চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে থামছেইনা চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর জয়রথ। গতকাল রোমাঞ্চকর এক জয়ে শিরোপা ধরে রাখার পথে আরো একধাপ এগিয়ে গেল আবাহনী লিঃ। লিগে আবাহনীর জয় এখন চারে চার। থামানোই যাচ্ছেনা আকাশী–হলুদ জার্সিধারীদের। গতকাল এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে দারুণ এক জয়ে শিরোপার পথে আরো একটি বাধা টপকালো আবাহনী। গতকাল তারা হারিয়েছে শক্তিশালী সিটি কর্পোরেশন একাদশকে। শেষ দিকে জমে
উঠা ম্যাচটিতে দারুণ পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়ে আবাহনী জিতেছে ২ উইকেটে। তিন বল হাতে রেখে বিশাল এক ছক্কা মেরে দলকে জয়ের বন্দরে পৌছে দেন মহিউদ্দিন। ব্যাটে–বলে দারুণ পারফর্ম করেছে আবাহনী। বিশেষ করে ঢাকার তারকা ক্রিকেটারদের ভীড়ে স্থানীয় ক্রিকেটাররাই দলকে জিতিয়েছে। যা
চট্টগ্রামের ক্রিকেটের জন্যও বড় এক প্রাপ্তি। চট্টগ্রামের ক্রিকেটাররা চট্টগ্রাম লিগে নিজেদের প্রমান করতে সক্ষম হচ্ছে। দিনের প্রথম ভাগে আবাহনীর বোলাররা ভাল একটি মঞ্চ প্রস্তুত করে দিয়েছিল ব্যাটারদের জন্য। যদিও শেষ দিকে এসে পথ হারাতে বসেছিল ব্যাটাররা। তবে শেষটা ঠিকই রাঙিয়ে নিয়েছে আবাহনীর
ব্যাটাররা। আর তাতেই টানা চতুর্থ জয় তুলে নিয়ে পয়েন্ট তালিকার সবার উপরে অবস্থান করছে আবাহনী।
সকালে টসে জিতে ব্যাট করতে নামা সিটি কর্পোরেশন একাদশ শুরুটা ভাল করতে পারেনি। ১৮ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর ৪০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে সিটি কর্পোরেশন একাদশ। ঠিক তখনই হাল ধরেন আরিফ রেজা। সাথে পেয়েছিলেন জাহিদুজ্জামানকে। ৫৪ রানের জুটি গড়েন দুজন। ২৮
বলে ২৮ রান করা জাহিদুজ্জামানকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গেন হান্নান। এরপর জাবেদকে নিয়ে আরো ৯৪ রান যোগ করেন আরিফ। এক সময় চাপে পড়া সিটি কর্পোরেশন তখন মনে হচ্ছিল বড় স্কোর গড়তে যাচ্ছে। কিন্তু এজুটি ভাঙ্গার পর আর খুব বেশি বড় করতে পারেনি নিজেদের ইনিংসকে। ২৮ রান করে ফিরেন
জাবেদ। দলকে অনেক দূর টেনে নেওয়া আরিফ ফিরেন নিজের সেঞ্চুরি থেকে ৫ রান দূরে থাকতে। ১০৭ বলে ৯টি চার এবং ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৯৫ রান করে জীবনের বলে আউট হন আরিফ। এরপর শাহাদাত বাবু ১৯ এবং বিশ্বনাথ হালদারের ১৪ রান মিলে সিটি কর্পোরেশন একাদশের ইনিংস গিয়ে পৌঁছে ২৪৪ রানে। আবাহনীর পক্ষে ৩টি করে উইকেট নেন আবু বক্কর জীবন এবং তাইজুল ইসলাম। ২টি উইকেট নিয়েছেন হান্নান।
২৪৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আবাহনীর দুই ওপেনার হান্নান এবং তাজুল মিলে ৫৩ রান যোগ করে। ৩৩ রান করে তাজুল ফিরলে বাঙ্গে এজুটি। এরপর ৬৮ রানে যেতে হারায় আরো দুই উইকেট। হান্নান ২৪ রান করলেও শোয়েব ফিরেছেন ১ রান করে। এরপর হাল ধরেন দিপু এবং ইমরান। দুজন মিলে যোগ করেন ৭১ রান। তবে রানের গতি ছিল ধীর। ৩৪ রান করা দিপুকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গেন বিশ্বনাথ। এরপর ইমরান একপ্রান্ত ধরে রাখলেও অপর প্রান্তে
তাকে যোগ্য সহায়তা দিতে পারছিলনা অন্যরা। জহুরুল ইসলাম অমি, আবু বক্কর জীবন এবং অধিনায়ক রিপন ফিরে আসেন দলকে বিপদে ফেলে। রিপন ২১ এবং জীবন করেন ১১ রান। একপ্রান্তে সতীর্থদের আসা যাওয়া দেখতে দেখতে ইমরানও ফিরেন দলকে ২১৭ রানে রেখে। ফিরে আসার আগে ৯৬ বলে ৫৮ রানের ধৈর্য্যশীল ইনিংস খেলেন ইমরান। এরপর ম্যাচটা কঠিন হয়ে পড়ে আবাহনীর জন্য। শেষ দুই ওভারে আবাহনীর প্রয়োজন পড়ে ২৬ রান। আরিফ রেজার
করা ৪৯ তম ওভার থেকে তাইজুল এবং মহিউদ্দিন মিলে ১৮ রান তুলে নিয়ে ম্যাচটা হাতের মুটোয় নিয়ে আসে। শেষ ওভারে জয়ের জন্য তখন দরকার ৮ রান। বিশ্বনাথের করা প্রথম বলে মহিউদ্দিন নেন ১ রান। দ্বিতীয় বল থেকে তাইজুল নেন এক রান। তৃতীয় বলে ছক্কা মেরে ম্যাচ শেষ করে আসেন মহিউদ্দিন।
১৭ বলে ২টি চার এবং ২টি ছক্কার সাহায্যে ২৭ রান করে অপরাজিত থাকেন বল হাতে তিন উইকেট নেওয়া তাইজুল। আর ৫ বলে ২টি ছক্কায় ১৫ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলেন মহিউদ্দিন। আর আবাহনী পায় রোমাঞ্চকর এক জয়। সিটি কর্পোরেশন একাদশের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন রনি চৌধুরী এবং শাহাদাত হোসেন বাবু।
আজকের খেলা ঃ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ক্রীড়া সংস্থা বনাম পাইরেটস অব চিটাগাং।












