ৯০ মিনিট পর যোগ করা সময়ে গোল করে তলানিতে থেকে উঠে যায় দুইয়ে, নিশ্চিত করে শেষ ষোলো। শুরুতেই রিকার্দো হোর্তা পর্তুগিজদের এগিয়ে নেওয়ার পর দক্ষিণ কোরিয়াকে সমতায় ফেরান কিম ইয়ং–গোয়ন। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে গোল করে দলকে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠান হোয়াং হি–চান। মাঠে নেমেই গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি পর্তুগালকে। মাত্র পাঁচ মিনিটের মাথায় তাদের এগিয়ে নেন হোর্তা। দিয়েগো দালোতের পাস বঙ থেকে সুন্দর শটে জাল খুঁজে নেন তরুণ এই ফরোয়ার্ড। সপ্তদশ মিনিটে দক্ষিণ কোরিয়াকে সমতায় ফেরান কিম জিন–সু। তবে অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল হয়। দশ মিনিট পর ঠিকই সমতায় ফেরে কোরিয়া। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল রোনালদোর মাথায় লেগে ফাঁকায় চলে আসে। সামনে পাওয়া বল দারুণ এক ভলিতে জালে পাঠান কিম ইয়ং–গোয়ন। এগিয়ে যেতে মরিয়া দক্ষিণ কোরিয়ার ম্যাচের শেষটা হয় স্বপ্নের মতোই। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটেই গোল করে নিশ্চিত করে শেষ ষোলো। প্রতি আক্রমণ থেকে বল টেনে নিয়ে হোয়াং হি–চানকে বল বাড়ান সন হিউং মিন। বল পেয়ে দারুণ শটে জাল খুঁজে নেন উলভারহ্যাম্পটনের এই ফরোয়ার্ড।
এদিকে ঘানাকে হারিয়েও বিদায় হয়েছে উরুগুয়ে। প্রথম সুযোগটা এলো ঘানার কাছেই। তারা পেয়ে গেল পেনাল্টি, কিন্তু খুঁজে পেলো না জালের দেখা। এরপর যেন নিজেদের নতুন করে খুঁজে পেলো উরুগুয়ে। ছয় মিনিটের ব্যবধানে তারা দিলো দুই গোল। কিন্তু বাকি সময়ে আর একবারও পারলো না বল জড়াতে। ম্যাচের ১৬তম মিনিটে জর্দান আইয়ের বাঁ পাশ থেকে নেওয়া শট ঠিকঠাক ঠেকাতে পারেননি উরুগুয়ের গোলরক্ষক রসেত। দ্বিতীয় চেষ্টায় বল আটকাতে গিয়ে তিনি ধাক্কা খান আন্দ্রে আইয়ের সঙ্গে। পরে ভিএআরের সাহায্য নিয়ে রেফারি এটিকে পেনাল্টি দেন। তবে পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয় ঘানা। আন্দ্রে আইয়ে শট নিতে সময় নেন বেশি, তার দুর্বল শট বাঁ পাশে ঝাঁপিয়ে ঠেকান রসেত। এরপর যেন ছন্দ খুঁজে পায় উরুগুয়ে। গোলের জন্য অবশ্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি উরুগুয়েকে।
২৬তম মিনিটে গোল করেন সিউরিসিয়ান দে আররাসেতা। প্রথমে লুইস সুয়ারেসের দুর্বল শট ঠেকান ঘানার গোলরক্ষক। ফিরতি শটে গোল করেন তিনি। এর ছয় মিনিট পর দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায় তারা। এবারও গোলদাতা সেই দে আররাসেতা। আরও একবার সুয়ারেসের কাছ থেকে বল পেয়ে গোল করেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধে ৪৭ মিনিটে ঘানা দারুণ এক সুযোগ পায় তারা। কিন্তু বাবা বঙের ভেতর বল পেয়েও মারেন পোস্টের বাইরে দিয়ে। ৭৬ মিনিটে ভালভার্দের শট আটকে দেন ঘানার গোলরক্ষক। এক মিনিট পর কুদুস সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। শেষদিকে আরও কিছু সুযোগ এলেও কাজে লাগাতে পারেনি কোনো দল।