দুই চিরবৈরী দেশ পাকিস্তান-ভারত। এশিয়া কাপে তাদের ম্যাচ ঘিরে বরাবরের মতোই উত্তেজনার পারদ ছিল তুঙ্গে। মাঠের লড়াইও হলো জমজমাট। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং প্রদর্শনীর দেখা যদিও মিলল না। কম রান নিয়ে পাকিস্তান লড়াই করল দারুণ বোলিং পারফরম্যান্সে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পেরে উঠল না তারা। রোমাঞ্চকর ম্যাচে জয় হয়েছে ভারতের। পাকিস্তানকে পরাস্ত করেছে তারা ৫ উইকেটে। টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করা পাকিস্তান ১৪৭ রান করে। জবাবে ভারত ২ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারতের লক্ষ্যটা খুব বড় ছিল না। মাত্র ১৪৮ রান। তবে প্রতিপক্ষ দলটা যে পাকিস্তান। যারা ছেড়ে কথা বলে না। তার প্রমাণ রাখলেন প্রথম ওভারেই নাসিম শাহ। তার করা প্রথম ওভারেই বোল্ড হয়ে যান ভারতের উদ্বোধনী ব্যাটার লোকেশ রাহুল। তিনি খুলতে পারেননি রানের খাতা। তবে এরপর অধিনায়ক রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি দলকে ৫০ রানে পৌঁছে দেন। এরপরই রোহিত ক্যাচ আউট হয়ে যায় নিজস্ব ১২ রানে। বিরাট কোহলিও আর বেশিক্ষণ টিকেননি। দলীয় ৫৩ রানে তিনি নাওয়াজের বলে ইফতেখারের হাতে ধরা পড়ে বিদায় নেন। কোহলি ৩৪ বলে ৩৫ রান করেন। এরপর রবীন্দ্র জাদেজা, সূর্যকুমার যাদব এবং হার্দিক পান্ডিয়াই দলকে টেনে নেন জয়ের দিকে। সূর্যকুমার যখন আউট হন দলের রান সংখ্যা ৪ উইকেটে ৮৯ রান। সূর্যকুমার ১৮ রান করেন। এরপর জাদেজা এবং হার্দিক পান্ডিয়া দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। এ জুটি ৫২ রান যোগ করলে খেলা অনেকটাই আয়ত্তে চলে আসে ভারতের। জাদেজা দলীয় ১৪১ রানের সময় মোহাম্মদ নাওয়াজের বলে বোল্ড হন। জাদেজার ব্যাট থেকে আসে ৩৫ রান। তবে লড়াইটা শেষ ওভারের চতুর্থ বল পর্যন্ত উন্মুক্তই ছিল দুই দলের জন্য। শেষ পর্যন্ত এই লড়াইয়ে হাসে ভারত। হার্দিক পান্ডিয়ার ছক্কায় ভাঙে পাকিস্তানের স্বপ্ন। পান্ডিয়া ৪টি চার ও ১ ছক্কায় ১৭ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলেন । পাকিস্তানের মোহাম্মদ নাওয়াজ ৩৩ রানে ৩টি এবং নাসিম শাহ ২৭ রান দিয়ে ২টি উইকেট নেন। এ ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় ভারতের হার্দিক পান্ডিয়া।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তান তৃতীয় ওভারেই উইকেট হারায়। অধিনায়ক বাবর আজমকে ফিরিয়ে প্রথম ধাক্কাটা দেন ভুবনেশ্বর কুমার। ৯ বলে ১০ রান করে ফিরেন পাকিস্তান অধিনায়ক। দ্বিতীয় উইকেটে রিজওয়ান এবং ফখর জামান মিলে দলকে বেশিদূর টানতে পারেনি। দুজন মিলে যোগ করেন ২৭ রান। ৬ বলে ১০ রান করে ফিরেন ফখর জামান। ইফতেখারকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন রিজওয়ান। ৪৫ রান যোগ করেছিলেন দুজন। হার্দিক পান্ডিয়ার লাফিয়ে উঠা বলে পুল করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন ইফতেখার। ২২ বলে ২টি চার এবং একটি ছক্কার সাহায্যে ২৮ রান করেন ইফতেখার। এরপর হার্দিক পান্ডিয়ার বলে একেবারে সীমানার কাছে ধরা পড়েন রিজওয়ান। ফিরে আসার আগে ৪২ বলে ৪৩ রান করেন এই ওপেনার। একই ওভারে ফিরেছেন খুশদিল শাহও। ২ রান করেছেন তিনি। আসিফ আলিও যোগ দিয়েছেন সেই ব্যর্থতার মিছিলে। ভুবনেশ্বর কুমারের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরেন এই হার্ড হিটার ৭ বলে ৯ রান করেন। মোহাম্মদ নেওয়াজ ফিরেছেন ১ রান করে। শাদাব খানকে ফিরিয়ে নিজের তৃতীয় শিকার তুলে নেন ভুবনেশ্বর কুমার। ৯ বলে ১০ রান করেন শাদাব। পরের বলে ফিরেন নাসিম শাহ। হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলেন ভুবনেশ্বর কুমার। শাহনেওয়াজ ধাহানী এসে হ্যাটট্রিক বলটি খেলেন দক্ষতার সাথে। পরের বলে ছক্কা মারেন ধাহানী। শেষ পর্যন্ত এক বল বাকি থাকতে ১৪৭ রানে অল আউট হয় পাকিস্তান। ধাহানী করেন ৬ বলে ১৬ রান। ভারতের পক্ষে ২৬ রানে ৪ উইকেট নেন ভুবনেশ্বর কুমার। হার্দিক পান্ডিয়া ২৫ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। এছাড়া আর্শদীপ সিং ২টি ও বাকি উইকেট নেন আবেশ খান।